চলমান কোটাবিরোধী আন্দোলনকে ঘিরে ভাংচুর, অগ্নিকাণ্ডে কোনোভাবেই জড়িত নয় বলে দাবি করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। একইসঙ্গে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় নিন্দাও জানিয়েছে সংগঠনটি।
বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এতে বলা হয়, আন্দোলনে কেউ সহিংসতা করলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এর দায়ভার নেবে না। এ আন্দোলন শিক্ষার্থীদের প্রাণের দাবির আন্দোলন, তাই এটিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহের চেষ্টা না করতেও অনুরোধ জানায়।
শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে অভিভাবক, শিক্ষক ও সাধারণ নাগরিকদের আন্দোলনে শরিক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। আর কোটার যৌক্তিক সংস্কার ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে আজ সারাদেশে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে পালনের আহ্বান জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক টিম।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কোটা সংস্কারের যৌক্তিক ও ন্যায্য আন্দোলনে পুলিশ-বিজিবি-ছাত্রলীগ যৌথভাবে হামলা করে আন্দোলন দমনের প্রচেষ্টা করছে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন স্বতঃস্ফূর্ত ও শান্তিপূর্ণ থাকলেও সরকার কোনো ধরনের দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেয়নি। সরকার প্রথমে বিচার বিভাগকে সামনে রেখে শিক্ষার্থীদের সাথে কালক্ষেপণ ও দায় এড়ানোর চেষ্টা করেছে। পরবর্তীতে সরকারের নির্দেশনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও দলীয় সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে সহিংসভাবে আন্দোলন দমনের প্রচেষ্টা চলছে। এখন পর্যন্ত সারাদেশে হাজারের বেশি শিক্ষার্থী আহত এবং সাতজনের মতো শহীদ হয়েছেন। দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীরা স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদ-প্রতিরোধ গড়ে তুলছে। সকল বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জোর করে বন্ধ করে শিক্ষার্থীদের বের করে দেয়া হচ্ছে।
আরও বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন ক্যাম্পাসে পুলিশ হলে হলে টিয়ারশেল, গ্রেনেড ও গুলি চালিয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও সোয়াত যৌথভাবে কফিন মিছিলে হামলা চালায়। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে হামলা চালিয়ে সরকারই উদ্ভূত পরিস্থিতি তৈরি করেছে। শিক্ষার্থীরা পড়ার টেবিলে ফিরতে চায়। সরকারের কাছ থেকে দৃশ্যমান পদক্ষেপ সমাধানের পথ তৈরি করতে পারে।
আন্দোলনের পাশাপাশি আলোচনার পথও খোলা থাকবে বলে জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। তাদের দাবি, হামলায় জড়িত ছাত্রলীগ কর্মী ও দায়িত্বরত পুলিশদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। জাতীয় সংসদে আইন পাশের মাধ্যমে কোটার সংস্কার করতে হবে।
আজকের শাটডাউনে অফিস, আদালত সব বন্ধ রাখার আহ্বান জানিয়ে সংগঠনটি বলে, সড়ক ও রেলপথ অবরোধ হবে। অ্যাম্বুলেন্স, ইমার্জেন্সি পরিবহন ও গণমাধ্যম পরিবহন শাটডাউনের আওতামুক্ত থাকবে। গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে সহযোগিতাপূর্ণ আচরণের আহ্বান জানায়।
/আরআইএম/এমএন
Leave a reply