নব্বইয়ের দশকের শেষ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত কলকাতার ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে বাণিজ্যিক সিনেমা নির্মানে একটা দীর্ঘ সময় ছিলো রিমেকের। রিমেক হলো অন্য ইন্ডাস্ট্রির অরিজিনাল একটি সিনেমার গল্পের স্বত্ব কিনে নিয়ে সেটি বাংলায় নতুন করে বানানো। সেই রিমেক যুগকে ইঙ্গিত করেই কলকাতার সুপারস্টার দেব এক অনুষ্ঠানে বলেই ফেললেন, আমরা হয়ে গেছিলাম রিমেক সুপারস্টার।
লোকসভা ভোটকে কেন্দ্র করে আনন্দবাজার অনলাইনে দেয়া এক ইন্টারভিউতে নিজের রাজনৈতিক দর্শনের পরিচয় দেন দেব। এছাড়া তার অভিনেতা পরিচয়ের পাশাপাশি প্রযোজক হবার কারণও খোলাসা করেন। তিনি বলেন, তুমি যদি বিজ্ঞানের ছাত্র হও তাহলে নিশ্চয় ইতিহাসের পরীক্ষা দিতে পারবেনা। আমি নিজে যখন প্রযোজক হয়েছি তার আলাদা একটা কারণ ছিলো।
দেব আরও বলেন, আমি প্রযোজক হলাম কেনো? তখন রিমেক খুব একটা দর্শকদের টানছিলো না। আমাকে দেয়া হচ্ছিলো সেই ধরণের গল্প। আমার মনে হচ্ছিলো রিমেকের যুগ শেষ। এগুলো আর চলবেনা। তখন আমি ভাবলাম এখন সময় এসেছে অরিজিনাল কনটেন্ট নিয়ে কাজ করার। কিন্তু অরিজিনাল গল্প নিয়ে কাজ করতেও অনেকে সাহস পাচ্ছিলেন না। আমরা হয়ে গেছিলাম রিমেক সুপারস্টার। সেই মিথটাকে ভেঙে নতুন করে শুরু করাটা ছিলো একটা বড় লড়াই। এরপর টনিক, প্রজাপতি, প্রধান, চ্যাম্প, ককপিটসহ মৌলিক গল্পে দেখা গিয়েছে দেবকে যা ব্যবসাসফলও হয় বক্স অফিসে।
অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে দেব বলেন, একটা সময়ে আমি পাগলু করেছি, কিন্তু এখন সেটি করা সম্ভব না। এখন পাগলু করলে দর্শক দেখবে না। তাদের টেস্টও চেঞ্জ হয়েছে। আর সাউথের ফ্রেম টু ফ্রেম কপি দর্শকদের টানে না। যদিও দেবকে সুপারস্টার কিংবা আজকের অবস্থানে আসতে সেই রিমেক বাণিজ্যিক সিনেমাগুলোর হিরোইজমই মূল রসদ হিসেবে কাজ করেছে বলে মনে করেন তার ভক্তরা।
উল্লেখ্য, দক্ষিণ ভারতের ফ্রেম টু ফ্রেম কপি করা মাসালাদার বানিজ্যিক সিনেমা একসময় কলকাতার বক্স অফিসে বাজিমাত করেছে। দেবের পাশাপাশি জিৎ, সোহম, অঙ্কুশরাও একসময় পর্দা কাপিয়েছেন রিমেক গল্পের সিনেমায়। কিন্তু ইন্টারনেট ও বিশ্বায়নের প্রভাবে দক্ষিণ ভারতের সিনেমাগুলো এখন রিলিজের পরপরই দেখতে পান দর্শকরা যেগুলো আগে হয়নি। তাই সেসব গল্প দিয়ে পুনরায় পর্দায় এসে হিট সিনেমা দেয়ার সেই সময়ও চলে গিয়েছে কলকাতার বাণিজ্যিক সিনেমা থেকে।
/এমএইচআর
Leave a reply