হায়দরাবাদকে গুড়িয়ে শিরোপা জিতলো কলকাতা

|

ছবি: সংগৃহীত

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) ফাইনালে সানরাইজার্স হায়দরাবাদকে ৮ উইকেটে হারিয়ে শিরোপা জিতেছে কলকাতা নাইট রাইডার্স। আগে ব্যাট করতে নেমে কলকাতার বোলারদের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি হায়দরাবাদের ব্যাটাররা, মাত্র ১১৩ রানে গুটিয়ে যায় দলটি। যা আইপিএল ফাইনালের ইতিহাসে সর্বনিম্ন রানের স্কোর। লক্ষ্য তাড়ায় ভেঙ্কটেশ আইয়ারের ঝড়ো ফিফটিতে ৫৭ বল হাতে রেখেই নিজেদের তৃতীয় শিরোপা উল্লাসে মাতে কলকাতা।

রোববার (২৬ মে) চেন্নাইয়ের এম এ চিদাম্বরম স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন হায়দরাবাদের অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি হায়দরাবাদের। পুরো আসর জুড়ে বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে প্রতিপক্ষকে ভয় ধরানো অভিষেক শর্মাকে ইনিংসের প্রথম ওভারেই ফিরিয়েছেন মিচেল স্টার্ক। অস্ট্রেলিয়ার এই পেসারের মিডল স্টাম্পে পড়ে একটু সুইং করে বেরিয়ে যাওয়া চোখ ধাঁধানো লেংথ ডেলিভারিতে বলের লাইন মিস করে বোল্ড হন অভিষেক। আরেক ওপেনার ট্রাভিস হেডও ফিরেছেন পরের ওভারে।

ভৈবব অরোরার লেংথ ডেলিভারিতে খোঁচা দিতে গিয়ে উইকেটের পেছনে থাকা গুরবাজের গ্লাভসে ক্যাচ দেন। ৬ রানে ২ উইকেট হারানোর পর এইডেন মার্করামকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন রাহুল ত্রিপাঠি। তবে তাদের দু’জনের জুটি বড় হতে দেননি স্টার্ক। বাঁহাতি এই অজি পেসারের অফ স্টাম্পের বাইরের গতিময় ডেলিভারিতে ফ্লিক করতে গিয়ে রমনদীপের হাতে ক্যাচ দেন ৯ রান করা ত্রিপাঠি। দলের পঞ্চাশ হওয়ার আগে নীতিশ রেড্ডি সাজঘরে ফিরেছেন হার্শিত রানার বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে।

এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে হায়দরাবাদ। মার্করাম, শাহবাজ আহমেদরা কেউই সুবিধা করতে পারেননি। হেনরিখ ক্লাসেন থাকায় ভরসা পাচ্ছিলেন তারা। তবে তাকেও এদিন বড় ইনিংস খেলতে দেননি হার্শিত। ডানহাতি এই পেসারের বলে ইনসাইড এজ হয়ে বোল্ড আউট হয়েছেন ক্লাসেন। বাকিদের আসা-যাওয়ার মিছিলে কামিন্স ২৪ রান করলে হায়দরাবাদ অল আউট হয় মাত্র ১১৩ রানে। রাসেল একাই নেন তিনটি উইকেট। বাকিদের মাঝে দু’টি করে উইকেট নিয়েছেন স্টার্ক ও হার্শিত।

সহজ লক্ষ্য তাড়ায় ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই উইকেট হারায় কলকাতা। কামিন্সের শর্ট লেংথ ডেলিভারিতে ছক্কা মেরে নিজের প্রথম বলেই রানের খাতা খুলেছিলেন সুনীল নারিন। তবে তাকে ইনিংস বড় করতে দেননি হায়দরাবাদের অধিনায়ক। কামিন্সের অফ স্টাম্পের বাইরের লেংথ ডেলিভারিতে ফ্লিক করতে গিয়ে শাহবাজ আহমেদের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন নারিন। পুরো মৌসুমে ব্যাট হাতে দাপট দেখানো বাঁহাতি এই ওপেনারকে হায়দরাবাদের বিপক্ষে ফিরতে হয়েছে ২ বলে ৬ রান করে।

নারিন ফিরলেও কলকাতাকে চাপে পড়তে দেননি ভেঙ্কেটেশ আইয়ার। একেবারে শুরু থেকেই আক্রমণাত্বক ছিলেন তিনি। ভুবনেশ্বর কুমারের করা তৃতীয় ওভারে ‍দুই ছক্কা ও এক চারে ২০ রান তুলেছেন তিনি। এরপর থেকেই হায়দরাবাদের বোলারদের বিপক্ষে রীতিমতো তাণ্ডব চালাতে থাকেন ভেঙ্কেটেশ। থাঙ্গারাসু নাটারাজনের এক ওভারেও তিন চার ও এক ছক্কায় ২০ রান এনেছেন তিনি। তাকে দারুণভাবে সঙ্গ দিয়ে যাচ্ছিলেন গুরবাজ।

তাদের দু’জনের ব্যাটে পাওয়ার প্লেতে আর কোনো উইকেট না হারিয়ে ৭২ রান তোলে কলকাতা। আইপিএলের ফাইনালে পাওয়ার প্লেতে এটিই সবচেয়ে বেশি রান তোলার রেকর্ড। এর আগে ২০২৩ সালের আইপিএলের ফাইনালে চেন্নাই সুপার কিংসের বিপক্ষে বিনা উইকেটে ৬২ রান তুলেছিল গুজরাট টাইটান্স। কলকাতা অবশ্য এটিকে এদিন ছাড়িয়ে গেছেন। জয়ের খুব কাছে দাঁড়িয়ে গুরবাজের উইকেট হারায় কলকাতা। শাহবাজের বলে লেগ বিফোর উইকেট হয়ে ফিরেছেন ৩৯ রানে। এরপর ভেঙ্কেটেশকে সঙ্গে নিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করেন শ্রেয়াস। দারুণ ব্যাটিংয়ে ২৪ বলে হাফ সেঞ্চুরি করা ভেঙ্কেটেশ অপরাজিত ছিলেন ৫২ রানে।

/আরআইএম


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply