ক্ষমতার দাপটে বেনজীরের নজিরবিহীন পাসপোর্ট জালিয়াতি

|

রাজীব আহমেদ:

ক্ষমতায় বসে ৩টি পাসপোর্টে নজিরবিহীন জালিয়াতি করেছিলেন বেনজীর আহমেদ। দিয়েছিলেন বায়বীয় ফোন নম্বর। সবশেষ আবেদনটি প্রায় ধরা পড়ে গেলেও র‍্যাব ডিজির প্রভাব খাটিয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পাসপোর্ট পেয়ে যান। সেখানেও দেন উদ্ভট ফোন নম্বর, যার কোন অস্তিত্বই নেই দেশে। ধরা পড়ে গেলে কী হবে? এই চিন্তা থেকেই ১০ বছর ধরে ছক কেটেছিলেন সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক।

বেনজীর তার পুরোনো হাতে লেখা পাসপোর্ট নবায়নের আবেদন করেন ২০১০ সালের ১১ অক্টোবর। আসল পরিচয় আড়াল করে নিজেকে বেসরকারি চাকরিজীবী বলে পরিচয় দেন। আবেদন ফরমে তার পেশা- ‘প্রাইভেট সার্ভিস’।

আবেদনের ২ দিন পর মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট হাতে পান বেনজীর। যার মেয়াদ ছিল ২০১৫ সালের ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত। এরও ১ বছর আগে ফের পাসপোর্ট নবায়নের আবেদন করেন বেনজীর আহমেদ। তখনও তার পরিয়চয় বেসরকারি চাকরিজীবী। অথচ তখন তিনি ডিএমপি কমিশনার।

দ্বিতীয় দফায় নবায়নকৃত পাসপোর্টের মেয়াদ ছিল ২০১৯ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। পরে ২০২০ সালে ফের পাসপোর্ট নবায়নের আবেদন করেন। তখন তিনি র‍্যাবের মহাপরিচালক। তখনও পাসপোর্টে তার পেশা: বেসরকারি চাকরিজীবী। তখনই ধরা পড়ে তার তথ্য গোপন ও জালিয়াতির ঘটনা। সে আবেদনে ফোন নম্বরও দেন ভুয়া।

কীভাবে করলেন নিজের পেশা নিয়ে এত বড় জালিয়াতি? জানা যায়, কোনোবারই সশরীরে পাসপোর্ট অফিসে যাননি বেনজীর আহমেদ। আবেদন ফরম নিয়ে যেতেন তার ব্যক্তিগত কর্মকর্তারা। সবশেষ পাসপোর্টে বিষয়টি সন্দেহ হলে আটকে দেয়া হয় তার আবেদন। চাওয়া হয় বিভাগীয় অনাপত্তিপত্র। সেসব তোয়াক্কা না করে প্রভাব বিস্তার করে পেয়ে যান সবশেষ পাসপোর্টটি।

সাবেক এই পুলিশ প্রধান পাসপোর্টে আড়াল করেছেন পুলিশেরই পরিচয়। নেননি সরকারি চাকরিজীবী পরিচয়ে নীল রঙের অফিশিয়াল পাসপোর্ট। সুযোগ থাকার পরও কেন তিনি নেননি ‘লাল পাসপোর্ট?

প্রাইভেট সার্ভিস দিয়ে যতটা সহজে বিদেশে ভ্রমণ, বিনিয়োগ ও স্থায়ী বসবাসের সুযোগ করা যায়, অফিশিয়াল পাসপোর্ট করলে সেই সুযোগ থাকে না। ক্ষমতার অপব্যবহার করে এ নজীরই তৈরি করেন বেনজীর।

এটিএম/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply