শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলন। যা বর্তমানে ‘জুলাই বিপ্লব’ নামে পরিচিত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু হওয়া এই আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে গোটা দেশে। যেখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিলো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের।
১ জুলাই থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা সংস্কার চেয়ে আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের তীব্রতা বাড়লে তা দমনে কঠোর হয় সরকার। চড়াও হয় পুলিশ। এছাড়াও নামানো হয় বিজিবি। এক পর্যায়ে আবাসিক হল বন্ধ ঘোষণা করা হয়। দমন পীড়নের মাঝেও আন্দোলন চলতে থাকে। ঠিক সেই সময়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও নেমে আসে সড়কে। বজ্রকণ্ঠে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সাথে একাত্মতা জানায়। দিনরাত সড়কে অবস্থান নিয়ে আন্দোলনকে গতিশীল রাখে।
আন্দোলন সংগ্রামে বেসরকারি বিশ্বিবিদ্যায়ের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ কম এবার এমন ধারণা পাল্টে দিয়েছেন তারা। কিন্তু কীভাবে তারা যুক্ত হলেন এই আন্দোলনে শোনা যাক তাদের মুখেই।
একজন শিক্ষার্থী এ প্রসঙ্গে বলেন, ১৫ জুলাই রাত্রে, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে একটা ঝামেলা হলো, যেটা আমাদের জন্য একটা দম বন্ধকর অবস্থা। সেই অবস্থা শুনা ও দেখার পর আমরা আসলে আর বসে থাকতে পারলাম না।
আরেকজন শিক্ষার্থী বলেন, ১৭ জুলাই, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সবগুলো হল যখন খালি করে দেয়া হলো, তারপর ১৮ জুলাই, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এভাবে আন্দোলনে নেমে পড়বে, তা স্বৈরাচারী সরকারের কাছে সিলেবাসের বাইরে ছিল।
পদে পদে বাধা, গ্রেফতার, হামলার আতঙ্ক। তারপরও পিছু হটেনি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। পুলিশের গুলির মাঝে বুক পেতে দাঁড়িয়েছে তারা। তারপরও এক চুলও নড়েনি তাদের অবস্থান থেকে। কারফিউ উপেক্ষা করে চালিয়ে গেছে আন্দোলন। পরিবারের পাশাপাশি পেয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের সমর্থন।
কোটা আন্দোলনের একপর্যায়ে বন্ধ করে দেয়া হয় দেশের ইন্টারনেট সুবিধা। তখন কিভাবে আন্দোলন সমন্বয় করা হয়েছে সেই অভিজ্ঞতার কথাও জানান তারা।
একজন শিক্ষার্থী বলেন, যোগাযোগের জন্য ব্লুটুথ সার্ভার তৈরি করি। যেটির মাধ্যমে, ইন্টারনেট ছাড়াই আমরা একে ওপরের সাথে যোগাযোগ করতে সক্ষম হই।
গত ৫ আগস্ট, শেখ হাসিনার পদত্যাগের মধ্য দিয়ে চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয় ছাত্র জনতার। এই সময় বহু বন্ধু সহপাঠী গুলিবিদ্ধ হয়, চিরতরে হারিয়ে যায় অনেকে। সব শোককে শক্তিতে পরিণত করে সবার সাথে হাতে হাত মিলিয়ে এখন দেশ গড়ার কাজে মনোযোগী হতে চান বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এসব শিক্ষার্থীরা।
/এআই
Leave a reply