নূরনবী সরকার:
বাগেরহাট জেলার মোড়েলগঞ্জ উপজেলার দুইটি ইউনিয়নের দুইটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবকাঠামোর তুলনায় শিক্ষার্থী হাতে গোনা। দীর্ঘ সময় ধরে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী ভর্তির সংখ্যা বাড়ছে না। আবার গাইবান্ধার পলাশবাড়ি উপজেলার তেকানি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একজন শিক্ষক। শিক্ষার্থীও একজন।
সারাদেশে এমন প্রায় ৩শ’ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকার চিহ্নিত করেছে, যাদের শিক্ষার্থী সংখ্যা ৫০ এর নিচে। কেড়ে নেয়া হচ্ছে এই বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষমতা। এগুলোকে পাশের সরকারি স্কুলের সাথে একীভূত করা হবে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব ফরিদ আহাম্মদ বলেন, গত ১০ বছর ধরে যেসব স্কুলে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৫০ এর নিচে, সেসব স্কুলকে আমরা পাশের সরকারি স্কুলের সাথে একীভূত বা এক শিফটের করে দেবো। স্কুলের সাথে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের একীভূত করা হবে।
এদিকে আবার খুলনার বাটিয়াঘাটার মুহাম্মাদনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী পড়ছে হাজারের বেশি। সেখানে শিক্ষকের সংখ্যা ৫ জন। শ্রেণিকক্ষের সঙ্কট রয়েছে। এমন ক্ষেত্রেও উদ্যোগী হচ্ছে মন্ত্রণালয়।
ফরিদ আহাম্মদ বলেন, খুলনাতে একটা স্কুলের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১২শ’ এর উপরে। আরও ৬০০ শিক্ষার্থী রয়েছে, যারা এই স্কুলে ভর্তি হতে চায়। আশপাশে ৩-৪টা কিন্ডারগার্ডেন স্কুল বন্ধ হয়ে গেছে। প্রধান শিক্ষক ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি স্কুলকে ওই পর্যায়ে নিয়ে গেছে। আমরা এ ধরনের স্কুলকে উৎসাহিত করছি।
৩০০ স্কুল একীভূতের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছেন শিক্ষা গবেষকরা। পাশাপাশি এগুলোর ভৌত অবকাঠামোকে কাজে লাগানোর পরামর্শ দিচ্ছেন তারা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ও শিক্ষক মজিবুর রহমান বললেন, আগামী ২০ বছর সেখানে শিক্ষার্থী বাড়বে না, এ ধরনের কোনো ডেটা থাকলে স্কুল বন্ধ হতে পারে। তবে স্কুলের ভৌত কাঠামোকে কাজে লাগিয়ে কমিউনিটি সেন্টার করা যেতো। যেখানে নিরক্ষর আছে, সেখানে স্বাক্ষর করার বিষয় আছে। লাইফ লং লার্নিংয়ের অংশ হিসেবে ওই স্কুলগুলোতে ব্যবহার করা যেতো। একবার বন্ধ করে দিলে আবার চালু করা অনিশ্চিত হয়ে যায়। তাই একেবারে বন্ধ না করে অন্য কীভাবে কাজে লাগাতে পারি, তা করা গেলে ভালো ফল আসবে।
শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাত সুষম করার পাশাপাশি প্রাথমিক শিক্ষা ক্ষেত্রের অনিয়ম ও দুর্নীতি বন্ধ না হলে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিক করা কঠিন বলেও মনে করেন শিক্ষা গবেষকেরা।
/এমএন
Leave a reply