প্রবল বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলে টিকতে না পেরে আশ্রয়কেন্দ্রে ছুটছে সিলেটের সীমান্তবর্তী তিন উপজেলার নিম্নাঞ্চলের মানুষ। সরকারি হিসেবে, বন্যার কবলে পড়েছে অন্তত ৪০ হাজার পরিবার। পানি কমার প্রত্যাশায় কেউ কেউ ভোগান্তি সহ্য করে এখনও রয়ে গেছেন বাড়িতে। কিন্তু পূর্বাভাস বলছে, আগামী দুই-তিন দিনে আরও অবনতি হতে পারে পরিস্থিতি।
তবে, যারা আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন, তারাও পড়ছেন ব্যাপক ভোগান্তিতে। আশ্রয়কেন্দ্রের চারপাশে থৈ থৈ জল। যেদিকে চোখ যায় শুধু পানি আর পানি। তাই সরকারি সহায়তার দিকে তাকিয়ে থাকা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই তাদের।
সরেজমিন দেখা যায়, দফায় দফায় আসা পাহাড়ি ঢল ভোগান্তি বাড়িয়েই যাচ্ছে এসব নিম্নাঞ্চলের মানুষের। নতুন করে আবারও জলমগ্ন হয়ে পড়েছে কানাইঘাট, গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা।
এদিকে উজানের ঢলে সিলেটের সবকটি নদীর পানি বেড়েই চলছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য, ১২ ঘণ্টায় সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে পানি বেড়েছে ৪৩ সেন্টিমিটার। এতে বিপৎসীমার ১১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
এছাড়া কুশিয়ারা, সারি, গোয়াইনসহ সবকটি নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, আজও সিলেটে অব্যাহত থাকবে বৃষ্টিপাত।
অন্যদিকে সুনামগঞ্জে টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে গেছে বিশ্বম্ভরপুর, মধ্যনগর, দিরাইয়ের বিস্তীর্ণ এলাকা। প্লাবিত ছাতক, দোয়ারাবাজার, শান্তিগঞ্জ, জগন্নাথপুর ও তাহিরপুরের অন্তত দেড় শতাধিক গ্রাম। এরইমধ্যে এসব এলাকার লোকজন ঘরবাড়ি ছাড়তে শুরু করেছে। বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে সুরমা নদীর পানি। ফলে নদী উপচে শহরেও ঢুকে পড়েছে পানি।
দুর্গত এলাকার জন্য এরইমধ্যে খোলা হয়েছে ৫১৬টি আশ্রয়কেন্দ্র। যেখানে সাধ্যমত খাবার সরবরাহ করছে জেলা প্রশাসন।
ভুক্তভোগীরা বলেন, ২০২২ এর বন্যার চেয়ে ভয়ানক রূপ নিচ্ছে এবারের বন্যা। পরিবার-পরিজন নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তারা। আরও কয়েকদিন এমন পরিস্থিতি থাকলে কী হবে, তা নিয়েও বাড়ছে দুশ্চিন্তা।
সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান বলেন, বন্যা দুর্গত প্রতিটি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ও ইউপি চেয়ারম্যানরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। নজর রাখছে জেলা প্রশাসনও। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সব প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
/এমএইচ
Leave a reply