বিপ্লবী সরকারের ব্যর্থ হওয়ার সুযোগ নাই: এবি পার্টি

|

গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি সমর্থন জানিয়ে ১০ দফা আহ্বান, দাবি ও সতর্কতামূলক অঙ্গীকার নিয়ে সিঙ্গেল লাইন পদযাত্রা করেছে এবি পার্টি। এর আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে দলটি।

আজ সোমবার (১২ আগস্ট) পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক প্রফেসর ডা. মেজর (অব.) আব্দুল ওহাব মিনারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে ১০ দফা আহ্বান বা দাবি তুলে বক্তব্য রাখেন এবি পার্টির সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু।

এবি পার্টির পক্ষ থেকে ১০ দফা দাবি বা আহ্বান তুলে ধরে মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সামনে বিরাট চ্যালেঞ্জ।ছাত্র-জনতার রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে যে সরকার গঠিত হয়েছে, তাকে জাতির প্রত্যাশা পূরণ করতে হবে। কোনো অবস্থায়ই জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে ব্যর্থ হতে দেয়া যাবেনা। বিপ্লবী সরকারের ব্যর্থ হওয়ার কোনো সুযোগ নাই।

নিম্নোক্ত ১০ দফা দাবি/ আহ্বান জাতির সামনে তুলে ধরে এবি পার্টি। সেগুলো হলো—

১ ) দেশ গঠনের মহা চ্যালেঞ্জ এখন ছাত্র-জনতার কাঁধে। এই চ্যালেঞ্জে সফল হতেই হবে। ধৈর্য, সহনশীলতা, ত্যাগ, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও মানবাধিকার সুরক্ষার অঙ্গীকার নিয়ে আসুন একযোগে কাজ করি।

২ ) ছাত্র-জনতার অসীম আত্মত্যাগ ও রক্তদানে যে বিজয়, তা ধরে রাখতে হবে। না পারলে শহীদেরা আমাদের ক্ষমা করবে না। ব্যর্থতার জন্য অদূর ভবিষ্যতে আমাদের পরিণতিও হতে পারে আওয়ামী লীগের মতো।

৩ ) ভারতীয় বিশেষ কিছু গণমাধ্যম ও রাজনৈতিকপক্ষ বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে যে অপপ্রচার চালাচ্ছে, তা বন্ধ করুন। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে মিথ্যা প্রপাগান্ডা ও সাম্প্রদায়িক উসকানি সৃষ্টির অপচেষ্টা বন্ধুত্বের লক্ষণ নয়।

৪ ) মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টানসহ সকল ধর্মের আমরা সবাই বাংলাদেশি-বাঙ্গালি। কেউ সংখ্যাগুরু বা সংখ্যালঘু নই। এখানে কোনো বৈষম্য বা পৃথক সত্তাগত বিভাজনের সুযোগ নেই। জীবন দিয়ে হলেও আমাদের সবাইকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বন্ধন রক্ষা করতে হবে।

৫ ) শেখ হাসিনা ও তার দোসরেরা অবৈধ ক্ষমতার গদি টিকিয়ে রাখতে গিয়ে যে গণহত্যা, ধ্বংসযজ্ঞ ও নৃশংসতা চালিয়েছে; অবিলম্বে তার সুষ্ঠু বিচার প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিটি ব্যক্তি ও পরিবারের ক্ষতিপূরণের দায়িত্ব রাষ্ট্রকে নিতে হবে।

৬) গণঅভ্যুত্থানের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় যত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তার পুরো দায় শেখ হাসিনা ও তার আগ্রাসী খুনী-দোসরদের। কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর যেকোনো প্রতিহিংসামূলক কর্মকাণ্ডের দায় বর্তমান সরকার ও আন্দোলনকারী সকল পক্ষের। অবিলম্বে সরকার ও ছাত্র-জনতার সম্মিলিত সমন্বিত পদক্ষেপে সর্বাত্মক জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

৭) পদস্থ যেকোনো কাউকে অপসারণ বা তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের মূলনীতি হতে হবে তার দ্বারা কৃত অপরাধ ও অন্যায্য, অন্যায়মূলক ভূমিকা। পক্ষান্তরে নতুন যেকোনো নিয়োগ বা পদায়নের ভিত্তি হতে হবে মেধা, দক্ষতা, সততা, পূর্ববর্তী অবৈধ সরকার দ্বারা বঞ্চিত ও অবহেলিত হওয়া এবং বিগত গণতান্ত্রিক সংগ্রামে তার অবদান ও ভূমিকা।

৮ ) অন্তবর্তীকালীন সরকারের সামনে বহুমাত্রিক চ্যালেঞ্জ। ভঙ্গুর ও বিধ্বস্ত রাষ্ট্রব্যবস্থা সংস্কারের অঙ্গীকার এবং যতদ্রুত সম্ভব সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। যৌক্তিক কারণ ছাড়া অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ প্রলম্বিত হলে জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়। আশা করি, সেদিকে সবাই সচেতন থাকবেন।

৯ ) গণতন্ত্র ও মানবাধিকার সুরক্ষায় নিয়োজিত দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সকল পক্ষ ও উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতি আহ্বান বাংলাদেশের ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানকে সফল করতে সর্বাত্মক সহযোগিতা দিন।

১০ ) দ্রব্যমূল্য কমিয়ে জনগণের ক্রয়ক্ষমতা সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনা। সকল পর্যায়ের কলকারখানা সচল রাখা, ব্যবসা বাণিজ্যে গতি সঞ্চালনসহ দেশের অর্থনীতিতে নতুন করে সংস্কার ও উদ্যম ফিরিয়ে আনতে সকলের সমন্বিত প্রয়াস জোরদার করতে হবে।

/এএম


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply