সারাদেশ ডেস্ক:
মুক্তিযুদ্ধে কক্সবাজার জেলার প্রথম শহীদ মোহাম্মদ শরীফের পরিবারে হামলা চালিয়েছে সন্ত্রাসীরা। গত সোমবার (৫ আগস্ট) রাতে জেলার মহেশখালী উপজেলার কালারমারছড়া ইউনিয়নে মোহাম্মদ শরীফের সন্তান ও নাতিদের বাড়িতে সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে স্বর্ণ, নগদ টাকা ও বাড়ির আসবাবপত্র লুট করে। ওই রাতে শহীদ পরিবারের সন্তান, নাতি ও তাদের আত্মীয়সহ মোট ১৯টি বাড়িতে লুটপাট চালানো হয়। সব বাড়িতেই অগ্নিসংযোগ করা হয়।
সন্ত্রাসীরা তখন কালারমারছড়া ইউনিয়ন পরিষদেও লুটপাট করে ভাঙচুর চালায়। সোমবার রাত ও মঙ্গলবার রাতে দুই দফায় ইউনিয়ন পরিষদে আগুন দেয়া হয়।
কালারমারছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তারেক বিন ওসমান শরীফ যমুনা নিউজকে বলেন, জিয়া ও বাবর বাহিনীর নেতৃত্বে ইউনিয়ন পরিষদে লুটপাট ও হামলা চালানো হয়। গ্রাম আদালতে বিচারাধীন সালিশের জমা প্রায় ২০ লাখ টাকা, ১০০ বস্তা চাল, ডিজিটাল সেন্টারের কম্পিউটারসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে যায় তারা।
প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসী জানায়, জিয়া বাহিনীর জিয়াউর রহমান, মিজানুর রহমান, কামাল, মামুন এবং বাবর বাহিনীর বাবর, সিরাজদৌল্লা ও শাহজাহান পারুলসহ ৭০-৮০ জন সন্ত্রাসী অস্ত্র নিয়ে সোমবার সন্ধ্যার এসব বাড়িঘর ও ইউনিয়ন পরিষদে হামলা চালায়। তারা এখনও অস্ত্র নিয়ে এলাকায় মহাড়া দিচ্ছেন। এতে এলাকায় মানুষের মধ্যে ভীতিকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
উল্লেখ্য, কালারমারছড়ার চেয়ারম্যান তারেক বিন ওসমান শরীফ জেলার প্রথম শহীদ মোহাম্মদ শরীফের নাতি। তাদের পরিবার আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত।
তারেকের বড় ভাই অ্যাডভোকেট নোমান শরীফ বলেন, ‘৭১-এ আমার দাদাকে মেরে ফেলা হয়। এই হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের উত্তরসূরী ও এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা ২০১২ সালে আমার পিতা ওসমান শরীফকে খুন করে। এখন আমাদের দুই ভাইকেও হত্যা করতে চায়। আমার ও আত্মীয়-স্বজনের বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে সন্ত্রাসীরা তা প্রকাশ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বলে বেড়াচ্ছে। আমার ও পরিবারের সদস্যদের জীবন নিয়ে শঙ্কিত।
লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ইতোমধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করা হয়েছে বলে জানান তিনি। এ নিয়ে মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুকান্ত চক্রবর্তী জানিয়েছেন, হামলার বিষয়টি তিনি জেনেছেন। মহেশখালীতে নিয়োজিত নৌবাহিনীর কন্টিনজেন্টকে তিনি হামলার বিষয়টি জানিয়েছেন।
জানা গেছে, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগে নেতৃত্ব দেয়া সন্ত্রাসীদের বেশিরভাগের বিরুদ্ধে ২০ এর অধিক মামলা রয়েছে। অন্যদিকে, যাদের বাড়িঘরে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে তারা হলেন— অ্যাডভোকেট নোমান শরীফ, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান হোসাইন ইব্রাহিম, সাবেক মেম্বার রশিদ আহমদ, কালারমারছড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস এম আবু তাহের, ফরিদুল আলম, পরোয়ার হাবিব মোস্তফা বকুল, নুরুল হুদা, আবদুর রহিম, নুরুল আলম, আবদুল নবী, আবুল হোসেন, সুমন, সেলিম, সোনাইয়া, জসিম, লেদু, জাহাঙ্গীর, জহির ও কালু।
/এমএন
Leave a reply