জাতীয় চারনেতাকে জেলখানায় হত্যার আগের দিন ঢাকা জেলখানা রেকি করেন বঙ্গবন্ধুর খুনি মেজর ডালিম। তাকে দেখে একই জেলে বন্দি ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মাহবুব উদ্দীন আহমদ বুঝতে পারেন জেলখানায় খারাপ কিছু ঘটতে যাচ্ছে। কিন্তু জাতীয় চারনেতার হত্যাকাণ্ড কেউই আঁচ করতে পারেননি। সেদিন পাশের সেলে বন্দি এসপি মাহবুব শুনেছিলেন ঘাতকদের কথোপকথন এবং গুলির শব্দ।
স্বপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার সপ্তাহ না পেরুতেই গ্রেফতার হন তৎকালীন উপ-রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী এম মনসুর আলী, সাবেক অর্থমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ এম কামরুজ্জামান। যাদের প্রত্যেককেই মন্ত্রিসভায় যোগ দিতে বলেছিলেন বঙ্গবন্ধুর ঘাতক মোশতাক আহমেদ। কিন্তু জাতীয় চারনেতা ঘৃণাভরে সেই প্রস্তাব প্রত্যাখান করেছিলেন।
২ নভেম্বর রাতে চারনেতাকে আলাদা করে একটি সেলে রাখা হয়। কিন্তু সেই সেল তালাবদ্ধ করা হয়নি। রাত ১২টায় বাজানো হয় পাগলা ঘন্টা। এরপর ঘাতকেরা অস্ত্রসহ জেলখানায় ঢুকতে চাইলে জেল ডিআইজি তাদের বাধা দেন। বঙ্গভবনে ফোন দিলে রাষ্ট্রপতি মোশতাক ঘাতকদের অস্ত্রসহ প্রবেশের অনুমতি দেয় । ১০ ফুট দূরে পাশের সেল থেকে সব শুনছিলেন সেসময়কার এই রাজবন্দী।
তিনি জানান, ডিআইজি যখন বঙ্গভবনে ফোন করে তখন খন্দকার মোশতাক বলে, ওরা যা করতে চায় করতে দাও। এরপর খুনিরা ব্রাশফায়ার করে। যে যে অবস্থায় ছিলো সে অবস্থায়ই মৃত্যু হয়েছে ভেবে খুনিরা চলে যায়।
এদিকে, গুলির পরও বেঁচে ছিলেন এম মনসুর আলী। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি।
মাহবুব উদ্দীন আহমদ জানান, খুনিরা চলে গেলে আমরা এম মনসুর আলীর গোঙানি শুনতে পাই। তিনি পানি পানি বলে চিৎকার করতে থাকেন। তখন কারারক্ষী যারা ছিলো তারা খুনিদের আবার খবর দেয়। তখন খুনিরা দৌঁড়ে এসে যাদের গুলি করেছিলো তাদের ওপর বেয়নেট চার্জ করে।
Leave a reply