অফিস শেষে ধরতে হবে না বসের ফোন, আইন পাস অস্ট্রেলিয়ায়

|

নির্ধারিত কর্মঘণ্টার পরে বস ই–মেইল করেন বা কাজ শেষ হওয়ার পরেও খুদে বার্তা দেন। অনেক কর্মী বিষয়টি স্বাভাবিকভাবে নেন না, বিরক্ত হন। তবে অস্ট্রেলিয়ায় কর্মীরা এখন থেকে এমন সব ব্যাপার থেকে মুক্তি পেতে যাচ্ছেন। এখন কর্মীদের নির্ধারিত কর্মঘণ্টার বাইরে ফোন ধরতে যেন না হয়, তা নিশ্চিত করতে আইন পাস করেছে দেশটি। 

সোমবার, অফিসগামীদের সুবিধার্থে এ সংক্রান্ত নতুন এক আইন চালু করে অস্ট্রেলিয়া। যার নাম দেয়া হয়েছে, ‘রাইট টু ডিসকানেক্ট’। নতুন এ আইনের আওতায়, অফিস টাইমের বাইরে কোনো কর্মী অফিসের কাজ এড়িয়ে যেতে পারবেন। চাইলেই উপেক্ষা করতে পারবেন অফিস থেকে আসা কোনো মেসেজ, ফোন-কল কিংবা ই-মেইল। এরজন্য তাকে কোনো ধরনের জবাবদিহিতা কিংবা শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে না।

রাইট টু ডিসকানেক্ট আইনে রাখা হয়েছে নিয়োগকর্তাকে জরিমানার বিধানও। যার আওতায়, বিনা প্রয়োজনে কর্মঘণ্টার পর কর্মীর সাথে যোগাযোগ করলে জরিমানা হতে পারে ৬৩ হাজার মার্কিন ডলার পর্যন্ত।

নতুন এ আইন কার্যকরের পর উচ্ছ্বসিত অস্ট্রেলিয়ার কর্মজীবীরা। তাদের মতে, এ ধরনের নিয়মে প্রতিষ্ঠানগুলোতে বাড়বে পেশাদারিত্ব-কমবে মানসিক চাপ। অস্ট্রেলিয়ার এক কর্মজীবী বলেন, অসাধারণ একটি আইডিয়া। আশা করি খুব দ্রুতই যেন তা সবাই মানতে শুরু করে। সব সেক্টরে এই আইন কার্যকর হওয়াটা একটু কঠিন। কেননা, যারা কাজকে আপন মনে করে তাদের ২৪ ঘণ্টাই সংযুক্ত থাকতে হয়।

অস্ট্রেলিয়ার আরও এক কর্মজীবী বলেন, অফিসের খাতিরে ফোন, ইমেইলের সাথে যুক্ত থেকে দিনের অনেকটা সময় আমরা ব্যয় করি। যা বন্ধ করা সত্যিই কঠিন। তাই এসব ক্ষেত্রে এ জাতীয় আইন থাকাটা জরুরি। বিচ্ছিন্ন থাকাটা কতটা জরুরি তা বুঝাতে। বিশেষ করে আমার মতো কর্মজীবীর জন্য। যার অনেক ক্লায়েন্ট আছে। তাদের সাথে যোগাযোগ রাখতে কর্মঘণ্টার বাইরেও কাজ করতে হয়।

অফিস টাইমের বাইরে জরুরি প্রয়োজনে কোনো প্রতিষ্ঠান অবশ্য কর্মীদের সাথে যোগাযোগ করতে পারবে। তবে সেটি যুক্তিসংগত কিনা তা নির্ধারণ করবে দেশটির ফেয়ার ওয়ার্ক কমিশন। আইন অমান্যে জরিমানাও করতে পারবে এই কমিশন।

এক জরিপে দেখা গেছে, বিনা পারিশ্রমিকে বছরে গড়ে ২৮১ ঘণ্টা কাজ করে অস্ট্রেলিয়ানরা। অস্ট্রেলিয়া ছাড়াও এ জাতীয় আইন রয়েছে ইউরোপ, লাতিন আমেরিকার ২০টিরও বেশি দেশে।

/আরআইএম


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply