কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি, দুই শতাধিক গ্রাম প্লাবিত

|

স্টাফ করেসপনডেন্ট, কুড়িগ্রাম:

কুড়িগ্রামে চলমান বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হয়েছে। জেলার ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৭৭ সে.মি, নুনখাওয়ায় ৭০ সে.মি ও হাতিয়া পয়েন্টে ৭৯ সে.মি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে নতুন করে অনেক এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।

বর্তমানে বন্যায় জেলার ৪১টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের দুই শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে প্রায় দেড় লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ৫৫৮০ হেক্টর ফসলি জমি পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। প্রায় দেড় শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঠদান বন্ধ রয়েছে। তবে জেলা প্রশাসনের হিসেব মতে দুর্যোগ কবলিত মানুষের সংখ্যা ৬২ হাজার দুইশত জন।

এদিকে দুর্গতদের অনেকে বসতবাড়ির বাঁশের মাচা, নৌকা ও কলাগাছের ভেলায় আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। বানের পানিতে অনেকের গৃহপালিত পশু-পাখী ভেসে গেছে। বন্যা কবলিত এলাকাগুলোতে খাদ্য, বিশুদ্ধ খাবার পানি, শুকনো খাবার ও জ্বালানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।

এছাড়া, চারণভূমি তলিয়ে যাওয়ায় গো-খাদ্যেরও তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। বানভাসীদের অনেকেই গবাদি পশুসহ বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ এবং আশ্রয়কেন্দ্রে দিনানিপাত করেছে।

জেলা সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল গফুর বলেন, ইউনিয়নের অনেক চর ও দ্বীপ বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিবুল হাসান জানান, জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ব্রহ্মপুত্রসহ অন্যান্য নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি আরও ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। ব্রহ্মপুত্র নদের পানি তিনটি পয়েন্টে বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে অন্যন্য নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে রয়েছে। 

জেলা ত্রাণ ও পুর্নবাসন কর্মকর্তা আব্দুল হাই সরকার জানান, ইতোমধ্যে ৯ টি উপজেলার বানভাসীদের জন্য ২৮২ মেট্রিক টন চাল ও ২১ লক্ষ ৮৫ হাজার টাকা বিতরণের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তাছাড়া ৩৯৫ মেট্রিক টন চাল ও ৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা মজুত রয়েছে। এগুলো পর্যায়ক্রমে বিতরণ করা হবে।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ জানান, জেলার ৯ টি উপজেলার মধ্যে ৮ টি উপজেলা বন্যা কবলিত। ইতোমধ্যে জেলায় ৪০৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। শুক্রবার (৫ জুলাই) ৭ টি উপজেলায় প্রায় তিন হাজার পরিবারের মাঝে চাল বিতরণ করা হয়েছে।

/আরএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply