নতুন রেকর্ডের সামনে দাঁড়িয়ে সাকিব-রোহিত

|

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শুরুটা হয় ২০০৭ সালে। ক্রিকেটের ক্ষুদে সংস্করণের এই বিশ্বকাপের নবম আসর চলছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও আমেরিকা যৌথভাবে আয়োজন করছে এবারের বিশ্বকাপ। ২ জুন (রোববার) স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার ম্যাচ দিয়ে মাঠে গড়ায় এবারের আসর।

প্রথমবার এই বিশ্বকাপে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলো ভারত। এরপর ২০০৯, ২০১০, ২০১২, ২০১৪, ২০১৬, ২০২১, ২০২২ সালে অনুষ্ঠিত হয় টি-টোয়েন্টির এই মেগা আসর।

সর্বোচ্চ দুবার করে চ্যাম্পিয়ন হয় ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও অস্ট্রেলিয়া শিরোপা উঁচিয়ে ধরে একবার করে। পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে সাকিব আল হাসান, রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি, ক্রিস গেইলরা রয়েছেন রেকর্ডের শীর্ষ পর্যায়ে।

সাকিব ও রোহিত অনন্য এক রেকর্ডের সামনে দাঁড়িয়ে। কোনো অঘটন না ঘটলে ২০০৭ থেকে ২০২৪ টানা ৯টি বিশ্বকাপ খেলার রেকর্ড গড়বেন টাইগারদের পোস্টারবয় ও ভারতের কাপ্তান। এছাড়া, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আর কোনো ক্রিকেটারের টানা নয়টি বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ হয়নি। সমান সংখ্যক বিশ্বকাপ খেললেও ম্যাচ সংখ্যায় এগিয়ে রোহিত শর্মা। এখন পর্যন্ত ভারত অধিনায়ক খেলেছেন ৩৯টি ম্যাচ এবং সাকিব খেলেছেন ৩৬টি ম্যাচ।

ব্যাট হাতে ভিরাট কোহলি।

রানের ক্ষেত্রে সবার চেয়ে এগিয়ে বিশ্বের অন্যতম সেরা ব্যাটার ভিরাট কোহলি। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ১১৪১ রান করে সবার উপরে রয়েছেন তিনি। দুইয়ে থাকা ব্যাটারের নাম মাহেলা জয়াবর্ধনে, তার রান ১০১৬। এরপরেই রয়েছেন টি-টোয়েন্টির দানবীয় ব্যাটসম্যান ক্রিস গেইল ৯৬৫ রান নিয়ে। নাম্বার চারে রয়েছে ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা, তার সংগ্রহ ৯৬৩।

অন্যদিকে, উইকেটে সবার উপরে রয়েছেন ‘নাম্বার ওয়ান অলরাউন্ডার’ সাকিব আল হাসান। সর্বোচ্চ ৪৭ উইকেট রয়েছে তার ঝুলিতে। দুইয়ে আছে পাকিস্তানের সাবেক অলরাউন্ডার শহিদ আফ্রিদির ৩৯ উইকেট। এরপর শ্রীলঙ্কার লাসিথ মালিঙ্গার রয়েছে ৩৮ উইকেট। এছাড়াও, চারে পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটার সাঈদ আজমলের রয়েছে ৩৫ উইকেট। বর্তমানে লাল-সবুজের সাকিব ছাড়া আর কেউই আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি না খেলায় এই রেকর্ড আরো উঁচুতে ওঠানোর সুযোগ পাচ্ছেন এই অলরাউন্ডার।

তবে ছোট ফরম্যাটের বিশ্বকাপে দ্রুততম শতক হাঁকানোর রেকর্ডটি ক্রিস গেইলের দখলে। ২০১৬ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৪৭ বলে সেঞ্চুরি করেছিলেন টি-টোয়েন্টির এই রাজা। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ইনিংসটিও তার দখলে। তিনে রয়েছে নিউজিল্যান্ডের ব্র্যান্ডন ম্যাককালামের ৫১ বলে বাংলাদেশের বিপক্ষে করা শতকটি। এছাড়া, ব্ল্যাক ক্যাপসদের সাবেক এই ওপেনারের রয়েছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ইতিহাসে এক ইনিংসে ব্যাক্তিগত সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড। ২০১২ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৫৮ বলে ১২৩ রানের ইনিংস খেলেন এই তারকা ব্যাটার।

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ফেরিওয়ালা ক্রিস গেইল

বিশ্বকাপের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ছক্কার মালিক ক্রিস গেইল। ক্যারিবিয়ান এই কিংবদন্তি মোট ৬৩টি ছক্কা মেরেছেন। যার ধারেকাছেও  নেই আর কোনো ক্রিকেটার। দুইয়ে রয়েছে ভারতের রোহিত শর্মার ৩৫টি ছক্কা। এরপরই রয়েছে ইংল্যান্ড কাপ্তান জস বাটলারের ৩৩টি ছক্কার রেকর্ড।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এক ইনিংসে সেরা বোলিং ফিগারের রেকর্ড লঙ্কান অজান্তা মেন্ডিসের দখলে। ৮ রানে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন শ্রীলঙ্কার এই ‘রহস্য স্পিনার’। যেটি এখনও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেরা বোলিং ফিগার।

উইকেটের পেছনে সর্বোচ্চ ডিসমিসালের রেকর্ড ভারতের সাবেক অধিনায়ক মাহেন্দ্র সিং ধোনির। ২০০৭ বিশ্বকাপে প্রথমবার ধোনির নেতৃত্বে চ্যাম্পিয়ন হয় ভারত। উইকেটকিপার হিসেবে সর্বোচ্চ ৩২টি ডিসমিসাল করে সবার উপরে তিনি। এরপরেই রয়েছেন পাকিস্তানের কামরান আকমল, ৩০টি ডিসমিসাল তার।

ক্যাচ নেয়ার পরিসংখ্যানে সবার উপরের নামটি সাবেক দক্ষিণ আফ্রিকান আধিনায়ক এবি ডি ভিলিয়ার্স। সাবেক এই কিংবদন্তি খেলোয়াড় নিয়েছেন সর্বোচ্চ ২৩টি ক্যাচ। দুইয়ে রয়েছেন অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার। তিনি নিয়েছেন ২১টি ক্যাচ। এরপরই রয়েছেন নিউজিল্যান্ডের সাবেক ওপেনার মার্টিন গাপটিল, তার ঝুলিতে ১৯টি ক্যাচ।

২০২৪-এ শুরু হওয়া নবম আসরেও অনেক রেকর্ডের হাতছানি রয়েছে। টাইগার ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান তো বলেছেন, এই বিশ্বকাপে ভালো কিছু করে দেখাতে চান তারা। তার সেই আশা পুরণ হোক, এটাই দেখতে চায় অগণিত ক্রিকেটপ্রেমি।

/ওয়াইবি/এএম


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply