‘পশু নয়, নিজেদের জীবন কোরবানি দিচ্ছি’

|

ছবি: রয়টার্স

‘পশু নয়, নিজেদের জীবন কোরবানি দিচ্ছি আমরা’, বুকে হাহাকার নিয়ে এভাবেই গাজার ঈদের বর্ণনা দিলেন খান ইউনিসের বাসিন্দারা। ইসরায়েলের লাগাতার আগ্রাসনের মুখে ঈদ উদযাপন তো দূরের কথা, ঈদের দিনে বেঁচে থাকবেন কিনা, নেই সে গ্যারান্টিও। এমনকি ঈদের দিনও হামলা হয়েছে ফিলিস্তিনিদের ওপর।

একজন ফিলিস্তিনি বলেন, প্রতিবছর পশুর রক্তে লাল হয় গাজার রাস্তা। এবার মানুষের রক্তে রেঙেছে। অন্যান্যবার পশু কোরবানি দিয়ে আমরা আনন্দ উদযাপন করি। এবার হাজার হাজার গাজাবাসী নিজেকেই কোরবানি দিয়েছে। বিশ্বের সবচেয়ে দামি কোরবানি এখানে হয়েছে। কিন্তু কোনো আনন্দ নেই।

আরেকজন বলেন, এই ঈদে আমরা কোনো পশু কোরবানি দিতে পারছি না। কিন্তু কোরবানি দিয়েছি আমাদের ভালোবাসার বহু মানুষকে। কোরবানি দিয়েছি নিজেদের ঘরবাড়ি, হাসি-আনন্দ। আশা করি, আল্লাহ আমাদের এই কোরবানি কবুল করবেন। দুনিয়ায় না হোক, আখিরাতে ভালো থাকব আমরা।

ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া গাজা উপত্যকার কোথাও নেই ঈদ উৎসবের চিহ্ন। ধ্বংসস্তূপের মধ্যেই জায়নামাজ পেতে আদায় করতে হয়েছে ঈদ জামাত। খুশি নিয়ে নয়, বিমর্ষ মুখে নামাজ আদায় করছেন গাজার মুসল্লিরা। বাবার হাত ধরে নামাজ পড়তে এসেছে ছোট্ট শিশুটিও। তবে ঈদের দিনও পেটে খাবার পড়বে কিনা, জানা নেই তার।

ইসরায়েলি হামলার মুখে এখন অনেকটাই শূন্য জনপদ খান ইউনিস। শুধু খান ইউনিসই নয়, গাজার বেশির ভাগ জনবসতির চিত্রই এখন এমন। ঈদের দিনও অনেকেই ফিরতে পারেনি নিজ ভিটায়। তাই খাঁ খাঁ করছে লোকালয়।

একজন গাজাবাসী বলেন, যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় উদ্বাস্তু হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি। বাচ্চাদের জন্য এক টুকরো মাংসের যোগাড়ও হয়নি। এটা আমাদের জন্য ঈদ নয় বরং বর্বরদের জন্য ঈদ, যেখানে আমাদেরকে কোরবানি দেয়া হচ্ছে।

গত ৮ মাস ধরে চলা ইসরায়েলি আগ্রাসনে এ পর্যন্ত প্রাণ গেছে ৩৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনির। প্রতিদিনই গাজাজুড়ে চলছে ইসরায়েলি বর্বরতা।

/এএম


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply