খুলে দেয়ার প্রথম পাঁচ দিনে সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের একসময় মালিকানায় থাকা ‘সাভানা ইকো রিসোর্ট অ্যান্ড ন্যাচারাল পার্ক’ থেকে দুই লাখ ৪৭ হাজার ৩ টাকা আয় হয়েছে। আদালতের নির্দেশে এই টাকা সরকারি খাতে জমা দিয়েছে রিসিভার।
আলোচিত এই পার্কটিতে ১০০ টাকা ফি দিয়ে দর্শনার্থীরা প্রবেশ করতে পারছে। এছাড়া সুইমিং পুল ব্যবহার করতে আলাদা ২০০ টাকা গুনতে হচ্ছে। তবে পার্কটির কটেজগুলো আপাতত বন্ধ রয়েছে।
এর আগে, গত ৭ জুন আদালতের নির্দেশে রিসিভার নিয়োগ করে গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসন পার্কটির নিয়ন্ত্রণ নেয়। পরে গত ১৫ জুন দর্শনার্থীদের জন্য তা খুলে দেয়া হয়।
প্রসঙ্গত, বেনজীর ও তার পরিবারের মালিকানায় ছিল পার্কটি। সম্প্রতি বেনজীরের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠার পর আদালত তার শতাধিক সম্পত্তি জব্দের নির্দেশ দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে এই রিসোর্টটির নিয়ন্ত্রণ নেয় জেলা প্রশাসন।
এর আগে, গত ২৩ মে বেনজীর আহমেদের ৮৩টি দলিলের সম্পত্তি এবং ২৭টি ব্যাংকের ৩৩টি আকাউন্ট জব্দের নির্দেশ দেয় ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত। পরে ২৬ মে একই আদালত বেনজীর ও তার স্ত্রী-সন্তানের আরও ১১৯টি স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি জব্দেরও নির্দেশ দেন।
পরে ২৮ মে সাবেক আইজিপির জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নোটিশ জারি করে দুদক। নোটিশে বেনজীর আহমেদকে ৬ জুন এবং তার স্ত্রী-সন্তানদের ৯ জুন হাজির হতে বলা হয়। এরপর হাজিরের আগের দিন তার পক্ষ থেকে ১৫ দিন সময় চেয়ে আবেদন করা হয়। পরে এই আবেদন গ্রহণ করে ২৩ জুন তাকে আবারও তলবের চিঠি দেয় সংস্থাটি।
এরপর রাজধানীর গুলশান-বাড্ডা-আদাবরে ফ্ল্যাট, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ও বান্দরবানে তার আরও জমির সন্ধান পায় দুদক। পরে গত ১২ জুন এই সম্পত্তিগুলো জব্দের আবেদন করলে আদালত তাও মঞ্জুর করেন।
বেনজীর আহমেদের বিত্ত-বৈভব নিয়ে দেশের একটি সংবাদপত্র গত ৩১ মার্চ সংবাদ প্রকাশ করে। প্রতিবেদনে সাবেক এই আইজিপি ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ উঠে আসে। পরে এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে অনুসন্ধানে নামে দুদক। এদিকে এই প্রতিবেদনের পর এক ভিডিও বার্তায় বেনজীর আহমেদ দাবি করেন, তিনি ও তার পরিবারের নামে যেসব সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে তা মিথ্যা ও অসত্য।
উল্লেখ্য, বেনজীর আহমেদ ২০২০ সালের ১৫ এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আইজিপি ছিলেন। এর আগে তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার ও র্যাবের মহাপরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে র্যাব এবং র্যাবের সাবেক ও বর্তমান যে সাত কর্মকর্তার ওপর যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দেয়, তাদের মধ্যে বেনজীর আহমেদের নামও ছিল।
/আরএইচ
Leave a reply