বর্তমানে বাজার থেকে একটি ডিম কিনলে এক টাকা চলে যায় বিশেষ কারো হাতে। প্রতিদিন দেশে গড়ে চার কোটি ডিম বিক্রি হলে, মাসে ১২০ কোটি টাকা আমাদের পকেট থেকে চলে যাচ্ছে সিন্ডিকেটের পকেটে। খামার পর্যায়ে দাম বাড়েনি, যোগানেও বড় টান পড়েনি। তারপরও গত দুই মাসে ডজনে ডিমের দাম বেড়েছে ২০ টাকা। এসএমএসের মাধ্যমে প্রতিদিন ডিমের দর ঠিক করে দেয় একটি চক্র। চলছেই ডিম নিয়ে পকেটমার সিন্ডিকেটের কারসাজি।
প্রতিদিন বিভিন্ন জেলা থেকে মধ্যরাতের পরই ডিমের চালান আসে রাজধানীর তেজগাঁও ডিমের আড়ত এলাকায়। আড়তে প্রতিদিন বিক্রি হয় ১৫ থেকে ২০ লাখ পিস। খামার থেকে চালান আসে ৪ দিন পর পর। ক্যাশমেমো বা রশিদ দিয়ে বেচাকেনার নিয়ম থাকলে, তা মানছেন হাতেগোনা ব্যবসায়ী।
খামার পর্যায়ে না বাড়লেও পাইকারি পর্যায়ে ডিমের দাম বেড়ে গেছে। অভিযোগ আছে, সারাদেশের বাজার নিয়ন্ত্রণ করেন তেজগাঁওয়ের ব্যবসায়ীরা।
তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. আমানত উল্লাহ যমুনা নিউজকে বলেন, দাম বাজারের ওপর নির্ভর করে। চাহিদা বেশি হলে বাড়ে আবার মন্দা থাকলে একটু কমে।
তেজগাঁয়ের এসব আড়ত থেকেই ডিম যায় ঢাকার খুচরা দোকানে। আবহাওয়ার সাথে বাড়ছে দামের উত্তাপ। জানা গেলো, ছুটির দিনে রাজধানীতে প্রতি ডজন লাল ফার্মের ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা দরে। সাদা কিনলে দাম কিছুটা কম। দেশি ও হাঁসের মুরগির ডজন ২০০ টাকা ছুঁই ছুঁই। এই দাম বাড়াচ্ছে কে?
বড় পর্দায় নিয়ে দেখা যায়, প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে সাড়ে ৭টার মাঝে ডিমের দাম কী হবে, তা জানিয়ে মেসেজ আসে ব্যবসায়ীদের কাছে। তবে এই দর চূড়ান্ত হয় আগের দিন বিকেলে। শুধু এসএমএস না, ফেইসবুক গ্রুপেও পরিচয় গোপন করে ডিমের দাম পোস্ট করা হয়। অভিযোগ আছে, এসব বার্তা পাঠান বড় কর্পোরেট বেনিয়ারা।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেন, একই ব্যক্তি যদি পোল্ট্রি, ফিড, মুরগির বাচ্চা উৎপাদন করে এবং প্রান্তিক খামারিরা শুধু মুরগি ও ডিম উৎপাদন করে। অতএব উৎপাদন খরচের পার্থক্য হয় এবং বাজারে টিকতে না পেরে, প্রান্তিক খামারিরা উৎপাদন থেকে সরে যাচ্ছে। সংকট সৃষ্টি হচ্ছে এবং দাম বেড়ে যাচ্ছে।
সম্প্রতি কয়েকটি জেলায় হিমাগার থেকে বেনামে মজুদ করা ডিম উদ্ধার করেছে প্রশাসন। এখন সেই প্রবণতা কম। সেই হিসাবে ডিমের যোগান বাড়ার কথা। তাহলে তা উল্টো কেন কমে গেলো সে সদুত্তর নেই ব্যবসায়ীদের কাছে।
এটিএম/
Leave a reply