ব্যাংকিং খাত বিশৃঙ্খল ও অরক্ষিত হয়ে পড়েছে: ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ

|

ফাইল ছবি।

অর্থনীতির সবচেয়ে সংবেদনশীল খাত ব্যাংকিং। আর এই খাত বিশৃঙ্খল, নিয়ন্ত্রণহীন ও অরক্ষিত হয়ে পড়েছে। এটিকে টেনে তোলার কোনো উদ্যোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন অর্থনীতিবিদ ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।

অর্থনীতির চালচিত্র এবং ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে সোমবার (১০ জুন) নিউজ পেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন (নোয়াব) ও সম্পাদক পরিষদের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত পর্যালোচনায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

আলোচনায় অংশ নিয়ে বাজেটের বিভিন্ন বিষয়ে খোলামেলা কথা বলেন অর্থনীতিবিদ, সম্পাদক ও প্রকাশকরা। মূল্যস্ফীতি কমিয়ে আনা, রাজস্ব আদায় ও বেসরকারি বিনিয়োগসহ বাজেটে যেসব লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে এর অর্জন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন আলোচকরা।

নোয়াব সভাপতি এ কে আজাদ বলেন, মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা ৬.৫। কীভাবে এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হবে? এখন যেখানে ১০ শতাংশের বেশি। আমি তো কোনোভাবে দেখতে পাচ্ছি না মূল্যস্ফীতি কমবে।

পাওয়ার এন্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) নির্বাহী পরিচালক ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, প্রবৃদ্ধির যে কৌশল, আমরা এখন এলডিসি গ্রাজুয়েশনের কথা বলছি, মধ্যম আয়ের দেশ হওয়ার কথা বলছি। অনেক কথা বলছি, কিন্তু সেই প্রবৃদ্ধির কৌশলকে পুনর্চিন্তা করার যে চ্যালেঞ্জ এর প্রতিফলন নেই।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ ২৩.৫ থেকে আগামী বছরে ২৭.৩ শতাংশ আসছে। যেখানে মোট বিনিয়োগ ৩৩ শতাংশ। ২০২০ থেকে ২০২৪ সাল থেকে মোট বিনিয়োগ দশমিক ৩ শতাংশ কমে আসছে।

আলোচনায় সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পায় ব্যাংকিং খাতের দুরাবস্থা। অর্থনীতিবিদরা দাবি করেন, খেলাপি ঋণ এক লাখ ৮২ হাজার কোটি টাকা বলা হলেও প্রকৃত খেলাপি ৫ লাখ কোটি টাকার মতো। যা বাজেট প্রায় ৮০ শতাংশ। এত খেলাপি নিয়ে অর্থনীতি চলতে পারে না। এ নিয়ে বাজেটে কোনো ঘোষণা নেই বলে উল্লেখ করেন সাবেক অর্থসচিব মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী।

বাজেটের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী সরকার ব্যাংকিং খাত থেকে ঋণ নিলে বেসরকারি খাত চাপে পড়বে বলেও মন্তব্য করেন আলোচকরা।

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর প্রশ্ন তুলেন, আজকে ব্যাংক থেকে টাকা পাওয়া যাচ্ছে না। সরকারও পাচ্ছে না, জনগণও পাচ্ছে না। কেন পাচ্ছে না? এই দুরবস্থার জন্য কারা দায়ী।

জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য (সংরক্ষিত নারী আসন) ও দৈনিক যুগান্তরের প্রকাশক অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম বলেন, ডলারের দাম বৃদ্ধিতে সংবাদপত্রের উপকরণের দাম বেড়েছে। তাই এই শিল্প বাচাতে সরকারকে আরও সহনশীলনীতি গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি। এজন্য এ শিল্পের ওপর থেকে সব ধরনের শুল্ক প্রত্যাহার করতেও আহ্বান জানান সালমা ইসলাম।

বেসরকারি খাত ৮০ শতাংশ কাজের সুযোগ তৈরি করছে। তাই এ খাতের উন্নয়নে সরকারকে আরও বেশি গুরুত্ব দেয়ার তাগিদ দিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা।

/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply