নরসিংদীতে আন্দোলনকারীদের সাথে ছাত্রলীগের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া

|

নরসিংদীতে কোটা আন্দোলনকারীদের সাথে ছাত্রলীগের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে মোট পাঁচজন আহত হন। এ সময় বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটে।

মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) বিকেল তিনটার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নরসিংদীর জেলখানা মোড়ে অবস্থায়ন নেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা নানা স্লোগান দিয়ে থাকেন। একপর্যায়ে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে বিকাল চারটার দিকে শিক্ষার্থীদের ধাওয়ায় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা সরে যায়।

এরপর আবার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নরসিংদীর জেলখানা মোড়ে অবস্থান নেয় শির্ক্ষাথীরা। এ সময় ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে মহাসড়কে বাঁশ-কাঠ দিয়ে অগ্নিসংযোগ করেন তারা। এতে মহাসড়কটিতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে সন্ধ্যা ৭টার দিকে সড়ক ছাড়ে আন্দোলনকারীরা। এরপর সড়কটিতে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

প্রসঙ্গত, গত রোববার কোটা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর একটি বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে আন্দোলন পরিস্থিতি। চীন সফর পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধার নাতিপুতিরা কোটা পাবে না, তো কি রাজাকারের নাতিরা পাবে? বিচিত্র আমাদের দেশ, বিচিত্র আমাদের মানসিকতা বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে এদিন রাতেই প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের প্রতিবাদ ও প্রত্যাহারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ করেন আন্দোলনকারীরা।

পরদিন সোমবার কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এতে দুই পক্ষের শতাধিক আহত হন। এদিন রাতেই তারা ঘোষণা দেয়, আজ মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করার। ছাত্রলীগও দুপুরে পাল্টা প্রতিবাদ সমাবেশ করার ঘোষণা দেয়।

তবে, আজ দুই পক্ষের কর্মসূচি ছাপিয়ে সারাদেশে সংঘর্ষের ঘটনা-ই আলোচনায় আসে। এখন পর্যন্ত অন্তত ৬ জনের নিহতের খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ঢাকায় ২, চট্টগ্রামে ৩ ও রংপুরে ১ জন নিহত হয়েছেন।

উল্লেখ্য, সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা বহালে গত ৫ জুনে রায় দেন হাইকোর্ট। তবে, কোটাব্যবস্থা বাতিলে ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবি তুলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। গত ৭ জুলাই থেকে শিক্ষার্থীরা কোটা সংস্কারের দাবিতে অবরোধ, বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশসহ নানা কর্মসূচি পালন করে। পরে গত ১৪ জুলাই রাষ্ট্রপতি বরাবর স্মারকলিপিও দেন তারা।

গত ১০ জুলাই হাইকোর্টের রায়ের ওপর এক মাসের স্থিতিবস্থাও দিয়েছেন আপিল বিভাগ। আগামী ৭ আগস্ট এ বিষয়ে শুনানি হওয়ার কথা থাকলেও সরকার পক্ষ থেকে আজ লিভ টু আপিল করা হয়েছে।

কোটা সংস্কারে শিক্ষার্থীদের এক দফা দাবি হলো:

সরকারি চাকরিতে সব গ্রেডে সকল প্রকার অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লিখিত অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য কোটাকে ন্যূনতম পর্যায়ে এনে সংসদে আইন পাশ করে কোটা পদ্ধতিকে সংশোধন করতে হবে।

/আরএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply