সামরিক শক্তিতে ইরান না ইসরায়েল এগিয়ে?

|

ছবি- গেটিইমেজ

মধ্যপ্রাচ্যে ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনা চরমে। ইরানের কনস্যুলেটে হামলার জেরে ইসরায়েলের ভূখণ্ডে প্রথমবার সরাসরি ক্রুজ, ব্যালেস্টিক মিসাইল ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে তেহরান। এর ফলে, মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। যদিও ইসরায়েলের পশ্চিমা মিত্ররা ইরানে পাল্টা হামলা না চালানোর আহ্বান জানাচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যের এই ‍দুই দেশ সামরিক দিক থেকে বেশ শক্তিশালী। তাই তেহরান-তেল আবিব যুদ্ধে জড়ালে এর পরিণতি হবে ভয়ঙ্কর।

ইসরায়েলে ইরানের হামলার পর প্রশ্ন উঠেছে সামরিক দিক দিয়ে ইরান কতটা শক্তিশালী। কিংবা ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে সামরিক শক্তিতে কে কতটা এগিয়ে? অস্ত্রের শক্তিতে ইরান-ইসরায়েল কেউ কারো থেকে কম না। কিছু সূচকে ইরান এগিয়ে তো, আরেক সূচকে ইসরায়েল এগিয়ে।

গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ারের তথ্য মতে, বর্তমানে সামরিক শক্তিতে বিশ্বের ১৪৫টি দেশের মধ্যে ইরানের অবস্থান ১৪ তম। যেখানে ইসরায়েল রয়েছে ১৭ তম স্থানে।

ইরানের নিয়মিত সেনা রয়েছে ৬ লাখ ১০ হাজার। বিপরীতে তাদের রিজার্ভ সেনা রয়েছে সাড়ে তিন লাখ। আর ইসরায়েলের নিয়মিত সেনাসদস্য রয়েছে এক লাখ ৭০ হাজার এবং রিজার্ভ সেনা রয়েছে ৪ লাখ ৬৫ হাজার। আধাসামরিক বাহিনীতেও ইসরায়েলের চেয়ে এগিয়ে ইরান। তেহরানের আধাসামরিক বাহিনী রয়েছে ২ লাখ ২০ হাজার। বিমান বাহিনীর সদস্য রয়েছে ৪২ হাজার এবং নৌবাহিনীর সদস্য রয়েছে সাড়ে ১৮ হাজার। অন্যদিকে, ইসরায়েলের আধা সামরিক বাহিনী রয়েছে ৩৫ হাজার। বিমান বাহিনী ৮৯ হাজার ও নৌ বাহিনী সাড়ে ১৯ হাজার।

ইরানে ভাণ্ডারে রয়েছে ৫৫১টি সামরিক উড়োজাহাজ, ইসরায়েলের আছে ৬১২টি। তেহরানের যুদ্ধবিমানের সংখ্যা ১১৬টি, বিপরীতে তেল আবিবের রয়েছে ২৪১টি। হামলায় ব্যবহার করার জন্য ইরানের যুদ্ধবিমান আছে ২৩টি এবং ইসরায়েলের রয়েছে ৩৯টি।

ইরানের পরিবহন উড়োজাহাজ রয়েছে ৮৬টি, বিপরীতে ইসরায়েলের পরিবহন উড়োজাহাজ রয়েছে ১২টি। ইরানের ভাণ্ডারে আছে ১২৯টি হেলিকপ্টার। এর মধ্যে হামলায় ব্যবহৃত হেলিকপ্টার আছে ১৩টি। হেলিকপ্টার সংগ্রহের দিক দিয়ে ইরানের চেয়ে বেশ এগিয়ে তেল আবিব। তাদের ভাণ্ডারে রয়েছে ১৪৬টি হেলিকপ্টার। যুদ্ধে ব্যবহার করা হেলিকপ্টার রয়েছে ৪৮টি।

তেল আবিবের চেয়ে অনেক বেশি ট্যাংক রয়েছে ইরানের সংগ্রহশালায়। মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম এই দেশটির সামরিক ভাণ্ডারে আছে এক হাজার ৯৯৬টি ট্যাংক। আর ইহুদি রাষ্ট্র ইসরায়েলের ভাণ্ডারে আছে এক হাজার ৩৭০টি ট্যাংক। ইরানের সাঁজোয়া যানের সংখ্যা ৬৫ হাজার ৭৬৫টি। অপরদিকে ইসরায়েলের সাঁজোয়া যান রয়েছে ৪৩ হাজার ৪০৩টি।

নৌপথে ইসরায়েলের চেয়ে সামরিক সংগ্রহের দিক দিয়ে এগিয়ে ইরান। ইসরায়েলের থেকে যুদ্ধ জাহাজ ও সাবমেরিনের সংগ্রহ বেশি তেহরানের। ১০১টি যুদ্ধজাহাজ (ফ্লিট) রয়েছে ইরানের সংগ্রহশালায়। যেখানে ইসায়েলের রয়েছে ৬৭টি। ইরানের নৌবাহিনীর কাছে রয়েছে ১৯টি সাবমেরিন, ইসরায়েলের আছে ৫টি। তবে টহল জাহাজ বেশি আছে ইসরায়েলের। তেল আবিবের টহল জাহাজের সংখ্যা ৪৫টি আর ইরানের ২১টি।

এদিকে, সুইডেন-ভিত্তিক গবেষণা সংস্থা স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (এসআইপিআরআই) সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের শুরুতে বিশ্বের নয়টি দেশের কাছে প্রায় ১২ হাজার ৫১২টি পারমাণবিক অস্ত্র ছিল। দেশগুলো হচ্ছে- যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, চীন, ভারত, পাকিস্তান, উত্তর কোরিয়া এবং ইসরায়েল। ইরানের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে পারমাণবিক অস্ত্র কখনোই ছিল না। তবে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকবার দাবি করেছে ইরান তাদের ইউরেনিয়ামের মজুদ দিয়ে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে।

/এনকে


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply