ধর্ষণ মামলায় ‘টিকটকার’ আব্দুল্লাহ আল মামুন ওরফে প্রিন্স মামুনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট থানায় করা এ মামলায় সোমবার (১০ জুন) রাতে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
অনেকেই আছেন, যারা সামাজিকমাধ্যমে অতোটা সময় দেন না অথবা সোশ্যাল মিডিয়া ফ্রিক নয়। তারা প্রিন্স মামুনকে চিনবেন না, এটাই স্বাভাবিক। তাদের মনে প্রশ্ন উঠেছে, কে এই প্রিন্স মামুন? কী করেন তিনি?
প্রিন্স মামুনের উত্থান মূলত সোশ্যাল মিডিয়া ‘টিকটক’ ও ‘লাইকি’র সুবাদে। বাংলাদেশে এসব অ্যাপ জনপ্রিয়তার পেছনে কিছুটা হলেও মামুনের ভূমিকা আছে। নিজের করা মিউজিক ভিডিও সেখানে পোস্ট দিতেন মামুন। সেখান থেকেই তার পরিচিতি এবং জনপ্রিয়তা।
একটা সময়ে নাচ শিখেছেন মামুন। সেই নাচের ভিডিও অনলাইনে শেয়ার দিতেন। শেয়ার দিতেন অনেক মজার ভিডিও। একেক করে জুটে গেলো অগণিত ভক্ত। অনলাইন থেকে তার জনপ্রিয়তার ঢেউ এসে পড়লো অফলাইনেও। বলা যায়, বাংলাদেশে টিকটকারদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় এই মামুন। তার ফলোয়ার বা অনুসারীর সংখ্যাও অগণিত। এখন তিনি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে শোরুম বা দোকান উদ্বোধন করেন মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে।
শুরুতে ‘প্রিন্স মামুন’ বা ‘অপু ভাই’-এর মতো টিকটকারদের নিয়ে মেইনস্ট্রিম মিডিয়ায় তেমন আলোচনা হতো না। মামুনদের ছবি বা ভিডিও দেখলে অনেকেই হেসে উড়িয়ে দিতো। কিন্তু এখন কিছুটা হলেও সময় মনেহয় পাল্টেছে। বলাই বাহুল্য, আমাদের দেশীয় শোবিজের অনেক তারকাও প্রিন্স মামুনদের জনপ্রিয়তার কাছে হার মানবে।
প্রিন্স মামুন ও লায়লা আখতার টিকটকের আলোচিত নাম। ফেসবুক-ইউটিউবের সামাজিক মাধ্যমে বিনোদনভিত্তিক কন্টেন্ট বানিয়ে বরাবরই আলোচনায় ছিলেন মামুন লায়লাকে সঙ্গে করে। এই জুটি নানা সময়ে আলোচনায় থেকেছেন। কখনও ঝগড়া করে, কখনও মামুনের নামে টাকা নেয়ার অভিযোগ তুলে। আবার কখনও মামুনের নামে লায়লা অভিযোগ তুলেছেন শারীরিক অত্যাচারেরও। তবে এবার সব ছাপিয়ে লায়লা মামুনের নামে করলেন বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ মামলা!
অভিযোগে লায়লা উল্লেখ করেন, ‘মামলার বিবাদী আব্দুল্লাহ আল মামুন ওরফে প্রিন্স মামুনের সঙ্গে আমার গত তিন বছর আগে সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকে পরিচয় হয়। পরিচয়ের একপর্যায়ে মামুন আমাকে বিয়ে করবে মর্মে প্রলোভন দেখিয়ে আমার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক স্থাপন করে। সে আমাকে জানায়, তার ঢাকায় থাকার মতো নিজস্ব কোনো বাসা নেই। যেহেতু প্রেমের সম্পর্ক সৃষ্টি হয় এবং মামুন আমাকে বিয়ে করবে বলে জানায়, তাই তার কথা সরল মনে বিশ্বাস করে তাকে আমার বাসায় থাকার অনুমতি দিই।
২০২২ সালের ৭ জানুয়ারি মামুন তার মাকে সঙ্গে নিয়ে আমার বাসায় এসে বসবাস করতে থাকে। ওইদিন থেকে সে আমার বাসায় আমার সঙ্গে একই রুমে থাকতে শুরু করে। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে একাধিকবার শারীরিক সর্ম্পক করে। মামুন আমার বাসায় থাকাকালে তার বাবা-মা মাঝেমধ্যেই সেখানে এসে অবস্থান করতো। আমি মামুনকে একাধিকবার বিয়ের বিষয় বললে সে বিভিন্ন অজুহাতে সময়ক্ষেপণ করতে থাকে।
সর্বশেষ চলতি বছরের ১৪ মার্চ মামুন আবার ধর্ষণ করে। পরবর্তী সময়ে আমি তাকে বিয়ের বিষয়ে বললে সে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। আমাকে বিভিন্ন অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে।’
মজার ব্যাপার হলো, মাদারীপুরের একটি খামারে এবারের কোরবানির ঈদের জন্য প্রস্তুত করা একটি ষাঁড়ের নাম রাখা হয়েছে ‘প্রিন্স মামুন’। এর ওজন আনুমানিক ২৫ মণ। দাম হাঁকা হচ্ছে ১৫ লাখ টাকা। ষাঁড়টি দেখতে ভিড় করছেন অনেকে।
/এএম
Leave a reply