তীরে এসে তরী ডুবলো বাংলাদেশের

|

বাংলাদেশের বিপক্ষে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই শেষে ৪ রানের জয় পেয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এই জয়ের সুবাদে ৬ পয়েন্ট পেয়ে ‘ডি’ গ্রুপের প্রথম দল হিসেবে সুপার এইটে উঠে গেলো প্রোটিয়ারা।

শেষ ওভারে জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ১১ রান। ক্রিজে ছিলেন মাহমুদউল্লাহ ও জাকের আলী অনিক। কেশব মহারাজ এলেন তার শেষ ওভার করতে। প্রথম বলে দিলেন ওয়াইড। সমীকরণ ৬ বলে দশ। ৪ বলে যখন ৭ দরকার, বিগ শট খেলতে গিয়ে আউট হন অনিক। ২ বলে ৬ রান দরকার। আশার প্রতীক হিসেবে মাহমুদউল্লাহ ক্রিজে। ফুলটস বলে উড়িয়ে মেরেছিলেন কিন্তু বল বাউন্ডারি লাইনে ধরা পড়লো ফিল্ডার মার্করামের হাতে। বাংলাদেশের জয়ের আশা ওখানেই মূলত শেষ হয়ে যায়।

এর আগে, টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই টাইগার পেসার তানজিম সাকিবের আগুনে পেসের সামনে মাত্র ২৩ রানের মধ্যে ৪ উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়ে প্রোটিয়ারা। তবে পঞ্চম উইকেটে হেইনরিখ ক্লাসেন ও ডেভিড মিলারের অবিচ্ছিন্ন পঞ্চাশোর্ধ রানের জুটিতে প্রতিরোধ গড়ে তোলে দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে টাইগারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ১১৩ রানের বেশি করতে পারেনি প্রোটিয়ারা। তানজিম সাকিব তুলে নেন ৩ উইকেট। তাসকিন শিকার করেন দুটি।

১১৪ রান তাড়া করতে নেমে ভালো সূচনার ইঙ্গিত দিলেও বেশিক্ষণ উইকেটে টেকেননি তানজিদ হাসান তামিম। কাগিসো রাবাদার প্রথম দুই বলে দুটি চার মারা তামিম ওভারের শেষ বলে কট বিহাইন্ড হন ৯ বলে ৯ রান করা করে।

তামিমের বিদায়ের পর বাংলাদেশ দলকে টানতে থাকেন লিটন ও শান্ত। সাবধানী ব্যাটিংয়ে ১ উইকেটে ২৯ রান তুলে পাওয়ারপ্লেতে শেষ করে বাংলাদেশ। কিন্তু সপ্তম ওভারের প্রথম বলেই সাজঘরে ফেরেন লিটন। বল হাতে আক্রমণে এসেই লিটনকে আউট করেন কেশব মহারাজ। তার ঝুলিয়ে দেয়া ডেলিভারিতে ঠিকঠাক সংযোগ করতে পারেননি ডানহাতি এই ব্যাটার। কভারে ডেভিড মিলারের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন ১৩ বলে ৯ রান করা লিটন।

এরপর ক্রিজে এসে আনরিখ নরকিয়ার অফ স্টাম্পের বাইরের শর্ট ডেলিভারিতে কুপোকাত হন সাকিব আল হাসান। অনিয়ন্ত্রিত শটে অনেক উঁচুতে উঠে যাওয়া বল অনায়াসে লুফে নিলেন এইডেন মার্করাম। সাকিব করেন ৪ বলে ৩। টিকে থাকার অভিপ্রায় দেখিয়েও শেষ পর্যন্ত ইনিংস বড় করতে পারেননি নাজমুল হোসেন শান্ত। ২৩ বলে ১৪ রান করে নরকিয়ার বলে বিদায় নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। ৫০ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ।

এরপর জুটি গড়েন তাওহীদ হৃদয় ও মাহমুদউল্লাহ। দলের রান যখন ৯৪, তখন রাবাদার বলে লেগ বিফোর উইকেটের শিকার হন হৃদয়। ভাঙে তাওহীদ-মাহমুদউল্লাহর ৪৪ রানের জুটি। ৩৪ বলে ৩৭ রান করা হৃদয় যতক্ষণ এই ‘কঠিন’ উইকেটে ছিলেন, বেশ সপ্রতিভ লাগছিল তাকে। জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী ছিল দল। তিনি সাজঘরে ফিরলে হাল ধরেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। কিন্তু রিয়াদও পারলেন না জয়ের নোঙ্গরে দলকে পৌঁছে দিতে। শেষ পর্যন্ত লাখো ক্রিকেটপ্রেমির স্বপ্নভঙ্গ হলো। তীরে এসে তরি ডুবলো বাংলাদেশের।

/এএম


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply