‘বন্ধু, চল আজকে বাইরে খাই’
‘কীজন্য?’
‘আরে, আজকে বাইরে খাওয়ার দিন’
‘তাইলে চল চড়ুইভাতি করি, অনেকদিন পর বন্ধু-পরিবার সবার একটা মিলনমেলা হয়ে যাবে’
হ্যাঁ, সেটাই ভালো হয়। সবাই রাজি?
‘রাজি মানে! বহুত কাজ বাকি’
‘চল শুরু করি….’
প্রতিদিনকার আড্ডার প্রায় সবাই একসঙ্গেই ছিল। সবার সঙ্গে বাইরে খাওয়া নিয়ে কথা বলা এবং সবাইকে রাজি করাতে বেশ ভালোই বেগ পেতে হলো আবদুল্লাহকে। যদিও ওপরের কথোপকথনে তার সম্পূর্ণ আভাস পাওয়া যায়নি। তবে, বন্ধুমহলে যে কোনো পরিকল্পনা বাস্তবায়নে দায়িত্বশীল বন্ধুটিকে যে কী পরিমাণ বেগ পেতে হয় সেটা কারোরই অজানা নয়।
পাঠক, ঠিকই ধরেছেন। ডেজ অব দ্য ইয়ার এবং ন্যাশনাল ডে ক্যালেন্ডার অনুযায়ী আজ বাইরে খাওয়ার দিন। যেটাকে আমরা অনেকে আদর করে ‘চড়ুইভাতি’ বলে ডাকি। অনেকে পিকনিক, পার্টি বা বনভোজন বলতেও স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। অর্থের কিছুটা তফাৎ’র পাশাপাশি নাম যেটাই হোক, ব্যাপারটা কিন্তু একই—বাইরে খাওয়া।
‘চড়ুইভাতি’তে কিছুটা শৈশবের অনুভূতি পাওয়া যায়। সাধারণত পাড়া–মহল্লার ছেলেপুলেরা মিলে বাড়ির আশপাশেই চড়ুইভাতির আয়োজন করে থাকে। কেউ বাড়ি থেকে নিয়ে আসে চাল, কেউ ডাল। কেউ নিয়ে আসে ডিম, মুরগি বা অন্য কোনো উপকরণ।
অঞ্চলভেদে টুলাপানি, ভুলকাভাতসহ নানা নামে পরিচিত এই উৎসব কালের বিবর্তনে নাম পাল্টালেও একেবারে হারিয়ে যায়নি। গ্রামাঞ্চলে এ ধরনের উৎসবের দেখা মেলে প্রায়ই। হাঁপিয়ে ওঠা শহুরে মানুষজনও সময়-সুযোগ পেলেই লুফে নেন এমন সুযোগ। বাসার ছাদে অথবা সদলবলে গাছঘেঁষা কোনো পার্কে করেন খাবারের আয়োজন অথবা রান্নাবান্না।
তবে, চাইলে রেস্তোরাঁতে গিয়েও উদযাপন করা যেতে পারে দিনটি। সেক্ষেত্রে নিয়ে যেতে পারেন আপনার কাছের মানুষজনকে। পরিবারের সবাইকে নিয়ে বাইরে খাওয়ার অনুভূতি বেশ আলাদা। হোক সেটা নিজেদের রান্না অথবা রেস্তোরাঁয় গিয়ে। তাই, পরিবারের সদস্য কিংবা বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে আনন্দ ও প্রীতিপূর্ণ এই দিনটি দুর্দান্ত ও প্রাণবন্ত কাটুক এই কামনা।
গ্রন্থনা: মাহমুদুল হাসান ইমন
Leave a reply