জাকির হোসেন সুমন⚫
ইউরোপের দেশ ইতালি। ঐতিহাসিক রোমান সাম্রাজ্যের আজকের ইতালি পৃথিবীর অষ্টম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ। দেশটির অন্যতম ভাসমান পর্যটন নগরী হিসেবে বিশ্বব্যাপী পরিচিত জলকন্যা খ্যাত ভেনিস। প্রতি বছর দেশ বিদেশের লাখো পর্যটকের পদচারনায় মুখরিত থাকে এই শহর। পর্যটকদের আগমনের কারণে এখানকার ব্যাবসা বানিজ্যও পর্যটন নির্ভর। প্রতি বছরই পর্যটকদের চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হয় স্হানীয় প্রশাসনের। সম্প্রতি শহরটির মেয়র আইন জারি করেছেন, ভেনিসে প্রবেশ করতে হলে দিতে হবে ৫ ইউরো প্রবেশ ফি। অবশ্য এই সিদ্ধান্তের কারণে চলছে নানা আলোচনা সমালোচনা।
গত ২৫ এপ্রিল ছিল ইতালির ৭৯ তম স্বাধীনতা দিবস। সেদিন থেকেই আদায় করা শুরু হয়েছে প্রবেশ ফি। ওয়েবসাইটের মাধ্যমে যেকোনো ক্যাফে বা তাবাক্কী (ইতালিয়ান ভাষায় সিগারেটের দোকান) থেকে ৫ ইউরো পরিশোধ করে শহরটিতে প্রবেশের কারণ ও নিজ তথ্যসহ পাস প্রিন্ট করে ভেনিসে প্রবেশ করতে হবে। এর ব্যতিক্রম করলে গুনতে হতে পারে জরিমানা।
এদিকে পাস সিস্টেম চালু করায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ব্যাবসায়ীরা। ভেনিস প্রবাসী ব্যাবসায়ী নিপু জানান, অন্যান্য বছরের তুলনায় চলতি বছর শহরটিতে প্রবেশ ফি নির্ধারণ করায় পর্যটকের উপস্থিত কম হয়েছে। ভেনিস বাংলাদেশ প্রেসক্লাব ইতালির প্রধান উপদেষ্টা কলামিস্ট ও সাংবাদিক পলাশ রহমান বলেন, যাদের বয়স ১৪ বছরের বেশি সেই সব পর্যটকদের এই পাস নিতে হচ্ছে। তবে ভেনিসের রেসিডেন্স কার্ড বা সেখানে যারা কাজ করেন তাদের একবার এই কার্ড তুললেই চলবে কোন প্রকার ফি ছাড়া। আর ভেনেতো বিভাগে যারা বসবাস করছেন, তারা যতবার ভেনিসে আসবেন ততদিন এই কার্ড তুলে ভেনিসে প্রবেশ করতে হবে কোন প্রকার ফি প্রদান ছাড়াই। এক্ষেত্রে অন্য শহর হতে ভেনিসে ঘুরতে আসলে দিতে হবে নির্দিষ্ট ফি। অপরদিকে যাদের হোটেল বুকিং করা থাকবে তাদের তাদের সিটি ট্যাক্স পরিশোধ থাকার কারনে ৫ ইউরো দিতে হবে না।
ভেনিস পাসের জন্য গত ১৬ ই জানুয়ারি ২০২৪ হতে পর্যটকদের জন্য অনলাইনে বুকিং শুরু করা হয়েছে। ২৫ এপ্রিল থেকে কার্যকর করা সেই পাসের নিয়ম চলেছে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত। তবে ৫ মে থেকে শুধুমাত্র শনি ও রোববার পর্যটকদের নিতে হবে পাস।স্হানীয় প্রশাসনের দাবি, অনেক পর্যটক একদিনের জন্য ঘুরতে আসলে সাথে খাবার নিয়ে আসে ও অতিরিক্ত খাবার না খাওয়া হলে যত্রতত্র আবর্জনা ফেলে রেখে যায়, যা কিনা পরিবেশ রক্ষায় হুমকি বয়ে আনে।
ভেনিস ও আশেপাশের শহরে বসবাসরত বাংলাদেশিদের অভিমত মিউজিয়াম খ্যাত ভেনিসের ব্যাবসায়ীদের ব্যাবসা টিকিয়ে রাখতে ও পর্যটকদের লাইনে দাঁড়িয়ে ভেনিস পাস নিতে যে সময়টা ব্যয় হয় তাতে অনেকেই বিরক্তবোধ করেন।
শহরটির বাংলাদেশি কমিউনিটির নেতা ও ভেনিস বাংলা স্কুলের সভাপতি সৈয়দ কামরুল সারোয়ার বলেন, মিউজিয়াম ও জলকন্যা খ্যাত ভেনিসকে পুনরায় জমজমাট করতে মেয়রের সিদ্ধান্তকে শিথিল করে ভেনিস পাস উঠিয়ে নিতে হবে। তাহলেই পর্যটকদের পদচারনায় আবারও মুখরিত হয়ে উঠবে এই ঐতিহ্যবাহী শহরটি।
/এমএইচআর
Leave a reply