উচ্চ মূল্যস্ফীতিতে কষ্টে গ্রামের মানুষ

|

রিমন রহমান, পিরোজপুর থেকে:

তাপপ্রবাহ কিছুটা কমলে সম্প্রতি যাওয়া হয় পিরোজপুরের উত্তর রানীপুর গ্রামে। এক টং দোকানে যেতেই দেখা মেলে মধ্য ও বয়স্ক অনেকের জম্পেশ আড্ডা। গরম ধোঁয়া ওঠা চায়ের কাপে তাদের আলাপ নানা প্রসঙ্গে। তাদের উদ্দেশে প্রশ্ন ছিল পণ্যের দাম কি সহনীয়? হাতের নাগালের মধ্যে কি আছে চাল, ডাল, নুন ও তেল?

জবাব ছিল চাল, ডাল, নুন ও তেল সবকিছুর দাম বেশি। আয়ের চেয়ে খরচ বেশি, প্রায় দ্বিগুণ। তারা যে কী অবস্থায় আছেন তা প্রকাশ করতে পারছেন না।

তাদের কথার আঁচ পাওয়া যায় সরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ইনস্টিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিসের (বিআইডিএস) তথ্যে। মূল্যস্ফীতি নিয়ে উদ্বেগজনক তথ্য তারা। বিআইডিএসের তথ্য, দেশে মূল্যস্ফীতির হার এখন ১৫ শতাংশ।

পিরোজপুরের প্রান্তিক এসব মানুষের চাওয়া, প্রায় দুই বছর ধরে চলে আসা এমন উচ্চ মূল্যস্ফীতির উত্তাপ কমাতে বাজেটে কার্যকর উদ্যোগ দরকার। বিদ্যুৎ সঙ্কট, ধানের বীজ ও কীটনাশকের দাম বৃদ্ধিতেও তাদের দুশ্চিন্তা বাড়ছে।

চায়ের আড্ডায় তারা বলছিলেন, সবজি কিংবা অন্যান্য উৎপাদিত পণ্যের সঠিক দাম মিলছে না। ক্ষতির মুখে পড়ছেন কৃষকেরা।

এছাড়া, সারাদেশে শুরু হয়েছে বোরো ধান কাটার উৎসব। অনেক এলাকায় এখনও ক্ষেতেই রয়েছে ধান। তবে কমছে না ধান নিয়ে কৃষকদের দুশ্চিন্তা।

এর মধ্যে ধান উৎপাদনে দরকার হয় কীটনাশক। কিন্তু বেশি দামের কারণে কুলিয়ে উঠতে পারছে না কৃষক। পাশাপাশি পানি সরবরাহে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ না পাওয়ার কথাও জানিয়েছেন তারা।

আর গ্রামীণ জনপদে ফসল ফলিয়ে উৎপাদিত নানা পণ্যের নায্য দামও নিশ্চিত হচ্ছে না। লাভের মধু খেয়ে ফেলছে মধ্যস্বত্ত্বভোগী। আসন্ন বাজেটে বাজার ব্যবস্থা সংস্কারের রূপরেখা চান সবাই।

বিশ্লেষকদের মতে, দ্রুত সময়ের মধ্যে মূল্যস্ফীতির লাগাম টানা না গেলে আরও চাপে পড়বে সাধারণ মানুষ। সামাজিক নিরাপত্তামূলক কর্মসূচি জোরদার করা দরকার।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের সম্মানীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন ২২ শতাংশ মতো, বিশ্বব্যাংকের হিসাবে ৭০ শতাংশ মতো পুষ্টির নিরাপত্তায় ভুগছেন। এটার অর্থ হলো, আয়ের যে অবনমন সেটির একটি প্রভাব পড়ে মানুষের পুষ্টি ওপর।

দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৭০ ভাগ মানুষ গ্রামে বাস করে। বড় সংখ্যাক এই মানুষদের চাওয়া-পাওয়ার গুরুত্ব দেয়া দরকার।

/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply