সুন্নতে খৎনা করতে গিয়ে শিশু আয়ান ও আয়হাম আর ফেরেনি। পরিবারের অভিযোগ, তাদের ফুল অ্যানেস্থেশিয়া দেয়া হয়েছিল। এদিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) কানের অপারেশন করতে গিয়ে আরও তিনজন মারা গেছেন। এসব ঘটনায় চিকিৎসার প্রতি আস্থার সঙ্কট তৈরি হলে এনেস্থিয়ায় ব্যবহৃত হ্যালোথেন পরীক্ষা করতে পাঠায় বিএসএমএমইউ।
বিএসএমএমইউ এনেস্থিয়োলজিষ্ট অধ্যাপক ডা. দেবব্রত বনিক এনেস্থিয়োলজিষ্ট বলেন, পরীক্ষার রিপোর্টে দেখা যায়, হ্যালোথেনে ভেজাল করতে এর সাথে এমন কিছু পদার্থ মেশানো হয়েছে যেটির রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে এটির গঠন নষ্ট হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বিশ্বব্যাপি অজ্ঞান করতে আইসোফ্লুরেন ও সেভুফ্লুরেন ব্যবহৃত হলেও দাম কম হওয়ায় দেশে হ্যালোথেনের ব্যবহার বেশি। গত এপ্রিলে হ্যালোথেন বিক্রি বন্ধ করে দেয় দেশে একমাত্র অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান এসিআই। পরে এই ওষুধটির সঙ্কট নিরসনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে স্বাস্থ্য অধিদফতরকে চিঠি দেয় এনেস্থিয়া সোসাইটি। পরবর্তীতে স্বাস্থ্য অধিদফতর বিষয়টি মন্ত্রনালয়কে জানালেও কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। এই সুযোগে ভেজাল ওষুধ বাজারে আসতে শুরু করে।
এ বিষয়ে ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ ইউসুফ, এটি আমাদের অজান্তেই হয়েছে। কারা-কীভাবে ভেজাল হ্যালোথেন বাজারজাত করছে সে বিষয়ে অনুসন্ধান চলছে।
অন্যদিকে অনলাইনে অজ্ঞান করার এই ওষুধটির খোঁজ মিলেছে। এমনকি ভার্চুয়াল ফার্মেসিতে অর্ডারও করা যাচ্ছে। কিন্তু ঔষধটি শুধুমাত্র হাসপাতাল বা ক্লিনিকে প্রয়োজনীয় প্রমাণ সাপেক্ষে বিক্রি করার কথা।
বাজারে ভেজাল হ্যালোথেন সয়লাভ হওয়ার পর তা আর ব্যবহার না করার নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। স্বাস্থ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, এ বিষয়ে নির্দেশনাগুলো ওয়েবসাইটে দেয়া আছে। ভেজাল ওষুধ প্রতিরোধ করতেই এ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর ব্যবস্থা নিবে বলেও জানান তিনি।
হ্যালোথেনের বদলি হিসেবে আইসোফ্লুরেন ব্যবহার করতে যন্ত্র পরিবর্তন করতে হয়। সরকারি প্রতিষ্ঠানে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ও বেসরকারিতে বিনিয়োগ সঙ্কট কাটিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞদের।
/আরএইচ
Leave a reply