প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে ইউরোপিয়ান মেজর টুর্নামেন্টে ৫০ তম ম্যাচ খেলার কীর্তি গড়েছেন পর্তুগিজ অধিনায়ক ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। তবে মাইলফলকে পৌঁছার রাতে দলের পরাজয় তাকে করেছে বিমর্ষ। সেইসাথে নিজেও দেখেছেন হলুদ কার্ড। প্রথমবারের মতো বড় টুর্নামেন্ট খেলতে এসে পর্তুগালকে ২-০ গোলে হারিয়ে ইতিহাস গড়েছে জর্জিয়া। এবারের আসরের সবচেয়ে বড় অঘটনও বলা যায় এই ম্যাচকে। গ্রুপে ৪ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় হয়েছে জর্জিয়া, সেরা চার তৃতীয় দলের একটি হয়ে শেষ ষোলোয় উঠেছে দলটি।
দলের গ্রুপ সেরা হওয়াটা নিশ্চিত হয়ে গেছিলো আগেই। তাই তুরস্কের বিপক্ষে অনায়াস জয়ের ম্যাচের শুরুর একাদশ থেকে আটটি পরিবর্তন করে দল সাজান পর্তুগাল কোচ রবের্তো মার্টিনেজ। তাতে আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলতে পারলেও, গোল করতে ব্যর্থ হয় পর্তুগাল।
প্রথমবার ইউরোয় খেলতে এসেই নকআউট পর্বে ওঠার হাতছানিতে জর্জিয়ার শুরুটা ছিলো অবিশ্বাস্য। মাঝমাঠে প্রতিপক্ষের ভুলে বল পেয়ে কাউন্টার এটাকে যায় তারা। ডিফেন্ডারকে পেছনে ফেলে, বক্সে ঢুকে কোনাকুনি শটে চমৎকার গোলটি করেন নাপোলি ফরোয়ার্ড খাভিচা কাভারাৎসখেলিয়া। ম্যাচের ঘড়িতে সময় তখন এক মিনিট ৩১ সেকেন্ড।
১৬ মিনিটে ফ্রি কিকে প্রতিপক্ষ গোলরক্ষকের পরীক্ষা নেন রোনালদো। প্রায় ৩০ গজ দূর থেকে পর্তুগাল অধিনায়কের শট সোজাসুজি থাকলেও, ছিল বুলেটের মতো গতি। চোখের পলকে চলে আসা বল কোনোমতে পাঞ্চ করে ফেরান জর্জিও মামারদাশভিলি।
ম্যাচের ৩০ মিনিটে জোয়াও ফেলিক্সের জোরাল শট পোস্টের একটু দূর দিয়ে বাইরে যায়। পাঁচ মিনিট পর রোনালদোর আরেকটি প্রচেষ্টা ডিফেন্ডাররা আটকে দেয়।
ম্যাচের প্রথম ২০ মিনিট পর থেকেই একরকম কোণঠাসা হয়ে পড়ে জর্জিয়া। ব্যবধান ধরে রাখতে তারাও বাড়তি মনোযোগ দেয় রক্ষণে। দ্বিতীয়ার্ধে দ্বিতীয় মিনিটে রোনালদোর কাছ থেকে নেওয়া শটও প্রতিহত হয় রক্ষণে। তিন মিনিট পর পাল্টা আক্রমণে সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছিল জর্জিয়া; কিন্তু বক্সে একেবারে ফাঁকায় বল পেয়েও গোলরক্ষক বরাবর দুর্বল শট নেন কাভারাৎসখেলিয়া। একটু পরই অবশ্য দ্বিতীয় গোল পেয়ে যায় তারা।
ডি-বক্সে ঢুকেই আন্তোনিও সিলভার ফাউলের শিকার হন জর্জিয়ার লুকা লোকোশভিলি। দারুণ স্পট কিকে ডান দিকের পোস্ট ঘেঁষে গোলটি করেন জর্জেস মিকাউতাদজে।
আসরে তিন ম্যাচ খেলেই প্রতিটিতেই জালের দেখা পেলেন ২৩ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড। ব্যবধান দ্বিগুণ করার পর যেন আরও আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠে জর্জিয়া। তবে মুহুর্মুহু আক্রমণে চার মিনিট যোগ করা সময়েও দুটি ভালো সুযোগ তৈরি করে পর্তুগাল।
ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে অবস্থানের হিসেবে ইউরোর ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অঘটনের জন্ম দিল ৭৪তম স্থানে থাকা জর্জিয়া, হারিয়ে দিল তাদের চেয়ে ৬৮ ধাপ এগিয়ে থাকা পর্তুগালকে।
উল্লেখ্য, কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে পর্তুগালের প্রতিপক্ষ স্লোভেনিয়া। জর্জিয়া লড়বে তিনবারের ইউরো চ্যাম্পিয়ন স্পেনের সঙ্গে। গ্রুপের রানার্সআপ তুরস্ক লড়বে অস্ট্রিয়ার বিপক্ষে।
/এমএইচআর
Leave a reply