রাজধানীর ‘যন্ত্রণা’ মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার

|

আরিফুর রহমান সবুজ:

রাজধানীতে যন্ত্রণার আরেক নাম মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার। উঠতে কিংবা নামতে প্রায়ই ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয় চট্টগ্রাম, সিলেট, খুলনা-বরিশালসহ এ পথের যাত্রীদের। অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনায় যানজট দিন দিন আরও তীব্র হচ্ছে। তবে এসব দেখার যেন কেউ নেই। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন বলছে, যানজট নিরসনে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

২০১৩ সালে চালু হয় ফ্লাইওভারটি। তৈরি করা হয়েছিল ওই এলাকার যানজট নিরসনের জন্য। তবে অব্যবস্থাপনার কারণে খুব একটা ভূমিকা রাখতে পারছে না ফ্লাইওভার প্রকল্পটি। মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের নিচের লেনটি করা হয়েছিল ছোট-ছোট যানবাহন চলাচলের জন্য। তবে দীর্ঘদিন এটির সংস্কার নেই। এই ফাঁকে ফ্লাইওভারটির দুটি লেন এখন পরিবহন কোম্পানির দখলে। বাসের পার্কিং আর খানাখন্দে যানজটই এখন নিত্যসঙ্গী।

জানা গেছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম এবং ঢাকা-সিলেটসহ মহাসড়ক হয়ে অন্তত ১৮টি জেলার যানবহন রাজধানীতে প্রবেশ করে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার দিয়ে। তবে ফ্লাইওভারে ওঠার মুখে যাত্রী ওঠা-নামা করায় স্বল্প দূরত্বের বাসগুলো। ফলে যানজট ছাড়িয়ে যায় শনিরআখড়া পর্যন্ত।

যানজট ঠেলে ফ্লাইওভারে ওঠার পর শুরু হয় আরেক যন্ত্রণা। গুলিস্থান কিংবা পলাশী পৌঁছাতেই ফ্লাইওভারের ওপরেই কেটে যায় ঘণ্টা।

স্থানীয় একজন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এসব দেখার মতো লোক নেই। কে দেখবে? যে যেভাবে খুশি, সেভাবে চলছে। বাসগুলো যাত্রী নামিয়ে ফ্লাইওভারের নিচে ছোট গাড়ির লেনে রেখে দেয়।

রাজধানীর এক রাইডার বলেন, মানুষ ফ্লাইওভার কখন ব্যবহার করে? যানজট এড়িয়ে দ্রুত গন্তব্যে যাওয়ার প্রয়োজন মেটাতেই তো ফ্লাইওভার ব্যবহার করে। তবে এই ফ্লাইওভার দ্রুত পৌঁছে দেয়ার বদলে সময় আরও বেশি লাগিয়ে দেয়।

তীব্র যানজটের কারণ কী, এসব খোঁজ করতে গিয়ে দেখা যায়, গুলিস্থানে নামার মুখে একদিকে ফুটপাতের দোকানপাঠ, অন্যদিকে রিকশা, সিএনজি ও টেম্পু স্ট্যান্ড। আর ফ্লাইওভার থেকে নামার সময় মাঝপথে দাঁড়িয়ে প্রতি বাস থেকে ৬০ টাকা করে আদায় করে লাইনসম্যানরা।

জানা গেছে, এসব টাকার ভাগ চলে যায় পুলিশ থেকে প্রশাসনসহ সবার হাতে হাতে। যদিও পুলিশ দায় এড়াচ্ছে ফ্লাইওয়ার নির্মাণ ত্রুটির কথা বলে।

বিষয়টি নিয়ে ডিএমপি মতিঝিল ট্রাফিক জোনের টিআই মশিউর রহমান বলেন, ফ্লাইওভারটি করার সময় যদি স্থপতিরা ডিজাইনে যানজট না থাকার সুদূরপ্রসারী চিন্তা করতেন, এখন যেসব ত্রুটি সামনে আসছে সেসব বিবেচনায় নিলে এমনটি হতো না। এখন রাস্তার যতটুকু ক্যাপাসিটি আছে এবং তাদের লোকবল ও সামর্থ্য অনুযায়ী যানজট কমিয়ে রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা তারা করছেন বলেও জানান তিনি।

ফ্লাইওভারের উপরে এবং নিচের যানজট নিরসনে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, ফ্লাইওভারের পিলার ও দুই পিলারের মাঝের জায়গাগুলো যাতে ব্যবহার করা যায় সেজন্য কনসালটেন্ট নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তারা এটির ডিজাইন করছে। সমস্যা দ্রুতই কমিয়ে আনা সম্ভব হবে বলেও জানান তিনি।

/এনকে


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply