আপিল বিভাগে মৃত্যুদণ্ডাদেশ চূড়ান্ত হওয়ার আগে কোনো আসামিকে কনডেম সেলে রাখা যাবে না বলে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। সোমবার (১৩ মে) এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো. বজলুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
এসময় আদালত জানান, বিশেষ কারণে বিশেষ কোনো ব্যক্তিকে কনডেম সেলে রাখা যাবে, তবে সেক্ষেত্রে কারাগারে আসামিকে শুনানি করতে হবে। আদালত বলেন, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের অধিকার আছে জামিন আবেদনের, হাইকোর্টের উচিত শুনানির জন্য তা গ্রহণ করা।
এদিন আদালত নির্দেশ দেন, কনডেম সেলে থাকা আসামিদের স্বাভাবিক কারাগারে স্থানান্তর করার। এজন্য জেল কর্তৃপক্ষকে দুই বছর সময় দেয়া হয়েছে। এছাড়া হাইকোর্ট জেল কোডের ৯৮০ বিধি অসাংবিধানিক বলেও ঘোষণা দিয়েছেন। এসময় রায়ের পর্যবেক্ষণে হাইকোর্ট বলেন, বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থায় কনডেম সেলে রাখা মানেই আসামিকে ডাবল সাজা দেয়ার শামিল।
বিষয়টি নিয়ে রিটকারী আইনজীবী শিশির মনির গণমাধ্যমকে বলেন, মৃত্যুদণ্ডের সাজা চূড়ান্ত হওয়ার আগে কাউকে নির্জন কক্ষে (কনডেম সেল) রাখা যাবে না। চূড়ান্ত নিষ্পত্তি বলতে, হাইকোর্ট বিভাগ, আপিল বিভাগ, আপিল, আপিলের রিভিউ এবং রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনার আবেদনের যে সুযোগ আছে সেগুলো শেষ হওয়া। এর আগে কাউকে কনসেল সেলে রাখা যাবে না। ট্রায়াল আদালতে রায়ের পরই কাউকে নির্জন কক্ষে রাখা যাবে না।
তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে একটি মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হতে দীর্ঘ সময় লেগে যায়। সেজন্য আদালত বলেছেন, ট্রায়াল স্টেজে কারো ফাঁসির রায়ের পর কনডেম সেলে নেয়া আসামিকে ডাবল সাজা দেয়ার শামিল। কেননা, আদালত তাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন, নির্জন কক্ষে বছরের পর বছর আটকে রাখার সাজা দেননি।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম কারাগারে কনডেম সেলে থাকা জিল্লুর রহমানসহ মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিন বন্দির পক্ষে একটি রিট দায়ের করেছিলেন আইনজীবী শিশির মনির। পরে গতবছরের ১২ ডিসেম্বর মৃত্যুদণ্ডাদেশ চূড়ান্ত হওয়ার আগে আসামিদের কনডেম সেলে বন্দি রাখা কেন বেআইনি হবে না এবং কেন জেলকোডের ৯৮০ বিধি অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না, এই মর্মে রুল জারি করেন আদালত। সোমবার জারি করা ওই রুলের শুনানি শেষ হয়।
/এনকে
Leave a reply