ববি’র প্রশ্নপত্রে শেখ হাসিনার আলোচিত উক্তি

|

বরিশাল ব্যুরো:

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) চলমান মিডটার্ম পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুটি আলোচিত উক্তি উঠে এসেছে। এর মধ্যে একটি উক্তির কারণে ছাত্র-জনতার মধ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। রূপ নেয় জুলাইয়ের গণআন্দোলন ও পতন হয় শেখ হাসিনা সরকারের। এছাড়া সাবেক প্রধানমন্ত্রীর করা অপর উক্তির ফলে, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, বাংলা বিভাগের ৩য় বর্ষের (২০২০-২১ শিক্ষা বর্ষ) মিডটার্ম পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিলো গত ৭ জুলাই। তবে ছাত্র-জনতার গণ আন্দোলনের কারণে সেই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ ফিরে আসায় পূর্বের পরীক্ষাগুলো নিতে শুরু করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বুধবার (২৮ আগস্ট)ছিলো বাংলা কোর্সের ভাষা বিজ্ঞান পরীক্ষা। ১০ নম্বরের পরীক্ষা দুপুর ১২টায় শুরু হয়ে শেষ হয়েছে ১২টা ৫০ মিনিটে। দুপুরের পর থেকে আলোচনার জন্ম দিয়েছে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র। প্রশ্নপত্রে উল্লেখিত দুটি প্রশ্নই করা হয়েছে, শেখ হাসিনার সমালোচিত দুটি উক্তি দিয়ে। এরই মধ্যে প্রশ্নপত্রটি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

দুটি প্রশ্নের প্রথমটি হলো-স্বরতরঙ্গ বলতে কি বোঝ? ‘মুক্তিযোদ্ধার সন্তান নাতি পুতিরা কেউ মেধাবী না। যত রাজাকারের বাচ্চা নাতি পুতিরা মেধাবী?’ উত্ত বাক্যটির বাক্যিক ব্যবহারের ক্ষেত্রে স্বরতরঙ্গের সাধারণ, উচু ও নিচু তিনটি অবস্থান বর্ণনা করে বুঝিয়ে দাও।

অপর প্রশ্নটি ছিলো- IPA-তে রূপান্তর কর: “আমাদের শিক্ষক ভাইরা যে প্রত্যয় স্কিম নিয়ে আন্দোলন করছে আমরা সাধারণ মানুষ খুব কষ্ট পেয়েছি। এই কারণে আপনি সতেরো কোটি মানুষের জন্য একটা স্কিম দিলেন। সরকারি কর্মচারীরা কোথায় তাদের বেড়ে গেলো কমে গেলো তাকে তারা দুঃখ পাচ্ছে কিন্তু এই ষোল কোটি মানুষ যে পেলো এটাতে তাদের সুখ নাই। তারপরেও আমি বলবো প্রশাসন এবং শিক্ষকদের মুখোমুখি করার একটা চেষ্টা হচ্ছে।

তবে আন্দোলন যারা চালাবি চালাতে থাক, চালাতে চালাতে যখন টায়ার্ড হবে তখন বসবো, তার আগে বসার দরকারটা কী!”

এ ব্যাপারে বাংলা বিভাগের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী শরিফুল খান বলেন, প্রশ্নপত্রটি তাদের কোর্সের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ন। সঠিক নিয়মেই প্রশ্নপত্র করা হয়েছে। এখানে সমসাময়িক বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। অতিরঞ্জিত কিছু নেই।

প্রশ্নপত্রটি তৈরি করেছেন বাংলা বিভাগের শিক্ষক সঞ্জয় কুমার সরকার। তিনি প্রশ্নপত্র প্রসঙ্গে বলেন, স্বরতরঙ্গ বলতে আমরা ‍বুঝি কোন শব্দের উপর বক্তা কতটুকু জোর দিচ্ছেন। ওই শব্দের উপর বাক্যের অর্থ নির্ভর করে। যেমন ‘রাজাকার’ শব্দের কারনে ছাত্রজনতা উপর নেতিবাচক প্রভাব পরে। দেশের বড় একটি জনগোষ্ঠীকে প্রতিপক্ষ করা হয়।

প্রসঙ্গত, আইপিএ হচ্ছে ইন্টারন্যাশনাল ফোনেটিক অ্যালফাবেট। সারা পৃথিবীর ভাষার শব্দগুলোর উচ্চরণ বোঝার জন্য আইপিএ ব্যবহার করা হয়। এসব পরীক্ষার ক্ষেত্রে যে কোন বইয়ের ৫ বা ১০ লাইন ‍তুলে দিলে শিক্ষার্থীরা তা আইপিএতে রূপান্তর করবে।

/এমএইচআর


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply