তুফানে ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য শাকিবের ‘দরদ’

|

সারাদেশে চলছে ‘‘তুফান’ ঝড়! ঈদের দিন যখন বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে দর্শকরা দেখছেন ‘তুফান’, ঠিক তখনই সুপারস্টার শাকিবের আরেকটি বহুল প্রতীক্ষিত সিনেমা ‘দরদ’-এর অফিসিয়াল টিজার প্রকাশ করা হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইউটিউবে।

টিজারে দেখা যায়, সিনেমাটির কেন্দ্রীয় চরিত্রে রয়েছেন শাকিব খান ও বলিউড অভিনেত্রী সোনাল চৌহান। শুরুতেই, একজন শাকিবকে তার নাম জিজ্ঞেস করেন, নায়ক উত্তর দেন, ‘দুলু মিয়া’। দুলু মিয়ার নাচ দেখে নায়িকা শিস বাজিয়ে বলে ওঠেন ‘সুপার’।

তবে এরপরই দৃশ্যপট বদলে যেতে থাকে দ্রুত। শাকিবের বাম হাতে মিষ্টির প্যাকেট। ধপাস করে দুই জনকে ডান হাত দিয়ে একসাথে গলায় কোপ দেন শাকিব; একটি কুড়াল দিয়ে। কিন্তু কোপ দেয়ার পর হঠাৎই ভয় পেয়ে যান তিনি। সাথে সাথে ফেলে দেন হাতের কুড়ালটি।

এরপর অন্য একটি দৃশ্যে অভিনেত্রী সোনাল চৌহানকে আদর করে নিজের হাতে মুখে তুলে দেন মিষ্টি। মিষ্টি খেতে খেতে অজ্ঞান হয়ে পড়েন নায়িকা। শাকিব তাকে বুকে জড়িয়ে ধরেন এবং এমন এক্সপ্রেশন দেন, যেন মনে হয়, তার ভেতর অন্য একজন ভয়ানক মানুষ ভর করেছে। ব্যাকগ্রাউন্ডে শোনা যায় হাসির শব্দও।

তারপর গলায় তাবিজ পরে হাসি দিয়ে হাটতে থাকেন তিনি। খুব সাদামাটা গেটআপ। চুল সিঁথি করা। দেখলে যেন মনে হবে ভাজা মাছটি উল্টে খেতে জানেন না তিনি। তাহলে প্রশ্ন থেকে যায়, কুড়াল নিয়ে মানুষ খুন করা আরেকজন কে তাহলে?

টিজারের শেষের দিকে সবুজ শার্ট পরে শাকিবকে দেখা যায় আরেকজনকে ছুরি দিয়ে বেশ কয়েকবার আঘাত করছেন। রক্তের ছিটে তার মুখের ওপর পড়তে থাকে। রক্তমাখা হাত দুটো নিয়ে আতঙ্কে ও ভয়ে নিজের মুখ মুছতে থাকেন তিনি। যেন বিশ্বাসই করতে পারছেন না রক্ত তার হাত ও মুখে কীভাবে এলো? অথচ তিনিই একটু আগে ছুরি দিয়ে আঘাত করছিলেন কাউকে।

এরপর টিজারে দৃশ্য চলে যায় জেলখানায়। যেখানে জেলখানার আসামির পোশাক পরে হেঁটে আসছেন শাকিব। চুলগুলো বড় ও এলোমেলো। হাটা থামিয়ে অদ্ভুতভাবে হাসতে থাকেন নায়ক।

‘আমি তাহলে জিতেই গেলাম’ বলে নাচতে নাচতে শেষ হয় টিজার। ব্যাকগ্রাউন্ডে হাসির শব্দ চলতে থাকে।

শাকিবের ‘দরদ’ চলচ্চিত্রটি মূলত একটি ভারত-বাংলাদেশী যৌথভাবে নির্মাণ করা হচ্ছে, যা এসকে মুভিজ, অ্যাকশন কাট এন্টারটেইনমেন্ট এবং কিবরিয়া ফিল্মসের দ্বারা তৈরি।

সিনেমায় শাকিব খান ও সোনাল চৌহান ছাড়াও অভিনয় করছেন পায়েল সরকার, রাজেশ শর্মা, অলোক জৈন, রাহুল দেব, সাফা মারুয়া, ইমতু রাতিশ, এলিনা শাম্মি, তানভীর তারেক, বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী প্রমুখ আরও অনেকে।

সিনেমার টিজার দেখে মনে হচ্ছে, প্রধান চরিত্র ‘দুলু মিয়া’র ডুয়েল পারসোনালিটি রয়েছে। মানে, একজন মানুষের মধ্যে একের অধিক ব্যক্তিত্ব। প্রথমেই বলে নেয়া ভালো যে এ ধরনের গল্প আমাদের দেশে এই প্রথমই পর্দার সামনে আনা হয়েছে। গল্পের চরিত্র বিবেচনা করলে, হয়তো শাকিব খানের থেকে ভালো আর কেউ ‘দুলু মিয়া’-র চরিত্রটি করতে পারবেন না। তার লুক থেকে শুরু করে এক্সপ্রেশন, সবকিছুতে তিনি নিজেকে নিয়ে গেছেন অন্য এক উচ্চতায়।

তাছাড়াও নিজের ডুয়েল চরিত্র ভালভাবে পর্দায় ফুটিয়ে তুলতে পোশাক, চুলের স্টাইল সবকিছুতে পাওয়া যাবে অন্য এক শাকিবকে। অন্যদিকে, ক্যামেরার সামনে সোনাল চৌহানও ছিলেন দুর্দান্ত। যদিও তাকে খুব কম সময়ের জন্য টিজারে দেখা গিয়েছে, তারপরও যতটুকু সময় তিনি ক্যামেরার সামনে ছিলেন, ভালোই অভিনয় করেছেন।

এবার আসা যাক সিনেমার ডিরেক্টর অব ফটোগ্রাফিতে। ক্যামেরায় কাজ করেছেন ভেঙ্কাটেস গান্দাধারি। গল্পের প্রত্যেকটি মুহূর্ত তিনি ফুটিয়ে তুলেছেন ভিন্ন আঙ্গিকে। দেখে মনে হবে তামিল কোন সিনেমা। বিশেষ করে, টিজারের একটি দৃশ্যে নায়ক ও নায়িকার নৌকায় রাতে একটি দৃশ্য বেশ মনোমুগ্ধকর। পেছনে লাইটের সেটআপ দুর্দান্ত। এছাড়াও কুড়ালের দৃশ্যটিও ছিল দেখার মতো।

গল্প অনুসারে, শাকিবের পোশাক সাদামাটা। তবে এখানেও মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন কস্টিউম ডিজাইনার। সব মিলিয়ে পরিচালক অনন্য মামুনের কাজ এখন পর্যন্ত বেশ ভালো। টিজার দেখে নেতিবাচক কিছুই বলার মতো নেই। যদি বলতেই হয়, তাহলে টিজারটি ১ মিনিট ২৪ সেকেন্ড না হলেও পারতো। কারণ- টিজার দেখে অনেকটা ট্রেলার মনে হতে পারে দর্শকদের। সেই সাথে গল্পের ধারণাও পাওয়া যায়। তবে এতোগুলো ভালো দৃশ্য ট্রেলারে থাকলে আরও বেশি ভালো হতো।

/এআই


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply