স্টাফ করেসপনডেন্ট, খাগড়াছড়ি
খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলার লোগাং বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আশাদন চাকমার থাপ্পড়ে গুরুতর আহত হয়ে পানছড়ি হাসপাতালে ভর্তি হন এক শিক্ষার্থী। তার নাম সুজনা আক্তার (১৫)। পড়া বলতে দেরি করায় তার কান ও গালে সজোরে আঘাত করার ফলে ছাত্রীর নাক ফেটে রক্ত বের হয়।
রবিবার (১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে টিফিন পরবর্তী প্রথম ঘন্টায় লোগাং বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। আহত ছাত্রী সুজনা আক্তার লোগাং বাজার এলাকার মো. হোসেনের মেয়ে। সে ওই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনির ছাত্রী।
শিক্ষার্থীরা জানায়, আশাদন চাকমা স্যার বাংলা দ্বিতীয় পত্র নিতে ক্লাসে আসেন। পাঠদানের এক পর্যায়ে সুজনা আক্তারকে পড়া ধরলে সে তাৎক্ষণিক উত্তর দিতে পারেনি। এসময় স্যার ক্ষিপ্ত হয়ে তার নাকে-গালে সজোরে থাপ্পড় মারেন। পরে সুজনার নাক দিয়ে রক্ত বের হয়। এসময় ফ্লোরে অনেক রক্ত পড়ে। আমরা পানি দিয়ে নাকের রক্ত পরিষ্কার করি। পরে স্যার পানি দিয়ে দ্রুত ফ্লোরের রক্ত ধুয়ে ফেলে। স্যার এর আগেও অনেকের গায়ে হাত তুলেছেন।
সুজনা আক্তারের মা কুলছুমা বিবি বলেন, আশাদন চাকমা নামে একজন শিক্ষক আমার মেয়ের নাকে-গালে অনেকগুলো থাপ্পড় দিয়েছে। যার কারণে তার নাক দিয়ে রক্ত বের হয়েছে। প্রধান শিক্ষক আমাকে ডেকে নিয়ে বলছে ঔষধ-পথ্য কিনে দিবে, বিষয়টি সমাধান করে দিবে। আমি মানি নাই। আমার মেয়েকে মেরে কেন রক্তাক্ত করলো আমি এই শিক্ষকের বিচার চাই।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিহির চাকমা বলেন, ঘটনাটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটে গেছে। থাপ্পড়ে আহত ছাত্রী আমার কাছে বিচার নিয়ে আসলে আমি তার অভিভাবকের সামনে শিক্ষককে ডাকিয়ে সতর্ক করি। ছাত্রীর চিকিৎসায় যত খরচ হবে তা শিক্ষক বহন করবে। এ বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি করার কি দরকার?
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক আশাদন চাকমা বলেন, ক্লাসে আমি বাংলা দ্বিতীয় পত্রের কারক পড়াচ্ছিলাম। তখন ছাত্রীটি ক্লাসে মনোযোগী ছিলনা। এতে আমি একটু ক্ষিপ্ত ছিলাম। পরে তাকে একটা পড়া ধরি, সে না পারায় আমি তাকে একটা থাপ্পড় মারি। পরে দেখি তার নাক দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে। এমনটা হবে আমি বুঝতে পারিনি।
আহত শিক্ষার্থী সুজনা আক্তার বলেন, স্যার আমাকে একটা পড়া ধরেন। পড়াটা আমি পারি কিন্তু মুখ দিয়ে বের হচ্ছিলো না। তখন আমার নাকে-মুখে এবং মাথায় অনেকগুলো থাপ্পড় মারেন। একপর্যায়ে আমার নাক ফেটে রক্ত বের হয়। আমি নাকের ব্যথায় কথা বলতে পারছিনা।
এ বিষয়ে পানছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মৌমিতা দাশ বলেন, অভিযোগটি গুরুতর। বিষয়টি আমরা দেখছি।
/আরআইএম
Leave a reply