ভাইয়ের রক্তের ওপর দিয়ে কীভাবে সংলাপ হতে পারে: সার্জিস আলম

|

কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সাথে বসার বিষয়ে সরকারের ইতিবাচক বার্তার পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সার্জিস আলম উল্টো প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে বলেছেন, একদিকে গুলি আর লাশ অন্যদিকে সংলাপ! আমার ভাইয়ের রক্তের ওপর দিয়ে কীভাবে সংলাপ হতে পারে?

বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) দুপুরে সংসদ ভবন এলাকায় ব্রিফিংয়ে আইনমন্ত্রী জানান, কোটা আন্দোলনকারীদের আলোচনার প্রস্তাবকে স্বাগত জানাই। তাদের সঙ্গে আলোচনা করতে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলকে দায়িত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারা যখনই বসতে চান, তখনই বসা হবে।

সার্জিস আলমের স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট

এরপরই কোটাবিরোধী আন্দোলনের নেতা সার্জিস আলম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে এ প্রশ্ন ছুড়ে দেন। কোটাবিরোধী পক্ষের আরও অনেকেও একই প্রশ্ন রাখছেন।

এদিকে ব্রিফিংয়ে কোটার বিষয়টি দেশের সর্বোচ্চ আদালতে রয়েছে উল্লেখ করে আনিসুল হক জানান, কোটা নিয়ে আপিল বিভাগে আগামী ৭ আগস্ট শুনানির দিন নির্ধারিত আছে। শুনানির সময় এগিয়ে আনতে আমাকে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। এজন্য আগামী রোববার আদালতে আবেদন করতে অ্যাটর্নি জেনারেলকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন চলাকালে বিভিন্ন জায়গায় সংঘর্ষে নিহতের ঘটনায় হাইকোর্টের বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানকে দিয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানান আইনমন্ত্রী।

আনিসুল হক এ সময় আরও বলেন, আন্দোলনকারীদের দাবি ছিল কোটা সংস্কার করা। তাদের কথা বিবেচনা করে আমরাও (সরকার) রাজি হয়েছি। পিতৃতুল্য নাগরিক হিসেবে শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান, তারা যেন তাদের আন্দোলন প্রত্যাহার বা স্থগিত করেন।

দেরিতে কেন আলোচনার সিদ্ধান্ত সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে এ সময় তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা আজ প্রস্তাব দিয়েছে আলোচনার। আমরাও বসতে চাই। তাতে দেরি কই হলো।

আইনমন্ত্রী আরও যোগ করেন, আমি আগেও বলেছি, এখনও বলছি, মামলাটা আদালতে রয়েছে, তা-ও সর্বোচ্চ আদালতের। যখন আদালতে মামলার শুনানি শুরু হবে সরকার পক্ষ কোটা বিষয়ে একটা প্রস্তাব দেবে। আমরা কোটা সংস্কারের পক্ষে, সেই প্রস্তাব দিবো।

বিচার বিভাগের চেয়ে সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী নির্বাহী বিভাগ। দেশে বাজে পরিস্থিতি তৈরির আগে সরকার কেন সিদ্ধান্ত নিলো না, এই প্রশ্নে আনিসুল হক বলেন, ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে কোটা বাতিল করা হয়েছিল। কোটা বাতিলের পরিপত্রের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সন্তানরা হাইকোর্টে যান। তখন কিন্তু কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীরা পক্ষভুক্ত হয়নি। রায় হলো, তখন তাদের আন্দোলন শুরু হলো। কিন্তু আদালতে যায়নি। রায় দেয়ার পরই এ প্রশ্ন ও আন্দোলন শুরু হয়েছে। তাদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে তারা তাদের বক্তব্য দিয়েছে। আমরা তাদেরকে অনুরোধ করেছি আন্দোলন বন্ধ করতে এবং আদালতে যেতে বলেছি। তারা আদালতে গেছেন। আদালত সিদ্ধান্ত নিলেই সেটা আমরা করতে পারি। বাংলাদেশে আইনের শাসন আছে। আপনারা ইতিহাস খতিয়ান দেখতে পারেন, আদালতে যখন কোনো প্রশ্ন ওঠে, তখন আদালত যতক্ষণ পর্যন্ত তা শেষ না করে ততক্ষণ পর্যন্ত নির্বাহী বিভাগ সিদ্ধান্ত নেয় না।

কোটা সংস্কারসহ আন্দোলনকারীদের সব দাবির সঙ্গে আপনারা একমত কি না, এই প্রশ্নের উত্তরে আইনমন্ত্রী বলেন, কোটা সংস্কারে বিষয়ে আমরা নীতিগতভাবে ঐক্যমত পোষণ করছি।

প্রসঙ্গত, আজ দুপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংবাদি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, শিক্ষার্থীরা পড়ার টেবিলে ফিরতে চায়। সরকারের কাছ থেকে দৃশ্যমান পদক্ষেপ সমাধানের পথ তৈরি করতে পারে। আন্দোলনের পাশাপাশি আলোচনার পথও খোলা থাকবে।

/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply