ঈদের পরে নতুন ছকে মাঠে নামতে চায় বিএনপি

|

শরিফুল ইসলাম খান:

একদফা দাবিতে গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকায় কর্মসূচি পালনের আগে বিএনপি যা ভেবেছিল, হয়েছে ঠিক তার বিপরীত। পরিকল্পনা ছিল না, থাকলেও হালে পানি পায়নি শেষ পর্যন্ত। ফলে সেদিনই চুপসে গেছে অনেকের স্বপ্ন। সম্প্রতি হতাশা কাটিয়ে আবারও দিন বদলের স্বপ্ন দেখছেন তৃণমূল নেতাকর্মীরা।

জানা গেছে, বাস্তবতা বিবেচনা করে ‘নতুন ছক’ নিয়ে মাঠে নামছে দলটি। এতকিছুর পরও কেন তাদের যৌক্তিক দাবি পূরণ হচ্ছে না, মূল্যায়ন করা হচ্ছে সেসব কারণও। বিএনপি নেতারা বলছেন, রমজানে ইফতার মাহফিলে সীমাবদ্ধ থাকলেও ঈদের পর আবারও রাজপথে গড়াবে বিএনপির আন্দোলন। আর মাঠের নেতারা বলছেন, যত প্রতিকূলতা থাকুক একদফা দাবি আদায়ে অনড় তারা।

যেমন যুবদলের সাবেক সহসভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর বলেন, আমি বিশ্বাস করি, বিএনপির নেতৃত্বে দ্রুতই ভোটারবিহীন এই সরকারের পরিবর্তন হবে।

তিনশ ৬৩ দিন কারাবাসের পর সম্প্রতি জামিনে মুক্তি পান তিনি। তার মতো কারাবাস করা দলটির অন্যান্য নেতাদের প্রত্যাশাও এমন। দ্রুতই দল থেকে নতুন কৌশল ঠিক করে কর্মসূচি দেবে। আর তারা সরকার পতনের সেই আন্দোলনকে বেগবান করবেন।

জাহাঙ্গীর আলম আরও বলেন, আমি জেল থেকে ছাড়া পেয়ে আগে পার্টি অফিসে গিয়েছি। নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলার পর আরও শক্তি পেয়েছি।

ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আখতারুল আলম ফারুক বলেন, শুধু ২৮ অক্টোবর না, বিএনপি আগেও অনেক প্রতিকূলতা কাটিয়ে এগিয়ে গেছে। এবারও যতই ঝড়-তুফান আসুক না কেন, বিএনপির নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ। তারা তাদের লক্ষ্যে পৌঁছাবেই।

গাজীপুর জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার চৌধুরী আশরাক আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, আমরা স্বপ্ন দেখি, একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে এবং জনগণ তার পছন্দের প্রার্থীকে কোনো বাধা ছাড়াই ভোট দেবে। এই স্বপ্ন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে পূরণ হবে ইনশাআল্লাহ।

তবে এই স্বপ্ন পূরণে যে প্রস্তুতি আর পরিকল্পনা দরকার, তা এখন আছে কি বিএনপির? থাকলেও বাস্তবায়নের দক্ষতা ও ক্ষমতাসীনদের মোকাবেলা নিয়ে প্রশ্নও রয়েছে।

এ নিয়ে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ বলেন, বিএনপির শক্তি তৃণমূল। এক-এগারোর সময় সেটি প্রমাণিত হয়েছে, এখনও প্রমাণ হচ্ছে। নেতাকর্মীরা শক্তি সঞ্চয় করে নবউদ্যমে আবার মাঠে নামবে।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমাদের কিছু উপলব্ধি হচ্ছে, এত ব্যাপক জনসমর্থন থাকার পরও কেন অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারলাম না। সে বিষয়টি অনুসন্ধান করা হচ্ছে। নেতারাও নতুন আন্দোলন নিয়ে ভাবছেন। আশা করছি, ঈদের পরই আমরা নতুন ছক কষে আবার এই সরকার পতনের আন্দোলনে যাবো।

দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বললেন, বিএনপি একটি অগণতান্ত্রিক অপশক্তিকে ক্ষমতা থেকে সরানোর জন্য লড়াই করছে। আমরা কোন প্রক্রিয়াতে এগুবো, সেটি নিয়ে সকলের মধ্যে আলাপ-আলোচনার ব্যাপার আছে। আগামী দিনে কী করবো এরও কৌশল ঠিক করতে হবে। দ্রুতই নতুন কৌশল নিয়ে মাঠে নামবে বিএনপি।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে গণতন্ত্রের অভিমুখে যাত্রা বা ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি’ শুরু করেছিল বিএনপি। তবে ‘গণতন্ত্রের’ সেই যাত্রায় তারা এখনও গন্তব্যে পৌঁছায়নি।

/এনকে/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply