সংকটে পোশাক শিল্প: জুলাইয়ের বেতন-ভাতা পরিশোধ নিয়ে চিন্তিত উদ্যোক্তারা

|

আলমগীর হোসেন:

নানামুখী চাপের কারণে সংকটে দেশের পোশাক শিল্প। কোটা সংস্কার আন্দোলনের কারণে সেই সংকট আরও বেড়েছে। কারফিউ ও সাধারণ ছুটিরও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে এ শিল্পে। ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় ব্যাহত হয় রফতানি। সময় মতো পণ্য জাহাজীকরণ করতে পারেননি অনেক উদ্যোক্তা। যে কারণে বিল পাওয়া নিয়েও দুঃশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা।

এ অবস্থায় শ্রমিকদের জুলাই মাসের বেতন-ভাতা পরিশোধ নিয়ে চিন্তিত উদ্যোক্তারা। এজন্য ২ শতাংশ সুদে ব্যাংক ঋণ দেয়ার দাবি তাদের। একই সাথে ঋণের কিস্তি ৬ মাসের জন্য স্থগিত চেয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীকে চিঠি দিয়েছে পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ)। সহায়তা ছাড়া বর্তমান সংকট কাটিয়ে ওঠা সম্ভব নয় বলেও জানান শিল্প মালিকরা।

বিকেএমইএ এর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, গত এক-দুই সপ্তাহের সমস্যায় আমরা পঙ্গু হয়ে গিয়েছি। জুলাই মাসের বেতনটা অনেকের পক্ষে দেয়া সম্ভব হবে না। তাই আমরা বলেছি, জুলাই মাসের বেতন পরিশোধে ২ শতাংশ সুদে ঋণ দেয়ার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক যেন একটি নির্দেশনা দেয়। এই ঋণ যেন একবছর মেয়াদী হয়, আর তা আমরা প্রতি মাসে কিস্তিতে শোধ করবো।

বিটিএমএ সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন বলেন, গত কয়েকদিনের শিপমেন্টের ডকুমেন্ট যদি ১০ আগস্টের মধ্যে দিতে না পারি, তাহলে তো ব্যাংক আমাদের পারেসেজের বিল দেবে না। এমন না ব্যাংকে আমাদের টাকা জমা আছে, ঋণ চাচ্ছি। গার্মেন্টস মালিকদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা জমা আছে, এ রকম তথ্য কেউ দিতে পারবে না।

চলমান অস্থিরতায় কারখানা বন্ধ থাকায় ব্যাহত হয় উৎপাদন কার্যক্রম। ফলে অনেকের পক্ষেই ব্যাংক ঋণ পরিশোধ করা কঠিন। ব্যাংক ঋণের কিস্তি পরিশোধ ৬ মাসের জন্য স্থগিতা রাখার দাবি উদ্যোক্তাদের।

মোহাম্মদ হাতেম বলেন, এমনিতেই তো পরিস্থিতি খারাপ, তার ওপর এই পরিস্থিতি হইছে। সবাই দেখবে তো, এই মাসে রফতানি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে। সামনের মাসগুলোতে পরিস্থিতে খারাপের দিকে যাবে আরও, ভালোর দিকে যাবে না। বেতনই দিতে পারছি না যেখানে, সেখানে ঋণের কিস্তি পরিশোধ করবো কীভাবে? তাই আমাদের দাবি, সুদ ছাড়া আগামী ছয় মাসের জন্য ঋণটা স্থগিত করা হোক।

মোহাম্মদ আলী খোকন বলেন, আমাদের ১৫ দিনের উৎপাদন স্থগিত হয়ে গেছে। আগামী ১৫ দিনের সবকিছু যে সহজভাবে হবে তা কিন্তু নয়। আর যে অর্ডারগুলো আসার কথা, সেগুলো স্থবির হয়ে গেছে। আমরা তো আগামী দিনগুলো দেখতে পাচ্ছি, অবস্থ তো খারাপ।

আন্দোলন চলাকালে বন্ধ ছিল পণ্য খালাস। ফলে কনটেইনার জট তৈরি হয়েছে। এক মাসের জন্য পোর্ট ড্যামারেজ ফি মওকুফ চায় শিল্প মালিকরা।

মোহাম্মদ আলী খোকন বলেন, বন্দরে ড্যামারেজ ফি সবার জন্য করা হোক। পোশাক শিল্প তো বড় খাত, তাই স্বাভাবিকভাবে এই খাত প্রাধান্য পাবে। কিন্তু এর মানে এই নয় যে বন্দরে ছাড় কেবল গার্মেন্টস পাবে, অন্যরা নয়।

মোহাম্মদ হাতেম বলেন, বন্দরে যেকোনো ব্যবসায়ীর পণ্য থাকে, কেবল বিজিএমইএ সদস্যদের নয়। তাই সবার জন্য ড্যামারেজ ফি মওকুফ করা হোক।

/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply