রইসির শেষ বিদায়ে কাঁদছে ইরান, কাঁদছে লাখো জনতা

|

প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রইসি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও শীর্ষ ব্যক্তিত্বদের মৃত্যুতে ইরানে চলছে শোকের মাতম। লাখ লাখ মানুষের আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠেছে দেশটির আকাশ-বাতাস। ইতোমধ্যে তাবরিজে পৌঁছেছে প্রেসিডেন্টের কফিন।

কফিন বহনকারী গাড়ি পৌঁছা মাত্রই শেষবারের মতো কফিন স্পর্শ করতে হুমড়ি খেয়ে পড়েন জানাজায় অংশ নিতে জড়ো হওয়া লাখো মানুষ। জনস্রোত সামলে কফিনগুলো জানাজার জন্য নির্ধারিত স্থান ‘আর্ক অব তাবরিজ’এ নিতেই বেগ পেতে হয় নিরাপত্তা কর্মীদের।

এদিকে, দেশজুড়ে বিভিন্ন এলাকায় আয়োজন করা হচ্ছে বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনা। হেলিকপ্টার বিধ্বস্তু হয়ে ইরানের প্রেসিডেন্ট নিহতের ঘটনায় ইতোমধ্যে তদন্তও শুরু করেছে তেহরান।

রাজধানী তেহরানেও চলছে মাতম। সড়কে সড়কে পড়েছে কান্নার রোল। ইসরায়েল বিরোধী কট্টর অবস্থানের জন্য ইরানে বেশ জনপ্রিয় ছিলেন ইব্রাহিম রইসি।

জানাজায় অংশ নিতে আসা এক ইরানি বলেন, ইরানিদের কি হবে? আমাদের দেশের কি হবে? দুর্ঘটনার পর থেকেই এই দুঃশ্চিন্তা তাড়া করে বেড়াচ্ছে। মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়ার আগ পর্যন্ত শুধু দোয়া করেছিলাম তিনি যেনো বেঁচে থাকেন। তিনি শত্রুদের জন্য আতঙ্ক ছিলেন। ইরানকে নানাভাবে তিনি রক্ষা করেছেন। তার নেতৃত্বে গত কয়েকমাস ধরেই ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রকে অপমান করেছে ইরান।

রাষ্ট্রীয়ভাবে ইরানে পালিত হচ্ছে ৫ দিনের শোক। বিভিন্ন শহরে ইরানিরা করছেন বিলাপ। দেশজুড়ে নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় চলছে বিশেষ দোয়াও।

কফিন স্পর্শ করতে এসে আরেক ব্যক্তি গণমাধ্যমকে বলেন, পুরো ইরানের মানুষ শোকাহত। তিনি দেশের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। আমরা এমন একজন রাষ্ট্রপ্রধানকে হারিয়েছি যিনি দেশের হয়ে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছিলেন। আরও বলেন, ইরানিরা ভেঙে পড়বে না। তিনিই ইরানের প্রথম শহিদ প্রেসিডেন্ট নয়। আগেও এমন নায়কদের হারিয়েছি। এ পরিস্থিতির অভিজ্ঞতা আছে ইরানের। এই ঘটনা আমাদের আরও সুদৃঢ় করবে।

শুধু ইরান নয়, কট্টরপন্থি এই নেতা জনপ্রিয় ছিলেন মুসলিম বিশ্বের অনেক দেশেই। তাই, ইরাক, লেবানন, ইয়েমেন, সিরিয়ার মতো আরব দেশগুলোতেও চলছে শোকাহত মানুষের আর্তনাদ।



জানাজায় অংশ নিতে এসে আরেক ইরানি বলেন, মূলত পুরো মুসলিম বিশ্বেই প্রেসিডেন্ট রইসি খুব জনপ্রিয় ছিলেন। দেশ পরিচালনায় হোসেন আমির আব্দোলাহিয়ানও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দক্ষতার ছাপ রেখেছেন। মধ্যপ্রাচ্যে মুসলিমদের অবস্থান শক্ত করতে তাদের ভূমিকা রয়েছে। আল্লাহ তাদের জান্নাত দান করুন।

এদিকে, দুর্ঘটনা তদন্তের ঘোষণা দিয়েছে ইরানে। সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ বাঘেরির ত্বত্তাবধায়নে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার তদন্তের জন্য উচ্চপদস্থ একটি দলকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। ব্রিগেডিয়ার আলী আবদুল্লাহির নেতৃত্বে দলটিকে এরইমধ্যে পাঠানো হয়েছে ঘটনাস্থলে। তুর্কির প্রতিনিধি দলটি ইতোমধ্যে জানিয়েছে, বিদ্ধস্ত হওয়া হেলিকপ্টারটির ট্রান্সপন্ডার থেকে কোনো সংকেত পাওয়া যায়নি।

/এমএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply