হেলিকপ্টার বিধ্বস্তে রইসির মৃত্যু: দুর্ঘটনা হিসেবেই দেখছেন বিশ্লেষকরা

|

রাসেল আহমেদ:

ইসরায়েলের সাথে চোখে চোখ রেখে কথা বলা মধ্যপ্রাচ্যের একমাত্র দেশ ইরান। যুক্তরাষ্ট্রের সাথেও শীতল সম্পর্ক বহু বছর ধরে। এ অবস্থায় ইরানের প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিহতের ঘটনা নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। হতবাক পুরো মুসলিম বিশ্ব। যদিও এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্যে এটিকে নিছক দুর্ঘটনা হিসেবেই দেখতে চান বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা।

তাদের মতে, মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় পুরনো হেলিকপ্টার রক্ষণাবেক্ষণের অভাব এবং বৈরি আবহাওয়া এর মূল কারণ। এতে মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনীতিতে তেমন কোনো প্রভাব না পড়লেও সাময়িক শূন্যতা তৈরি হবে ইরানে। যা ইরানকে তাদের যুদ্ধাংদেহী মনোভাব থেকে কিছুটা সরে আসতে হতে পারে।

নিরাপত্তা বিশ্লেষক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, দুর্ঘটনা নয়, এর পক্ষে এখন পর্যন্ত কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। বিধ্বস্ত হেলিকপ্টারটি ১৯৭১ বা ৭২ সালে তৈরি। দুর্ঘটনার কবলে পড়ার সময় প্রচণ্ড কুয়াশা থাকার কথা বলা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, ১৯৭৯ সাল থেকে ইরানকে নানা রকম নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। যে কারণে বেল-২১২ মডেলের পুরনো হেলিকপ্টারটি মেরামতের পাশাপাশি নতুন হেলিকপ্টার ক্রয় সংক্রান্ত জটিলতা রয়েছে ইরানের।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক এম হুমায়ুন কবির বলেন, এখনকার মধ্যপ্রাচ্যের বাস্তবতায় এটি নিছক দুর্ঘটনা নয়, এ রকম চিন্তা আসতে পারে না, তা কিন্তু নয়। আমার ধারণা, এটি দুর্ঘটনা। যে হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়েছে, সেটি ৫০ বছর আগের। এগুলো যদি সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ না হয়, তাহলে তো যান্ত্রিক গোলযোগের আশঙ্কা থাকেই। আর এমন জায়গায় ঘটনাটা ঘটেছে, যেটি কি না ঘন জঙ্গল এবং সে সময় ঘন কুয়াশা ছিল।

ইরানের প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিহতের ঘটনায় সাময়িক শূন্যতা তৈরি হলেও রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্তে তেমন কোনো পরিবর্তন হবে না বলে মনে করেন তারা।

এম হুমায়ুন কবির আরও বলেন, সেখানে সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও রাষ্ট্রীয় কাঠামোর মধ্যে কিছুটা তফাৎ আছে। সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে প্রধান হচ্ছে দেশটির প্রধান ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। সিদ্ধান্ত গ্রহণে তেমন পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে আমার মনে হয় না। প্রাতিষ্ঠানিকভাবে জটিলতা তো তৈরি হবেই।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ইরানের সমর্থনে হিজবুল্লাহ, হামাস ও হুতিরা যেভাবে ইসরায়েলবিরোধী যুদ্ধ তৈরি করেছিল, তাতে কিছুদিনের জন্য মন্থর গতি আসবে।

আজারবাইজানের সীমান্তবর্তী এলাকায় যৌথভাবে নির্মিত একটি বাঁধ উদ্বোধন শেষে ফেরার সময় রোববার (১৯ মে) ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের জোলফার পাহাড়ি এলাকায় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে করতে যান প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টার। তাতে তিনিসহ ৯ আরোহী নিহত হন।

/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply