কোটা আন্দোলন: ঢাকার বাইরে সারাদেশে যা ঘটলো

|

পাবনায় মুখোমুখি প্রশাসন ও আন্দোলনকারীরা

কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচিকে ঘিরে উত্তপ্ত বিভিন্ন জেলা। দিনভর বিক্ষোভ করেন আন্দোলনকারীরা। বিভিন্ন স্থানে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সাথে সংঘর্ষ হয় আন্দোলনবিরোধী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও টিয়ারশেলে আতঙ্ক ছড়ায় এলাকাগুলোতে। ভাঙচুর করা হয় দোকানপাট-ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এ সময় সাভার, মাদারীপুর ও নরসিংদীতে তিনজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

মাদারীপুর শহরে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা সড়ক অবরোধ করে। এ সময় আন্দোলনবিরোধী ও পুলিশের সাথে তাদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। সংঘর্ষের সময় ধাওয়া খেয়ে পাশে লেকের পানিতে পড়ে যায় কয়েকজন শিক্ষার্থী। পরে লেক থেকে সরকারি নাজিম উদ্দিন কলেজের শিক্ষার্থী দীপ্ত দে’র মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস। তার মৃত্যুর খবরে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল ছুঁড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে পুলিশ।

সাভারে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সাথে সংঘর্ষ হয় বিরোধী ও পুলিশের। দফায় দফায় চলে মারামারি। সংঘর্ষে ইয়ামিন নামে এক শিক্ষার্থী নিহত হন।

নরসিংদীর জেলখানা মোড়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে সংঘর্ষ হয় আন্দোলনকারীদের। এতে নিহত হন তাউমিদ নামে এক স্কুল শিক্ষার্থী।

সিলেটে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনের সড়কে আন্দোলনকারীদের সাথে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয় পুলিশের। এতে আহত হন অনেকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাবার বুলেট, টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোঁড়ে পুলিশ।

কোটা সংস্কারের দাবিতে ময়মনসিংহের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে জড় হন টাউন হল মোড়ে। সেখানে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন আন্দোলনকারীরা।

বগুড়ায় শহরের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেন কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা। পরে মিছিল নিয়ে সাতমাথা এলাকার দিকে যেতে চাইলে বাঁধা দেয় পুলিশ। এতেই বেধে যায় সংঘর্ষ।

রাজশাহীতে আন্দোলনকারীদের সাথে বিরোধী পক্ষ ও পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এতে আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন।ঠাকুরগাঁও শহরে বিক্ষোভ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিচার দাবি করেন তারা।

কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সাথে চট্টগ্রামেও পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। রণক্ষেত্রে পরিণত হয় শাহ আমানত সেতু এলাকা। এ সময় পুলিশ অন্তত ৩০ জনকে আটক করে।

কোটা আন্দোলনকারীরা মানিকগঞ্জের খালপাড় এলাকায় জড়ো হওয়ার চেষ্টা করলে তাদের ধাওয়া দেয় আন্দোলনের বিরোধীরা। শুরু হয় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ। এতে আহত হন অন্তত ১০ জন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মারমুখী হয় পুলিশ।

মাগুরার ভায়নার মোড় এলাকায় আন্দোলনকারীরা জড়ো হলে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় আটক করা হয় ৬ শিক্ষার্থীকে।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস থেকে মহাসড়কে অবস্থান নেয়ার চেষ্টা করলে পুলিশের সাথে সংঘর্ষ বাঁধে। এতে আহত হন অনেকে। এছাড়া নগরীর কয়েকটি পয়েন্টে আন্দোলনকারীরা অবরোধ করার চেষ্টা করলে তাদের বাধা দেয় বিরোধী পক্ষ।

পাবনায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। সকাল থেকে পুরো শহর দখল করে ব্যাপক শোডাউন দেয় সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

এছাড়াও ঢাকা-পাবনা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। পরে শিক্ষার্থীরা কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল হয়ে শহরের দিকে ঢোকার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। পরে পুলিশের শুরু হয় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। পুলিশ টিয়ারশেল ও ফাঁকা গুলি করে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে কয়েকজন পুলিশ ও শিক্ষার্থী আহত হয়।

/এনকে


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply