সারাটা জীবন পাশাপাশি কাটাবে তারা, কথা ছিল এমনই। তবে পৃথিবী ছেড়ে চলে যাওয়ার পরের অধ্যায়ে পাশাপাশি চিরনিদ্রায় শায়িত জিসান-মিষ্টি দম্পতি। ৭ দিন আগে আর পরে।
রাজধানীর রায়েরবাগ এলাকায় দোকানে দোকানে ফিল্টার পানি বিক্রি করতেন জিসান। ২০ জুলাই ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া আর সংঘর্ষে যখন উত্তাল ওই এলাকা, আন্দোলন দেখতে ঘরের সামনের রাস্তায় উঁকিঝুঁকি মারতে গিয়ে গুলি লাগে জিসানের চোখে। এরপরই মারা যান তিনি।
সোমবার জীবন সঙ্গীকে দাফন করার পর পৃথিবীটা হয়তো অচেনা লেগছে মিষ্টি আক্তারের। তাইতো পরের সোমবার দুপুরে আত্মহত্যা করেছেন মিষ্টি। জিসান-মিষ্টির বিয়ে হয়েছিল বছরখানেক আগে।
স্থানীয় একজন বলেন, জিসানের শ্বশুর-শাশুড়ি নিষেধ করেছিল বাইরে যেওনা। গোলাগুলি চলছে। সে বলে কিছুই হবে না। এরপর উঁকি দিয়ে আন্দোলন দেখার চেষ্টা করছিল সে। এ সময় এসে তার চোখে গুলি লাগে।
মিষ্টিদের পাশের ঘরের এক নারী বলেন, ও জিসানকে ছাড়া কিছুই বুঝতো না। জিসান মারা যাওয়ার পর তার প্যান্ট আর শার্ট গায়ে জড়িয়ে প্রতিদিন কান্না করতো মিষ্টি। খেতো না কিছুই। খাবার কথা বললে বলতো, জিসানও তো কিছুই খায়নি, তাকে এনে দাও… এভাবেই কান্না করতো।
জিসান-মিষ্টিকে হারিয়ে শোকস্তব্ধ দুটি পরিবারই এখন দিশেহারা। আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশী কেউই মেনে নিতে পারছে না এই দম্পতির এভাবে চলে যাওয়া।
মিষ্টির বাবা বলেন, আমরা কেউই বাসায় ছিলাম না। এসে দেখি মেয়ে ঘরে ফ্যানের সাথে ওড়না জড়িয়ে ফাঁস নিয়েছে। তার মা বলেন, মেয়ে-জামাই সবই হারালাম। এই শোক কীভাবে কাটাবো আমরা?
/এনকে
Leave a reply