ঝিনাইদহ করেসপনডেন্ট:
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ঈদুল আযহা উপলক্ষে দরিদ্রদের জন্য বরাদ্দ ভিজিএফের চাল বিক্রির অভিযোগ উঠেছে তিন ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। গত ১৫ জুন বিকেলে এই চাল বিক্রি করা হয়েছে মহেশপুর উপজেলার খালিশপুর বাজারের একটি দোকানে। শুক্রবার (২১ জুন) সকালে এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
জানা গেছে, ঈদের দুই দিন আগে গত ১৫ জুন কালীগঞ্জ খাদ্য গুদাম থেকে ৪টি শ্যালো ইঞ্জিন চালিত নসিমনে (আঞ্চলিক যান) করে ২৬৪ বস্তা ভিজিএফের চাল নিয়ে যাওয়া হয় মহেশপুরের খালিশপুরে। প্রতিটি গাড়িতে ৬৬ বস্তা চাল ছিল। প্রতিটি বস্তা খাদ্য অধিদফতরের স্টিকারযুক্ত। নিয়ে যাওয়ার সময় একটি গাড়ির চালকের কাছে তিনটি বিলি আদেশ (ডিও) পাওয়া গেছে। বিলি আদেশগুলোতে দেখা যায় এগুলো কালীগঞ্জ উপজেলার ৪নং নিয়ামতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাজু আহমেদ রনি লস্কর, ৬নং ত্রিলোচনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল হিজড়া ও ৮নং মালিয়াট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান খানের নামে বরাদ্দকৃত চাল।
এসব গত ১২ জুন চালগুলো বরাদ্দ দেয়া হয় এবং এর মেয়াদ ছিল ৩০ জুন পর্যন্ত। এরমধ্যে চেয়ারম্যান রাজু আহমেদ রনি লস্করের জন্য ২ দশমিক ৫ মেট্রিক টন, চেয়ারম্যান নজরুল হিজড়ার জন্য ৩ মেট্রিক টন ও আজিজুর রহমান খানের জন্য ২ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়।
উপজেলা অফিস সুত্রে জানা গেছে, কালীগঞ্জ খাদ্য গুদাম থেকে বের হওয়া এসব চাল দরিদ্র মানুষের জন্য বিশেষ বরাদ্দের। ঈদের আগে যে চালগুলো গরীব মানুষদের দেয়া হয়। আর এই চালগুলো কোরবানির ঈদের আগে দরিদ্র মানুষের মাঝে প্রদান করার জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল।
ভিডিওতে এক গাড়ির চালককে বলতে দেখা যায়, কালীগঞ্জ খাদ্য গুদাম থেকে চাল নিয়ে মহেশপুর উপজেলা খালিশপুর বাজারের দীপু দাদার দোকানে নিয়ে যাচ্ছিলাম। আমার গাড়িটাই শেষ। এর আগে তিন গাড়ি গিয়েছে। মোট ৪ গাড়ি চাল বেরিয়েছে। প্রতিটি গাড়িতে ৬৬ বস্তা চাল রয়েছে বলেও উল্লেখ করে ওই চালক।
নিয়ামতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাজু আহমেদ রনি লস্কর বলেন, বিষয়টি তিনি জানেন না। এ বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছেন বলেও জানান তিনি। মুঠোফোনে ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নজরুল হিজড়ার কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, ফোনে তিনি কিছুই বলবেন না। সরাসরি ইউনিয়নে আসলে সব বলবেন তিনি।
অন্যদিকে, মালিয়াট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান খানের মোবাইলে ফোন দিলেও তিনি ধরেননি।
কালীগঞ্জ উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মাহদী হাসান শিহাব জানান, গত ১৫ জুন সরকারি বরাদ্দের চাল গুদাম থেকে দেয়া হয়েছে। ডিও লেটার দেখালে প্রদান করা হয়। এই চাল কে কোথায় বিক্রি করেছে সেটা তিনি জানেন না।
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইশরাত জাহান জানান, তিনি বিষয়টি শুনেছেন। তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি। তবে সেটি ভিজিএফ না অন্য কোন বরাদ্দের চাল কিনা নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলেও জানান তিনি।
/এএস
Leave a reply