নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে সুপার এইটের পথে বাংলাদেশ

|

শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে বিশ্বকাপে শুভ সূচনা করেছিল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচে সুযোগ ছিল দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে সুপার এইটের পথ সহজ করা। তবে সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি লিটন-শান্ত-সাকিব-রিয়াদরা। তাই পরের রাউন্ডে যেতে হলে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে জয়ের কোনো বিকল্প ছিল না বাংলাদেশের সামনে। কেননা, বাংলাদেশের পরের রাউন্ড আটকানোর সবচেয়ে বড় প্রতিযোগী এই নেদারল্যান্ডসই।

এই ম্যাচ হারলে বাংলাদেশের ছিটকে যাওয়ার ভয়, আর জয় পেলে ডাচদের সুপার এইটে খেলার পথ আরও সুগম হবে। এমন হিসাব-নিকাশের ম্যাচে গ্রুপের বড় ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’ নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে সুপার এইটে খেলার বড় দাবিদার এখন বাংলাদেশ।

বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) ওয়েস্ট ইন্ডিজের সেন্ট ভিনসেন্টে টসে টসে হেরে আগে ব্যাট করে বাংলাদেশ তুলেছিল ১৫৯ রান। ১৬০ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৩৪ রানে থেমেছে নেদারল্যান্ডস। এতে ২৫ রানের জয় পায় বাংলাদেশ। ম্যাচসেরা হয়েছেন টাইগার অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান।

বাংলাদেশের পক্ষে লেগস্পিনার রিশাদ হোসেন চার ওভারে ৩৩ রানের বিনিময়ে তিন উইকেট নিয়েছেন। আর তাসকিন শিকার করেন দুই উইকেট। এছাড়া মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মোস্তাফিজুর রহমান ও তানজিম হাসান সাকিব একটি করে উইকেট নিয়েছেন। নেদারল্যান্ডসের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩৩ রান আসে সাইব্র্যান্ড এঙ্গেলব্রেখ্টের ব্যাট থেকে।

এছাড়া, বিক্রমাজিৎ সিং ১৬ বলে ২৬ রান এবং স্কট এডওয়ার্স করেন ২৩ বলে ২৫ রান। এই তিন জনের ব্যাটে ভালোই জবাব দিচ্ছিল ডাচরা। একসময় বাংলাদেশ দলে ভয়ও জাগাচ্ছিল এই তিনজন। তবে বাংলাদেশি বোলারদের দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তনে সেই শঙ্কা উড়িয়ে জয় নিশ্চিত করে শান্তর দল।

এর আগে, টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ও লিটন দাসের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। তানজিদ তামিমের সাথে ওপেনিংয়ে নেমে মাত্র ১ রানেই আউট হন শান্ত। ডাচ স্পিনার আরিয়ান দত্তের বলে রিভার্সসুইপ খেলতে গিয়ে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। এতে মাত্র ৩ রানেই প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। তিন নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামা লিটন দাসও ফেরেন ব্যর্থ হয়ে। আরিয়ান দত্তের বলে লিটন সুইপ শর্টে বাউন্ডারি মারতে গিয়ে এঙ্গেলব্রেখটের হাতে ধরা পড়েন। তিনিও করেন এক রান। ২৩ রানেই দ্বিতীয় উইকেট হারানো বাংলাদেশ এরপর ঘুরে দাঁড়ায় তানজিদ তামিম ও অভিজ্ঞ ব্যাটার সাকিব আল হাসানের ব্যাটে। সাকিব তুলে নেন নিজের ১৩তম টি-টোয়েন্টি অর্ধশতক।

সাকিব-তামিমের ৩২ বলে ৪৮ রানের জুটি ভাঙে ভ্যান মেকেরেনের বলে। তার বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে লিডের ক্যাচ হয়ে ফেরেন তামিম। এই ওপেনারের ব্যাট থেকে আসে ২৬ বলে ৩৫ রান। তিনি ৫টি চার ও একটি ছক্কা মারেন।

শ্রীলঙ্কা ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দুর্দান্ত ব্যাট করে হৃদয় জেতা তাওহিদ হৃদয় এই ম্যাচে দলের আস্থার প্রতিদান দিতে পারেননি। প্রিংগেলের বলে বোল্ড হয়ে ফেরা এই ব্যাটার করেছেন মাত্র ৯ রান। তবে ক্রিজে পড়েছিলেন সাকিব। শেষদিকে সাকিবকে দারুণ সঙ্গ দিয়ে মাহমুদউল্লাহ ২১ বলে ২৫ আর জাকের আলী অনিক খেলেন ৭ বলে ১৪ রানের ইনিংস। ৪৬ বলে ৬৪ রানে অপরাজিত থেকে ইনিংস শেষ করেছেন সাকিব। তাইতো বল হাতে কোনো উইকেট না পেলেও দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের জন্য ম্যাচসেরার পুরস্কার সাকিবের হাতে উঠেছে।

এই ম্যাচ দিয়ে দীর্ঘ ১৯ মাস ২৯ দিন এবং ২০ ইনিংস পর আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে অর্ধশতকের দেখা পেয়েছেন সাকিব আল হাসান।এই ম্যাচে দুইটি রেকর্ডও করেছেন এই টাইগার অলরাউন্ডার। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে জাতীয় দলের হয়ে টি-টোয়েন্টিতে আড়াই হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করলেন সাকিব। এছাড়া ১০০তম অর্ধশতকের রেকর্ড গড়েছেন সাকিব।

/এনকে


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply