পর্যটক আকৃষ্ট করতে যখন নানা তৎপরতা চালাচ্ছে অনেক দেশ, তখন উল্টো পথে হাঁটছে ইতালির শহর ভেনিস। শহরটিতে ভ্রমণ নিরুৎসাহিত করতে নেয়া হচ্ছে নানা পদক্ষেপ। লক্ষ্য, পর্যটকের চাপ কমানো। অর্থনীতিতে পর্যটন শিল্পের বড় ভূমিকা থাকলেও, কয়েক বছর ধরেই এর বিরূপ প্রভাব দেখছে ভেনিসের বাসিন্দারা। পরিবেশ রক্ষার লক্ষ্যে তাই শহরটিতে প্রবেশের জন্য ফি আরোপ করা হয়েছে। বেঁধে দেয়া হয়েছে ট্যুর গ্রুপের সর্বোচ্চ সদস্য সংখ্যা।
ছবির মতো সুন্দর শহর ভেনিস। সারা বছরই জমজমাট থাকে ভ্রমণ পিপাসুদের আনাগোনায়। ছোট ছোট অনেক খাল, কিনারায় থাকা পুরনো ভবন শহরের সৌন্দর্যে যোগ করেছে বাড়তি মাত্রা। একবিংশ শতাব্দীতেও শহরের বাসিন্দাদের একমাত্র বাহন নৌকা। তবে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের শহরটি ক্রমশই তলিয়ে যাচ্ছে পানিতে। অতিরিক্ত পর্যটন শিল্প হুমকির মুখে ফেলেছে ভেনিসকে।
মাত্র ৪১৫ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের শহরটিতে বিপুল সংখ্যক পর্যটকদের সামাল দিতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয় স্থানীয় প্রশাসনকে। ২০১৯ সালে ১ কোটি ৩০ লাখেরও বেশি পর্যটকের সংখ্যা লিপিবদ্ধ করে কর্তৃপক্ষ। এ সংখ্যা ক্রমশই বাড়বে বলে আশঙ্কা তাদের।
অতিরিক্ত পর্যটকের চাপ আর শহরটির উপর এর ক্ষতিকর প্রভাব কমাতে চিন্তিত নাগরিকসহ স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। চলতি মাস থেকে প্রাথমিক ট্রায়ালে একদলে ২৫ জনের বেশি পর্যটক নিষিদ্ধের পাশাপাশি নিষিদ্ধ করা হয়েছে লাউড স্পিকারের ব্যবহারও। নতুন নিয়মে কিছুটা স্বস্তির নিশ্বাস নিচ্ছেন ভেনিসের বাসিন্দারা।
এক নাগরিক বলেন, আশা করছি, ভেনিসকে বাঁচাতে এই পদক্ষে কার্যকরী হবে। নতুন নিয়ম বাস্তবায়নে বহু ট্যুরিস্ট শহরে প্রবেশের সুযোগ পাবে না। আরেক ভেনিস বাসিন্দা বলেন, ট্যুরিজমের কারণে শহরের বাসিন্দারা এর ক্ষতিপূরণ দিচ্ছে। স্বাস্থ্যের পাশাপাশি মারাত্নক ঝুঁকির মুখে পড়েছে পরিবেশ।
বছরের শুরু থেকেই ভেনিস শহরে প্রবেশের ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ ইউরো। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব ও অতিরিক্ত পর্যটকের চাপে বিপন্ন ভেনিসের জনজীবন। গত বছর বিশ্বের সংকটাপন্ন ঐতিহ্যবাহী স্থানের নামের তালিকায় ভেনিসের নাম যুক্ত হতে পারে বলে সতর্ক করেছিলেন ইউনেস্কোর বিশেষজ্ঞরা।
/এএম
Leave a reply