আহমাদুল কবির, মালয়েশিয়া:
মালয়েশিয়ায় অপরাধমূলক নেটওয়ার্ক দ্বারা বাংলাদেশি অভিবাসী শ্রমিকদের প্রতারণামূলক নিয়োগের অভিযোগে চিঠি দিয়েছিল জাতিসংঘ। ২৮ মার্চ জাতিসংঘের দেয়া সেই চিঠির জবাব দিয়েছে দেশটি। এর মাধ্যমে দেশটির সরকার অভিবাসী শ্রমিকদের অধিকার রক্ষার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে।
শুক্রবার (৩১ মে) ফ্রি মালয়েশিয়া টুডের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত মঙ্গলবার জেনেভায় জাতিসংঘে মালয়েশিয়ার স্থায়ী প্রতিনিধি নাদজিরা ওসমান মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশন দপ্তরে (ওএইচসিএইচআর) চিঠিটি হস্তান্তর করেন। নাদজিরাহ বলেন, আমরা জাতিসংঘকে আশ্বস্ত করছি, মালয়েশিয়া অভিবাসী শ্রমিকদের অধিকার রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি আরও বলেন, প্রতিশ্রুতির সাথে একটি সম্পূরক নথিও রয়েছে যেখানে শোষণ এবং মানব পাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য সরকারের নেয়া পদক্ষেপগুলির রূপরেখাও রয়েছে।
এর আগে, ২৮ মার্চ জাতিসংঘের তরফ থেকে দেয়া সেই চিঠিতে সংস্থাটির চারজন বিশেষজ্ঞ উল্লেখ করেন যে, মালয়েশিয়ায় কর্মসংস্থানের জন্য বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগের ভুয়া কোম্পানিগুলির প্রতারণামূলক অপকর্ম সম্পর্কে জাতিসংঘ উদ্বিগ্ন। তারা ঋণের বন্ধন, দুর্ব্যবহার এবং অভিবাসী শ্রমিকদের শোষণের মতো বিষয়গুলোকে তুলে ধরেন, যার সবই আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) দ্বারা প্রতিষ্ঠিত।
এরই প্রতিক্রিয়ায় নাদজিরাহ অভিবাসী শ্রমিকদের অধিকার সমুন্নত রাখার জন্য সরকারের চলমান প্রচেষ্টার প্রমাণ হিসাবে প্রতারিত হওয়া ৭৩৩ জন বাংলাদেশি কর্মীকে ১ মিলিয়নেরও বেশি রিঙ্গিত বেতন শোধ করার তথ্য দিয়েছেন। তিনি বলেন, ১৭ মে পর্যন্ত ৭৩৩ ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকের মধ্যে প্রায় ৬৯২ জনকে জোহর শ্রম বিভাগের মাধ্যমে নতুন নিয়োগকর্তার অধীনে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এসময় জাতিসংঘে দাখিল করা পত্রে নিয়মিত কোম্পানি পরিদর্শন, অবৈধ নিয়োগকারীদের কালো তালিকাভুক্ত করা, নিয়োগকারী এজেন্সিগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করা এবং শ্রম বিভাগের অফিসে বা ওয়ার্কিং ফর ওয়ার্কার্স (ডব্লিউএফডব্লিউ) মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে করা অভিযোগের সমাধানসহ সরকারের নেদয়া অন্যান্য পদক্ষেপের কথাও উল্লেখ করা হয়।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালে শ্রম বিভাগ ১ হাজার ৬৬৪ জন ও চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত ৯১০ জন বিদেশি কর্মীকে নতুন নিয়োগকর্তাদের কাছে স্থানান্তর করেছে বলে জানানো হয়। বলা হয় দেশটির সরকার জাতিসংঘের দ্বারা ব্যাপকভাবে হাইলাইট করা সমস্যাগুলির সমাধানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
/এমএইচআর
Leave a reply