বাজেট ২০২৪-২৫: রাজস্ব আদায়ে উচ্চাভিলাষী লক্ষ্য

|

রিমন রহমান:

কয়েক বছর ধরেই কমেছে অর্থের যোগান। তাই ব্যহত হচ্ছে সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম। পরিচালন ব্যয় বৃদ্ধি ছাড়াও ঋণ পরিশোধসহ নানামুখী চাপে সরকার। টানাপোড়েনের এই সময়ে অভ্যন্তরীণ আয় বৃদ্ধি করা ছাড়া বিকল্প নেই। তাই বাজেটে আবারও উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা করছে সরকার। নতুন বাজেটে মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্য ধরা হচ্ছে প্রায় সাড়ে ৫ লাখ কোটি টাকা। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ঘাড়েই চাপছে সিংহভাগ দায়িত্ব।

এদিকে, সার্বিক অর্থনৈতিক মন্দায় কমেছে উৎপাদন। স্বাভাবিকভাবেই কমেছে অভ্যন্তরীণ আয়। তাই চলতি অর্থবছরের বাজেটেও ধরা হয় বড় রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য। তবে, দশ মাসের হিসাব বলছে, ঘাটতি ২৬ হাজার কোটি টাকা। অর্থবছরের বাকি দুই মাসেও ঘাটতির পরিমাণ বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এ অবস্থায় আগামী বাজেটে কর আদায়ে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে হলে দরকার ৩০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি। প্রশ্ন হচ্ছে রাজস্ব আদায় বৃদ্ধির ক্ষেত্রে করণীয় কী?

এনবিআর এর সাবেক চেয়ারম্যান ড. নাসির উদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রশাসনকে যদি সমৃদ্ধ করা যায়, তাহলে আইন, নিয়ম-নীতি প্রয়োগের ক্ষেত্রে তা জোরদার করা যায়। কর আদায়ে সক্ষমতা বৃদ্ধি হয়। সেক্ষেত্রে কর রাজস্ব জিডিপির ২-৩ শতাংশ বাড়ানো যায়। কর ফাঁকি হচ্ছে কি না তা দেখা দরকার।

নতুন বাজেটে কর বিন্যাস করবে সরকার। বিপুল সংখ্যাক পণ্যে বসবে শুল্ক। এমপিদের গাড়ী আমদানিতে শুল্কারোপের চিন্তা আছে। একই সঙ্গে আবগারি শুল্কেও আসছে পরিবর্তন। মূলত রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি করাই উদ্দেশ্য।

অর্থনীতি বিশ্লেষক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, খালি লক্ষ্য দিলে হবে না। লক্ষ্যের সাথে কেন-কীভাবে বাড়বে, কোন কোন জায়গায় হস্তক্ষেপ করা হবে, অটোমেশনটা কীভাবে হবে। আমরা সবসময় বলি, রাজস্ব বিভাগ এবং কর প্রশাসন ও কর নীতি আলাদা করতে হবে। এটা দরকার আছে। কিন্তু এনবিআর এটি জীবনেও করবে না। সরকার থেকে তাদের চাপ দিতে হবে।

সরকারও মনে করে অভ্যন্তরীণ আয় বৃদ্ধি ছাড়া বিকল্প নেই। কারণ, ঋণ করলে বাড়ছে দায়, অন্যদিকে কাঙ্খিত মাত্রায় পাওয়া যাচ্ছে না সহায়তাও।

অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান বলেন, ৮ শতাংশের কম কর-জিডিপি নিয়ে একটা দেশের অর্থনীতি কি এগিয়ে যেতে পারে? যতটা কর আদায় হয়, তার প্রায় সমপরিমাণ ছাড় আছে কিন্তু, মানে লাখ-কোটি টাকার উপরে। আমরা যদি ছাড় দিতে থাকি তাহলে আমাদের রাজস্ব আয়-জিডিপি বৃদ্ধি কঠিন হয়ে পড়বে।

বিশ্লেষকরা আরও বলছেন, স্বস্তির জন্য একক নির্ভরতা বাদ দিয়ে করজাল বৃদ্ধি, রাজস্ব আদায়ের নামে হয়রানি বন্ধ এবং কর ফাঁকির প্রবণতা কমানোর বিকল্প নেই।

/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply