কলকাতায় মেডিকেল শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ-হত্যার ঘটনায় প্রতিবাদের ঝড়

|

সুকান্ত চট্টোপাধ্যায়, কলকাতা প্রতিনিধি:

কলকাতার একটি সরকারি হাসপাতালের সেমিনার কক্ষে এক মেডিকেল শিক্ষার্থীর নিথর দেহ পাওয়া গেছে। শুক্রবার (৯ আগস্ট) আরজিকর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। নিহত মৌমিতা দেবনাথ (৩০) পোস্ট গ্র্যাজুয়েশনের ফাইনাল বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। এ ঘটনায় সঞ্জয় রায় নামে একজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। অভিযুক্ত সঞ্জয় রায় পেশায় পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পুলিশের একজন সিভিক ভলেন্টিয়ার। সেদিন ওই হাসপাতালে অনকল ডিউটিতে ছিলেন মৌমিতা।

হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, নিহত তরুণী যে সেমিনার হলে ছিলেন, সেখানে বৃহস্পতিবার রাত ৩টার কিছু সময় পরে প্রবেশ করে সঞ্জয় রায়। অন্তত ৪৫ মিনিট পর তাকে সেখান থেকে বের হয়ে আসতে দেখা যায়। শুধু তাই নয়, সেখানে প্রবেশের সময়ে তার কানে ছিলো একটি হেডফোন। পরে পুলিশ ওই হেডফোনের সূত্র ধরেই তাকে গ্রেফতার করেছে। মোটামুটিভাবে স্পষ্ট, রাতের ওই সময়ে যে কেউ গভীর ঘুমের মধ্যেই থাকবে। আর সেই সুযোগেই এই জঘন্য কাজ করেছে বলে প্রাথমিক তদন্তে বলা হয়েছে। তদন্তে নেমে পুলিশ আরও জানতে পারে ঘটনার দিন মদ্যপ অবস্থায় ছিল সঞ্জয়। গভীর রাতে ঘুম থেকে টেনে তুলে ওই তরুণীর ওপর ভয়ানক অত্যাচার করে সে।

ঘটনার দিন সেমিনার হলে বসে অন্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অলিম্পিকে ভারতের হয়ে রৌপ্যজয়ী নীরজ চোপড়ার ম্যাচ দেখছিলেন ওই তরুণী। রাতের খাবার সেরে সবাই চলে গেলে সেখানেই ঘুমিয়ে পড়েন মৌমিতা। সেমিনার হলে প্রবেশ ও বের হওয়ার দুটো রাস্তা রয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজে সামনের দিকের রাস্তার করিডরেই দেখা যায় সঞ্জয়কে। তরুণীর শরীরের একাধিক জায়গা যেমন বুক, পেট, যৌনাঙ্গে আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। পাওয়া গেছে চাপা রক্তের দাগও।

এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে ইতিমধ্যেই অভিযুক্তের কঠোর শাস্তি চেয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়সহ রাজ্যের একাধিক নেতা। এমনকি কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে অর্ডিন্যান্স এনে আইন সংশোধন করার দাবিও করা হয়েছে, যাতে এসব মামলায় বিচার আরও দ্রুত হয়।

এদিকে ন্যাশনাল মেডিক্যাল অর্গানাইজেশন, রেসিডেন্ট ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশসহ একাধিক সংগঠন এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চেয়েছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি বরাবর চিঠিও পাঠানো হয়েছে।

/এমএইচআর


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply