রিমন রহমান:
ধারণা করা হয়েছিল, সহসাই কেটে যাবে মূল্যস্ফীতির চাপ। চলতি অর্থবছরের বাজেটে তাই সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, সহনীয় হবে পণ্যমূল্য। কিন্তু কমেতো না-ই, বরং আরও ঊর্ধ্বমুখী। দুই বছর ধরে দামের চাপে পিষ্ট সাধারণ মানুষ। শ্রমজীবি মানুষ যা আয় করছে, তা দিয়ে খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকাটাই এখন কষ্টসাধ্য।
তাদের জিজ্ঞাসা, স্বস্তির পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে বাজেটে কী বার্তা দেবেন অর্থমন্ত্রী? বরাবরের মতোই এবারের বাজেটেও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের প্রতিশ্রুতি দেবেন অর্থমন্ত্রী। কিন্তু এতে কি সুফল মিলবে?
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বলেন, সরকারের মজুদ বৃদ্ধি করতে হবে। অর্থাৎ বাজারে ওপেন মার্কেট অপারেশন বেশি করে বাড়াতে হবে। মানে খুচরার চেয়ে পাইকারি পর্যায়ে বেশি মনিটরিং করতে হবে।
স্বাভাবিকের চেয়ে তুলনামূলক ছোট হচ্ছে এবারের বাজেট। আকার দাঁড়াতে পারে প্রায় আট লাখ কোটি টাকা। এবার উন্নয়ন খাতের ব্যয় ধরা হচ্ছে ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। তবে এরচেয়েও সুদ পরিশোধ, ভর্তুকি প্রণোদনা আর সরকারি কর্মচারিদের বেতন-ভাতা পরিশোধে থাকছে বেশি বরাদ্দ। প্রশ্ন হচ্ছে, উন্নয়ন ব্যয় নিয়ন্ত্রণ করে অনুন্নয়ন ব্যয়ে বেশি বরাদ্দে জনগণ কী পাচ্ছে?
ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বলেন, বাজেটে এখন প্রবৃদ্ধির দিকে থাকাচ্ছে না। বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য শতকরা ২০ ভাগ হওয়ার কথা। এবার সেটা ঘুরে যাচ্ছে, অসুবিধা নেই। বাজেটে এই অর্থবছরে ডিফিসিট ৫ ভাগ রাখবে না, অন্য বছর রাখে।
প্রস্তাবিত বাজেটে ঘাটতি থেকে যাবে ২ লাখ ৫৫ হাজার কোটি টাকার বেশি। বাড়বে ঋণ নির্ভরতা। অর্থাৎ দেশি ও বিদেশি ঋণ লক্ষ্য ধরা হচ্ছে পৌনে তিন লাখ কোটি টাকা। অভ্যন্তরীণ আয় বাড়াতে চায় সরকার। লক্ষ্য ধরা হচ্ছে প্রায় সাড়ে ৫ লাখ কোটি টাকা। প্রশ্ন হচ্ছে কোন কৌশলে রাজস্ব বৃদ্ধি করা সম্ভব?
ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বলেন, বাজেটের ঘাটতি যত কম হবে ঋণ তত কম হবে। ঋণ করার বিশাল অসুবিধা হলো, উন্নয়নশীল দেশের ক্ষেত্রে দায় বেড়ে যায়। আর অভ্যন্তরীণ ঋণ নিলে মূল্যস্ফীতি উসকে যায়।
বাজেটে সরকারি কর্মচারিদের ইনক্রিমেন্টর সঙ্গে বহাল রাখা হচ্ছে আরও ৫ ভাগ অতিরিক্ত প্রণোদনা। সামাজিক নিরাপত্তামূলক খাতে সুবিধাভোগী বাড়ছে ৫ লাখ। ধরা হচ্ছে সংকোচনমূলক প্রবৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতি’র লক্ষ্য।
অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়েশা খান বলেন, সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা এবং মুদ্রানীতি সফলভাবে বাস্তবায়নের জন্য সাপোর্টিভ ফিসক্যাল স্ট্যান্ড গ্রহণ করা হয়েছে।
২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের বাজেটের প্রতিপাদ্য ‘সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের অঙ্গীকার’।
/এমএন
Leave a reply