চলতি কোপা আমেরিকায় লিওনেল মেসি এবার নিজের ছায়া হয়ে আছেন। চার ম্যাচ খেলে গোল করেছেন একটি, সেমিফাইনালে কানাডার বিপক্ষে। ফাইনালে তার দল খেলবে কলম্বিয়ার বিপক্ষে। তবে গুরুত্বপূর্ণ এ ম্যাচের আগে উত্তরসূরিদের মেসির ব্যাপারে আশ্বস্ত করেছেন দেশটির সাবেক তারকা স্ট্রাইকার আদলফো ভ্যালেন্সিয়া। বলেছেন, মেসি এখন আগের মতো নেই। এখনকার মেসিকে যে কেউ পাহারা দিতে পারে।
এবার কোপা আমেরিকায় আর্জেন্টিনা এখন পর্যন্ত তেমন মুগ্ধতা ছড়াতে না পারলেও জিতে গেছে নিয়মিত। অবশ্য আর্জেন্টিনার ফাইনাল পর্যন্ত পথটাও সহজ ছিল। সে তুলনায় কলম্বিয়া কঠিনতম এক পথ পেরিয়ে এসেছে। ব্রাজিলের গ্রুপ থেকে গ্রুপ সেরা হয়ে সেমিফাইনালে হারিয়েছে টুর্নামেন্টের আরেক ফেবারিট উরুগুয়েকে!
হামেস রদ্রিগেজ, লুইস দিয়াজদের কলম্বিয়া দলটা ২৮ ম্যাচ ধরে অপরাজিত, শক্তিতে-গতিতে-বল পায়ে দক্ষতায়ও দারুণ। সব মিলিয়ে আর্জেন্টিনার জন্য কোপা আমেরিকার ফাইনালটা কঠিন এক পরীক্ষা হতে যাচ্ছে বলেই ধরে নিচ্ছেন সবাই।
কিন্তু আর্জেন্টিনা কতটা কঠিন পরীক্ষা হবে কলম্বিয়ার জন্য? লিওনেল স্কালোনির দল সর্বশেষ কোপা আমেরিকা আর বিশ্বকাপ জিতেছে, তাদের দলে মেসি, ডি মারিয়া আছেন। তবু আদলফো ভ্যালেন্সিয়া মনে হচ্ছে, এই আর্জেন্টিনাকে হারানো কলম্বিয়ার জন্য একেবারে কঠিন কাজ নয়।
আর্জেন্টিনারই সংবাদমাধ্যম টিওয়াইসি স্পোর্টকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ভ্যালেন্সিয়া বলেন, জানি আর্জেন্টিনা প্রতিপক্ষ হিসেবে কঠিন। ওরা বিশ্বচ্যাম্পিয়ন, কোপা আমেরিকা চ্যাম্পিয়ন, তবে এই ছেলেদেরও (কলম্বিয়ার খেলোয়াড়দের) কী বলবেন! ওরাও বেশ আত্মবিশ্বাসী।
এরপর মেসির প্রসঙ্গে ভালেন্সিয়া বলেন, আমরা বার্সেলোনায় যে মেসিকে দেখেছি – যে কিনা ছয়-সাতজন খেলোয়াড়কেও কাটিয়ে ফেলতো, ও এখন আর সেই মেসি তো নয়! ও গতি হারিয়েছে, গত কয়েক বছরে শক্তিও হারিয়েছে।
শুধু মেসি নয়, ডি মারিয়ার কথাও আলাদা করে ভ্যালেন্সিয়া বলেন, সে কারণে ওদের (কলম্বিয়ার) তরুণ খেলোয়াড়দের এটা মাথায় রাখতে হবে যে, ও (মেসি) আর আগের মেসি নেই। ডি মারিয়াও আগের মতো নেই, যেমনটা আমরা ওকে ২৩, ২৪, ২৬, ২৭ বছর বয়সে দেখেছি। এটা একটা সুবিধা, এ সুবিধাটা আমাদের নিতে হবে।
এরপরই মেসিকে নিয়ে ভ্যালেন্সিয়ার কথাটা আর্জেন্টিনা ভক্তদের কষ্ট দেবে। তিনি বলেন, মেসিকে এখন যে কেউই সহজে আটকে দিতে পারবে! ও ক্যারিয়ারে যা করেছে, সেসবের প্রতি সম্মান রেখেই বলছি এটা।
তবে এরপর মেসির প্রতি নিজের মুগ্ধতাও জানিয়েছেন ভ্যালেন্সিয়া। তিনি বলেন, সব সময়ই ওর ভক্ত আমি, খেলোয়াড় এবং মানুষ হিসেবে ওকে আমার খুব ভালো লাগে। কারণ ও এমন একজন পেশাদার খেলোয়াড় যে কখনো কোনো কিছু নিয়ে অভিযোগ করে না। এটা ভালো লাগে আমার।
নব্বইয়ের দশকের শুরুর দিকে বায়ার্ন মিউনিখে এক মৌসুম আর অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদে এক মৌসুম খেলেছেন। ইউরোপের ক্লাব ফুটবল দিয়ে তাই তাকে চেনা যাবে না। তবে কলম্বিয়ার জার্সিতে তিনি দারুণ- ৩৭ ম্যাচে গোল করেছেন ১৪টি। কলম্বিয়ার দুঃস্বপ্ন হয়ে থাকা ১৯৯৪ বিশ্বকাপের দলে ছিলেন, পরের বিশ্বকাপেও খেলেছেন। ভ্যালেন্সিয়া তাই বাইরের মানুষের কাছে তেমন পরিচিত না হলেও কলম্বিয়ায় বড় নাম।
/আরআইএম
Leave a reply