ভারতে উপনির্বাচন: পশ্চিমবঙ্গ থেকে শূন্য হাতেই ফিরলো বিজেপি

|

সুকান্ত চট্টোপাধ্যায়, কলকাতা প্রতিনিধি:

সদ্য সমাপ্ত ভারতের লোকসভার পর বিধানসভার উপনির্বাচনেও পশ্চিমবঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জয় অব্যাহত। পশ্চিমবঙ্গের ৪টি বিধানসভা আসনের সব কয়টিতেই জয়লাভ করেছে মমতার নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেস। উপনির্বাচনে শূন্য হাতে ফিরতে হয়েছে ক্ষমতাসীন দল বিজেপিকে।

২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে রায়গঞ্জ, বাগদা ও রানাঘাট দক্ষিণে জিতেছিল বিজেপি। কিন্তু বিজেপি বিধায়কদের দলবদল ও মানিক তলার তৃণমূল বিধায়কের মৃত্যুতে উপনির্বাচন হয়। তাতে মমতার দলের জয়জয়কার। এদিন গণনা শুরু হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই তৃণমূল জয় পাচ্ছে এটা অনেকটাই স্পষ্ট হয়ে যায়। বিজেপির গড় হিসেবে পরিচিত ‘মতুয়া’র বাগদা বিধানসভা কেন্দ্রে লোকসভায় ২০ হাজারের বেশি ভোটে বিজেপি এগিয়ে থাকলেও মাসখানেকের ব্যবধানে উপনির্বাচনে বড় পরাজয় ঘটেছে বিজেপির।

বনগাঁ লোকসভায় শান্তনু ঠাকুর জিতলেও উপনির্বাচনে নিজের গড় রক্ষা করতে পারলেন না শান্তনু। উপনির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী মধুপর্ণা ঠাকুর পেয়েছেন ১ লাখ ৭ হাজার ৫৭৭ ভোট, বিজেপি প্রার্থী বিনয় বিশ্বাস পেয়েছেন ৭৪ হাজার ১০৯টি ভোট। ৩৩ হাজার ৪৬৮ ভোটে জিতেছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সদস্য মমতাবালা ঠাকুরের মেয়ে মধুপর্ণা ঠাকুর। মাত্র ২৫ বছরে বিধায়ক হয়ে নজির গড়লেন তিনি। মধুপর্ণা বলেন, ‘‌প্রতিটি ঘরে ঘরে গেছি। মানুষ বুঝে গেছে, দিদি সবার পাশে রয়েছে। তিনিই উন্নয়নের কাণ্ডারি।’‌

রানাঘাট দক্ষিণেও জিতেছে তৃণমূল। বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে আসা মুকুটমণি অধিকারী প্রায় ৩৮ হাজার ভোটে জিতেছেন। এই কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী ছিলেন মনোজকুমার বিশ্বাস। রায়গঞ্জ বিধানসভায় তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী কৃষ্ণ কল্যাণী জিতেছেন প্রায় ৫০ হাজার ভোটে। এই কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থী ছিলেন মানসকুমার ঘোষ। ২০২৪ লোকসভা ভোটে রায়গঞ্জে হেরে যান কৃষ্ণ কল্যাণী। তবু তার উপরেই আস্থা রেখেছিলেন মমতা ব্যানার্জি। এবার তিনি মান রাখলেন। অবশ্য ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটে বিজেপির টিকিটে রায়গঞ্জে জিতেছিলেন কল্যাণী।

মানিকতলাতেও বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী সুপ্তি পাণ্ডে। এই কেন্দ্রে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন বিজেপি প্রার্থী কল্যাণ চৌবে। উচ্ছ্বাসে মেতেছেন তৃণমূল কর্মী, সমর্থকরা । উপনির্বাচনের এই ফলাফলের পর রাজ্য বিধানসভায় আরও ক্ষমতা বাড়লো তৃণমূলের।

এর আগে, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল ২১৩টি আসনে জয়ী হয়। বিজেপি জয়ী হয় ৭৭টি আসনে। আইএসএফ-এর নৌশাদ সিদ্দিকি এবং নির্দল প্রার্থী একটি করে আসনে জয়ী হ। ওই নির্বাচনে মুর্শিদাবাদের শামসেরগঞ্জ এবং জঙ্গিপুরের প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে সেখানে ভোটগ্রহণ স্থগিত ছিল। পরে ওই দুই আসনে জয়ী হলে তৃণমূলের আসন বেড়ে দাঁড়ায় ২১৫। তবে সদ্যসমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে জয়ী হওয়া জুন মালিয়া, পার্থ ভৌমিক, হাজি নুরুল ইসলামের মতো অনেককে লোকসভায় প্রার্থী করে তৃণমূল, যারা জয়ীও হয়েছেন। ফলে সেই বিধানসভার আসনগুলি খালি পড়ে রয়েছে। সেখানেও যেকোনো সময় উপনির্বাচনের ঘোষণা দেবে নির্বাচন কমিশন।

/এনকে


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply