নওগাঁয় ব্যাংক কর্মকর্তার স্ত্রী-সন্তান হত্যাকাণ্ডে আসামির ফাঁসির আদেশ

|

নওগাঁ শহরের উকীলপাড়া আলটিমেট ড্রিম ভবনে নৃশংসভাবে ব্যাংক কর্মকর্তার স্ত্রী-সন্তান হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় অভিযুক্ত আসামীকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত।

মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) দুপুরে নওগাঁর অতিরিক্ত দায়রা জজ ২য় আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মোখলেছুর রহমান এই আদেশ দেন। রায় ঘোষণার সময় আসামী সুমন সরকার ওরফে টিটুকে আদালতে হাজির করা হয়েছিলো। দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত টিটু নারায়নগঞ্জ জেলার ৬৫ বি কে রোড, ১ নম্বর তুলারাম মোড় এলাকার বাসিন্দা।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, প্যানেল কোড-এর ৩০২ ধারা সন্দেহাতীত ভাবে প্রমানিত হওয়ায় বিজ্ঞ বিচারক এই রায় প্রদান করেন। মামলার বিবরনে জানা গেছে, ঘটনার দিন ছিলো ২০১২ সালের ১৭ ডিসেম্বর। সাউথইষ্ট ব্যাংকের নওগাঁ শাখার ব্যবস্থাপক ছিলেন জয়ন্ত কুমার সরাকার। তিনি স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে উকীল পাড়া মহল্লায় আলটিমেট ড্রিম আবাসিক ভবনে ৬ষ্ঠ তলায় ৫ এফ নম্বর ফ্লাটে ভাড়ায় থাকতেন।

ঘটনার দিন বিকেল অনুমান ৫টা থেকে সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে ওই বাসায় জয়ন্তের স্ত্রী নিতা সরকার ওরফে পিংকি ও সন্তান জয়তু সরকারকে হাতুরি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথায় আঘাত করে এবং কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায় সুমন সরকার ওরফে টিটু। ঘটনার সময় ব্যাংক কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার সরকার অফিসে ছিলেন। প্রতিবেশী এক ব্যাক্তি পারিবারিক অনুষ্ঠানের দাওয়াত করতে গিয়ে বাসার ভেতর থেকে কোনো সারাশব্দ না পেয়ে বিষয়টি জয়ন্ত কুমার সরকারকে জানান। ব্যাংক ম্যানেজার দ্রুত বাসায় এসে সারা না পেয়ে দরজা ভেঙে ভেতরে ব্যাংক ম্যানেজার দ্রুত বাসায় এসে সারা না পেয়ে দরজা ভেঙ্গে ভিতরে গিয়ে ঘরের মেঝেতে স্ত্রী সন্তানের মরদেহ পরে থাকতে দেখেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে।

পরদিন ১৮ ডিসেম্বর বিকেল সাড়ে ৪ টায় জয়ন্ত কুমার সরকার নওগাঁ সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সমীর সূত্রধর যাবতীয় কাগজপত্র ও পারিপার্শ্বিকতা তদন্ত করে বাদী জয়ন্ত কুমার সরকারের নিকট আত্মীয় সুমন সরকার ওরফে টিটুকে জিজ্ঞেসাবাদের জন্য আটক করেন।

ঘটনার পর আসামীকে সনাক্ত করে আটকের জন্য অভিযানে নামে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সুমীর সূত্রধর। টানা অভিযানের ২৮ তম দিনে ভারতে পালানোর কুমিল্লার ব্রাম্মনপাড়া উপজেলার হরিমঙ্গল গ্রামে থেকে সুমনকে আটক করা হয়। আটকের পর জিজ্ঞেসাবাদের আসামি সুমন প্রথমে পুলিশের কাছে এবং পরবর্তীতে আদালতে ১৬৪ ধারা জবানবন্দীতে সরাসরি হত্যাকান্ডে সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। তদন্ত ও স্বাক্ষ্য প্রমানে আসামী সুমন সরকার টিটুর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রাথমিক ভাবে প্রমানিত হলে ২০১৩ সালে ৩০২ ধারায় নওগাঁ জেলার সদর মডেল থানার অভিযোগপত্র নম্বর ৩০৪ মোতাবেক বিচারের জন্য বিজ্ঞ আদালতে উত্থাপন করা হয়।

দীর্ঘ শুনানী অন্তে অতিরিক্ত দায়রা জজ ২য় আদালতের বিজ্ঞ বিচারক আসামীর বিরুদ্ধে মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার নির্দেশ প্রদান করেন। রায়ের প্রতিক্রিয়ায় আসামী পক্ষের আইনজীবী জানান শুভ্র সাহা বলেন, উচ্চ আদালতে আপীল করবেন তারা। রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর সামসুর রহমান।

/আরআইএম


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply