শহরজুড়ে গ্রাফিতি, রং-তুলির আঁচড়ে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন

|

মেহেদী হাসান রোমান⚫

সাম্প্রতিক সহিংসতা ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনার প্রতিবাদে সারাদেশে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করছে শিক্ষার্থীরা। এরই অংশ হিসেবে রাজধানীর দেয়ালে দেয়ালে বিভিন্ন ধরনের উদ্দীপনা ও অনুপ্রেরণামূলক স্লোগান সম্বলিত গ্রাফিতি এঁকেছে তারা। রয়েছে ইতিবাচক মনোভাবের বার্তা, প্রতীকী ছবি, স্লোগান ও বিভিন্ন উক্তি।

একটি প্রজন্মের আহ্বান, পরবর্তীতে সেই প্রজন্মের অগ্রজ-অনুজদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ। একটি বিজয়, নতুন একটি দেশের স্বপ্ন- এই হলো সাম্প্রতিক বাংলাদেশের নতুন একটি সম্ভাবনার গল্প। সেই গল্পে ছিলো ছাত্র-জনতার অংশগ্রহণ। নতুন একটি দেশের রূপরেখা দেয়ার পাশাপাশি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সুখী, সুন্দর ও অসাম্প্রদায়িক একটি রাষ্ট্রের পুনর্জন্ম ঘটানো। শতাধিক নিরীহ মানুষের প্রাণ ঝরেছে এই সময়ে। শোককে শক্তিতে পরিণত করে সেই কাঙ্ক্ষিত বিজয় আসার পর নতুন উদ্যমে দেশ গঠনে শপথ নিয়েছে তরুণ প্রজন্ম। ঢাকার রাস্তায় ও দেয়ালে গ্রাফিতি, চিত্রকর্মের পাশাপাশি রঙ্গীন স্বপ্ন বুনে চলেছেন তারা। এই জাদুর শহর এখন সৃজনশীল ও নতুনত্বের আগমনী বার্তা দিয়ে পূর্ণ। সেখানে উঠে এসেছে যে বাংলাদেশ তারা দেখতে চায়, গড়তে চায় নিজেদের মতো করে।

আন্দোলন শুরু হয় জুলাই মাসে। তবে লড়াইয়ের এই মাসেই বিজয় অর্জন করতে চাওয়ার যে প্রয়াস, সেই তাগিদেই জুলাই শেষ হবার পরেও সেই রেশকে সাথে নিয়ে এগিয়েছে ছাত্র-জনতা। তাই ৫ আগস্ট তাদের কাছে যেন ৩৬ জুলাই।
অদম্য ইচ্ছেশক্তি যখন অফুরন্ত মনোবলের যোগান দেয়।
পরাধীনতার জিঞ্জির ভেঙে নতুন উদ্যমের যাত্রা।
অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের সম্ভাবনা যখন দেয়ালে উঁকি দেয়। মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর একটি উক্তিও দেখা যাচ্ছে দেয়ালে।
এই প্রজন্ম জিততে জানে। সেটিই প্রতিফলিত হচ্ছে লাল-সবুজের কালিতে।
মুগ্ধ কি শুধু বেঁচে আছে পানির বোতলেই? না, মুগ্ধের মুগ্ধতা ছড়িয়েছে দেড় লাখ বর্গ কিলোমিটারে।
জেনারেশন-জেড। ওরা পারে, ওরা পেরেছে। এটিই বোঝানো হয়েছে গ্রাফিতিতে।
আবু সাঈদ ছবিতে নেই। কিন্তু তার সাহস, তার দৃঢ়চেতা বীরত্ব কালান্তর ও যুগান্তর হয়ে বেঁচে থাকবে লড়াইয়ের গল্পে।
বিকল্প কে? আমি, তুমি, তোমরা। এই মনোবলেই যেন নতুন বাংলাদেশ গড়ার দৃঢ় প্রত্যয় ও দায়িত্ব নিয়েছে বর্তমান প্রজন্ম।
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, সোহার্দ্য, ভ্রাতৃত্ব ও মেলবন্ধনের গল্প ফুটে উঠেছে দেয়ালে। এই বাংলাদেশ যেন সবারই কাম্য।
বল বীর, বল উন্নত মম শির। বিদ্রোহী কবির মতোই শক্ত মেরুদন্ডে সোনার বাংলা গড়তে চায় ওরা।
জনগণের সরকার-গণতন্ত্রের সৌন্দর্য ও সবচেয়ে দামি চাওয়া শোভা পাচ্ছে দেয়ালে।
শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বশান্তির বার্তা ও অন্যায়কে বিদায় করে এক নতুন পৃথিবীর অপেক্ষা।

শুধু ঢাকা নয়, সারাদেশেই শোভা পাচ্ছে এই ধরনের চিত্রকর্ম ও গ্রাফিতি। নতুন বাংলাদেশ যেন নিজেদের মতো গড়ে তুলতে চায় এই প্রজন্ম। সেই স্বপ্নের বারুদ হয়ে কিছুটা হলেও শক্তি যোগাবে তাদের এই কর্মপ্রয়াস, এই বিশ্বাস তাদের।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply