আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে মন্ত্রীসভা বহাল থাকলে নির্বাচনের সময় লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকবে না বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম. সাখাওয়াত হোসেন। যমুনা টেলিভিশনে টকশো ‘রাজনীতি’ এর আজ মঙ্গলবারের পর্বে অংশ নিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন। ‘কেমন সরকারে নির্বাচন?’ শিরোনামে টকশোটি সঞ্চালনা করেন রোকসানা আনজুমান নিকোল।
এসময় ড. এম সাখাওয়াত হোসেন আরো বলেন, সংবিধান খুব পরিষ্কার। এখানে সরকার কি রকম হবে কিছু বলা নেই। গতকাল প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, সরকার ছোট হবে এমন তো হওয়ার কথা নয়। আজ একটা বিবৃতিও দেখলাম। কাকে ছড়েে কাকে রাখবো? তার মানে তিনি বর্তমান সরকারকে রেখেই কাজ করতে চান। তারা রুটিন কাজ করবেন বলে জানিয়েছেন। কিন্তু সেই রুটিন কাজটি কী? এবং রুটিন কাজের বাইরে যদি কোনো কাজ করে তাহলে সেটার তদারকি কে করবে। এগুলো প্রশ্ন কিন্তু থেকে যাচ্ছে। আর যেটা বলা হলো সংসদ ভেঙে নির্বাচন করা। আমি সেটার কোনো লক্ষণ দেখছি না।
তিনি বলেন, আমাদের পাশ্ববর্তী দেশ ভারতে নির্বাচন কমিশন বিকল্প সরকার হিসেবে কাজ করে। কমিশনের অনুমতি ছাড়া সরকারের অনেক কাজ করা সম্ভব হয়না। সেধরনের কোনো ঘটনা আমাদের এখানে এখনো হয়নি। বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষিতে ধরে নেওয়া হচ্ছে যে, এই সরকার যেভাবে আছে এভাবেই নির্বাচনটা হবে। যারা বিরোধী দল বলে পরিচিত তাদের দাবি যদি মানতে হয় তাহলে কনস্টিউশনে একটা পরিবর্তন আনতে হবে। সে পরিবর্তন না আনলেও সরকার চাইলে এখনই সংসদ ভেঙে দিয়ে ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে পারে। তবে সেটা সরকার করবে কীনা বড় প্রশ্ন।
সাবেক এই নির্বাচন কমিশনার বেশ কয়েকটি দেশের নির্বাচনকালীন সরকারের উদাহরণ টেনে বলেন, বেশির ভাগ কমনওয়েলথ দেশে যেটি আছে সেটি হলো, মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে মন্ত্রীসভা পদত্যাগ করে। সংসদ অকার্যকর হয়ে যায়। ক্ষেত্রবিশেষে তখন হেড অব দ্য স্টেট বা যিনি রাষ্ট্রপ্রধান থাকেন তিনি অনুরোধ জানান, তারা যাতে অন্তবর্তীকালীন সরকারে থেকে যান। ব্রিটেনে মন্ত্রীসভা রাণীর কাছে পদত্যাগ পত্র দেয়। সেই মন্ত্রীসভা আকারে ছোট করে রাণী তাদের চালিয়ে নিতে বলেন নতুন আরেকটি সরকার আসার আগ পর্যন্ত।
তিনি বলেন, যদি এই সরকারের অধীনে নির্বাচন হয় তাহলে সেটি দেশের ইতিহাসে প্রথম নির্বাচন হবে যেখানে মন্ত্রীসভা থাকবে, পার্লামেন্টও থাকবে এবং তারা নির্বাচন করবেন।
যমুনা অনলাইন: এফএম
Leave a reply